মাইকেল মধুসূদন দত্ত সাহিত্য জগতের এক বর্ণময় চরিত্র। লোয়ার সার্কুলার রোডের সমাধিফলকে স্বরচিত আত্মপরিচয়, যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ তীরে/জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি/রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী। বাংলা ভাষা কে ঘৃণা করা মধুসূদনের কলম দিয়ে অমৃত ঝরে হয় বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ, জন্ম নেয় অমিত্রাক্ষর ছন্দ। বর্ণময় মধুসূদন— কালো থেকে সাদা, কোনও রঙই বাদ নেই সে বর্ণালীতে, ছন্দময় মধুসূদনব্ল্যাঙ্ক ভার্স অনুসরণে অমিত্রাক্ষর থেকে অ্যাক্রস্টিক, প্রেমময় মধুসূদন রেবতীর, রেবেকা, হেনরিয়েটা কিংবা সবাইকে ছাপিয়ে কবিতা কিংবা গৌরদাস, প্রতিভাময় মধুসূদন— ক্যাপটিভ লেডি থেকে মেঘনাদবধ, মধুময় মধুসূদন—হিন্দু কলেজের মাতাল মধু থেকে বারো বোতল বিয়ারের বিনিময়ে নীলদর্পণ নাটকের এক রাত্রে ইংরেজি অনুবাদ। দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদধন্য মধুসূদন থেকে ভাগ্যদেবতার অভিশাপগ্রস্ত মধুসূদনের জীবন নিজেই একটা রূপকথা।
আরও পড়ুন-ছাঁটাইয়ের কোপে উইপ্রো কর্মীরাও
ঠিক দুশো বছর আগের সে রূপকথার শুরু যশোরে। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত প্রবল প্রতাপশালী, অতি-বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত সদর দেওয়ানি আদালতের প্রতিষ্ঠিত উকিল। পরপর দুটি পুত্রসন্তানকে হারিয়ে জাহ্নবী দেবীর কোলে এসেছে মধু পিতাকে পুন্নাম নরক থেকে উদ্ধার করতে, বাবার তাই বিশেষ লক্ষ্য মধুর প্রতি। রাজনারায়ণ সপরিবারে সাগরদাঁড়ি ছেড়ে কলকাতায় এলে— মধু হিন্দু কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। ইংরেজি সাহিত্যে প্রবল অনুরাগ, গভীর বায়রন প্রীতি, শিক্ষক কবি ডেভিড রিচার্ডসন কবিতা, নাটকীয় উচ্চারণমধুর মনপ্রাণ জুড়ে তখন সরস্বতীর নিরন্তর জপ, নামী ইউরোপীয় সাহিত্যিকদের তালিকায় নিজের নাম দেখার আশা। বাংলার নানা কুসংস্কার, অশিক্ষা মধুর ইংরেজ প্রীতির সঙ্গে সমমাত্রায় বাংলার প্রতি ঘৃণা বাড়তেই থাকে। এসে কম্পিটিশনে সেরা পুরস্কার, নামী পত্রিকায় ইংরেজি কবিতা ছাপা মধুর কাছে তখন স্যানস্কৃট-এ বামুন-বামুন গন্ধ আর বেঙ্গলি চাকরবাকরদের ভাষা। লিটারেচারে তুখোড় মধু কলেজে নিয়মিত মদ্যপান করে, অঙ্ক অপছন্দ করে। মধু পাগলের মতো ভালবাসে বন্ধু গৌর দাস বসাককে। শ্যাম-মধুর গৌরপ্রীতি বড়ই প্রবল। আসলে মধু ছিল আদ্যোপান্ত অনন্ত প্রেমিক যে সব সময় খুঁজে বেড়ায় For one who forsook for my garden His Paradise!
