সুস্মিতা মণ্ডল, কাকদ্বীপঃ টানা বৃষ্টির জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের শিবরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনগরে বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে প্রৌঢ়া বিজলী সাঁতরার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে মাটির বাড়িটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সেইসময় বাড়িতে একাই ছিলেন প্রৌঢ়া। প্রতিবেশীরা বাড়ি ভাঙার আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন। জখম প্রৌঢ়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্তের জোড়া ফলায় রবিবার রাতভর দফায় দফায় ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাস বইতে থাকে।
আরও পড়ুন : দুর্যোগকে হারিয়ে প্রচারে শোভনদেব
সুন্দরবন উপকূলে বৃষ্টি ও ঝড়ের দাপট ছিল বেশী। উৎসবের মধ্যে আবারও বড়সড় দুর্যোগের মুখে জেলাবাসী। দুদিন ধরে দফায় দফায় বৃষ্টির জেরে জেলার ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, সোনারপুর, বারুইপুর, কাকদ্বীপের নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রবিবার রাত থেকে বৃষ্টির পরিমান কয়েক গুন বেড়ে যায়। সুন্দরবন উপকূলে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায়, ৪০ থেকে ৫০ কিমি। ইতিমধ্যে জেলার দ্বীপাঞ্চল ঘোড়ামারা ও মৌসুনির বাসিন্দাদের নিরাপদস্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মৌসুনির ৫০০ জন মানুষকে স্থানীয় স্কুলে তুলে আনা হয়েছে৷ প্রয়োজনে আরও মানুষকে তুলে আনা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতা প্রচার করা হচ্ছে। বকখালিতে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা সমুদ্রতটে প্রচার চালাচ্ছেন। দুর্যোগের মধ্যে বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, গঙ্গাসাগর ও মৌসুনির পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে মানা করা হয়েছে। বুধবার পূর্ণিমার কোটাল। যারফলে নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে। দুর্যোগ চলতে থাকলে সুন্দরবনজুড়ে বাঁধ উপচে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সকাল থেকে রাস্তাঘাট ছিল শুনশান। জনজীবন কার্যত স্তব্ধ। সুন্দরবনের বাঁধ এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টিতে বাড়ির কাছাকাছি জল পৌঁছে গিয়েছে। ডুবেছে পুকুর, চাষের জমি। সামনের কোটালের ভয়ে শঙ্কিত বকখালির এক বাসিন্দা জানালেন, পুকুর, চাষের জমি সব ডুবে গিয়েছে। বাড়ির কাছাকাছি জল। কোটালের সময় নদীর জল বাড়লে আবার বিপদ বাড়বে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। জেলাশাসক পি উলগানাথন জানিয়েছেন, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। মহকুমাস্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ব্লকগুলিতে ত্রাণ ও শুকনো খাবার মজুত করা আছে।