আরও পড়ুন-বিজেপির মিথ্যাচার ক্ষুব্ধ মালিওয়াল
বিলেত যাওয়ার মোহ, ইংরেজি সাহিত্যের আকর্ষণ, বায়রনের মতো নামী ইংরেজ কবি হওয়ার স্বপ্ন, রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ররোচনা— এই সবের সামগ্রিক ফল আসন্ন বিবাহ, পরিবার, ধর্ম, গৃহ, বিপুল বৈভব ছেড়ে খ্রিস্ট ধর্ম নিয়ে মধুসূদন তখন পাক্কা সাহেব মাইকেল এম এস ডাট। বাবা রাগে একমাত্র সন্তান মধুকে তাজ্যপুত্র করলেন। হিন্দু কলেজ কেরেস্তান মধুকে পরিত্যাগ করে। বিশপস কলেজে চার বৎসর গ্রিক, ল্যাটিন, ফরাসি, হিব্রু শিক্ষা চলতে থাকে। বিশের তাজা তরুণ মধু ,অমিত বিলাসী যাপনে অভ্যস্ত মধু, কিন্তু বাবার সম্পত্তির মাসোহারা বঞ্চিত মধু মাদ্রাজে অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত হন। কিছুদিনের মধ্যেই মিল্টনের প্যারাডাইস লস্টের ছায়ায় Captive Lady-র জন্ম হবে এই মাদ্রজেই। স্থানীয় নীলকর সাহেবের কন্যা রেবেকা থম্পসনকে জীবনসঙ্গী করলেন খ্রিস্ট রীতিতে। চার সন্তানের সঙ্গে সাময়িক সুখী সাহিত্যজীবন। বন্ধু গৌরদাস বসাককে লেখা চিঠি মধুর জীবন ইতিহাস লেখার এক অন্যতম উপাদান। মধুর সৌভাগ্যলক্ষ্মী বড়ই চঞ্চলা। ইংরেজি সাহিত্যে বায়রন হওয়া অধরা মাধুরী হয়ে রইল। খ্রিস্টান হয়েও সাহেবদের সঙ্গে সমমর্যাদা পেলেন না কোথাও, নেটিভ হয়েই থাকতে হল। ভাগ্য দেবতার অভিশাপ নিয়ে জন্ম যার তার জীবনে ব্যর্থতাই স্বাভাবিক। চার সন্তান-সহ রেবেকা হারিয়ে গেল ফরাসি শ্বেতাঙ্গী হেনরিয়েটার ছায়ায়।
আরও পড়ুন-বিজেপির মিথ্যাচার ক্ষুব্ধ মালিওয়াল
মধুসূদনের জন্মপত্রিকায় শুধু গ্রহ নয় বোধহয় ছিল সমস্ত সৌরজগতের বক্রদৃষ্টি। এত সাধের সৃষ্টি ক্যাপটিভ লেডির উপর হতাশার জল ঢেলে দিলেন জন এলিয়ট ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন। বন্ধু গৌরদাসও ভেবেছিলেন উচ্চপদস্থ সাহেবের প্রসংশা মধুকে বায়রন মিলটনের সমগোত্রীয় হতে সাহায্য করবে। সাহেবের সে সাহিত্য এতটুকুও পছন্দ হয়নি পরন্তু তাঁর মনে হল, নিজের ভাষাকে তুচ্ছ করে যে অন্য ভাষায় সেরা সাহিত্যিক হওয়ার লক্ষ্যে এগোয় তার আর যাই হোক, আত্মপোলব্ধি হয়নি।
আরও পড়ুন-স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার কেন্দ্র কেন দায় চাপাচ্ছে, প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট
পিতার মৃত্যুর পর বিশাল সম্পত্তি বেদখল। অর্থাভাব আর মদের নেশায় মধু বিপর্যস্ত। কলকাতা হাইকোর্টে সামান্য মুহুরির চাকরি। বিলাস আছে, আকন্ঠ নেশা আছে কিন্তু টাকার জোগাড় কই? ধার করে ধার মেটানো আর পাওনাদারের চোখ এড়িয়ে বেড়ানো তখন মধুর নিত্য দিনের কাজ। বড়মানুষের বড় খেয়াল, বিড়ালের বিয়ে বাইনাচ— এসব এবার পুরনো, নতুন শখ ম্যারাপ বেঁধে নাটক করবেন তাঁরা, কিন্তু বাংলায় নাটক কই? রত্নাবলী নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করতে করতে মধুর মনে হয় এর চেয়ে ঢের ভাল নাটক তিনি লিখতে পারেন। জন্ম হয় শর্মিষ্ঠার— প্রথম মৌলিক বাংলা নাটক। তার পর সে কলম দিয়ে সোনা ঝরে। বাংলায় প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রয়োগ— তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য। আশ্চর্য প্রহসন, জলের মতো মদ খাওয়া মধু, বাংলা বিদ্বেষী মধু, অখাদ্যখাদক কেরেস্তান মধুর কলম দিল বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একই কি বলে সভ্যতা জাতীয় প্রহসন। কৃষ্ণকুমারী নাটক, মেঘনাদ বধ কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, সাহিত্য জগতে প্রবল জোয়ার। সেই মেঘনাদ বধ কাব্য— যেখানে রাবণ ছল ক্রুর ভিলেন নয়, এক অসহায় পিতা। মহাকাব্যের ছোটো চরিত্র মেঘনাদ এখানে এক ট্র্যাজিক হিরো। খ্যাতির তুঙ্গে মধু। সৌভাগ্যলক্ষ্মী যেন যেচে ধরা দিয়েছেন মধুসূদনের কাছে। সাহিত্য অনুরাগী বাঙালির মুখে মুখে তখন মধু-প্রশস্তি। দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ, নীলকর সাহেবদের নীলচাষীদের উপর অত্যাচারের সমাজদর্পণ। কিন্তু সে তো বাংলায় লেখা, ইংরেজরা সে আগুনের আঁচ না পেলে তাতবে কী করে! অতএব ইংরেজিতে অনুবাদ এবং অগত্যা মধুসূদন! একরাতের মধ্যে নীলদর্পণ ইংরাজিতে অনুবাদ করলেন মধুসূদন। নিজের নামের বদলে লিখলেন ‘by a native’. রাতভর এই ইতিহাস তৈরির পরিশ্রম মূল্য বারো বোতল মদ।
আরও পড়ুন-ঋষির জরিমানা
মধুসূদনের জীবনপথের গল্পটা এখানে শেষ হলে বাংলা সাহিত্যের সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাওয়া এক পাক্কা সাহেব তার তিন সন্তান মিল্টন, নেপোলিয়ান আর শর্মিষ্টা এবং সঙ্গী হেনরিয়েটার একটা সুখ সমাপ্তি গল্প হতে পারত। কিন্তু চিত্রনাট্য ভাগ্যদেবতার নিজের হাতে লেখা। ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন না গেলে সাহেবের মান থাকে কই? নানা ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে বাংলার ঈশ্বরের সহায়তায় দেশি সাহেব মধু চলল বিলিতি সাহেবদের খাসমুলুক ইংল্যান্ডে। গল্পের মাঝপথে নাটকীয় মোড়, চেনা ভিলেন অর্থাভাব। পত্তনিদার শর্ত ভেঙে দেশ থেকে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলেন। হেনরিয়েটাও প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। জীবন খাতার পরের পাতায় দেখা যাচ্ছে মধু, হেনরিয়েটা ও তাদের সন্তানেরা একত্রে রয়েছেন ফ্রান্সে, ভার্সাই শহরে।
আরও পড়ুন-প্রস্রাবকাণ্ড চেপে যায় এয়ার ইন্ডিয়া
একদিন অপরিমিত ব্যয়, বিলাসী জীবনযাপন তো অন্য দিন অনাহার। প্রতিবেশীরা কেউ দয়া করে মিল্টনের জন্য দুধ রেখে যাচ্ছে। এর মধ্যেই ইতালীয় পেত্রার্ক সনেটের অনুসরণে বাংলায় লেখা হচ্ছে চতুর্দশপদী কবিতাবলী। কবির নিজের ভাষায়— ‘‘সে দেশে জনম পূর্বে করিলা গ্রহণ/ ফ্রাঞ্চিস্কো পেতরাকা কবি; বাক্ দেবীর বরে/কাব্যের খনিতে পেয়ে এই ক্ষুদ্র মনি,/স্বমন্দিরে প্রদানিলা বাণীর চরণে/ভারতে ভারতী পদ উপযুক্ত গনি/উপহার রূপে আজি অরপি রতনে।।’’
‘‘আশার ছলনে ভুলি কি ফল লভিনু হায়!” উচ্চাশায় ছিল ম্যাকবেথের উত্থান আর পতনতাহলে উচ্চাশার অপর নাম কি মৃত্যু? সেই উচ্চাশা এক ভাগ্যবিড়ম্বিত বিরল প্রতিভাকে বারবার উপরে উঠিয়েছে আর নিচে নামিয়েছে। গঞ্জনা আর প্রশংসা পালা করে এসেছে আর কবি তার মধ্যে সাফাই গেয়েছেন, ‘গ্রহদোষে দোষী জনে কে নিন্দে সুন্দরী?’ কিংবা ‘এ ভব মণ্ডল মায়াময়, বৃথা এর দুঃখ সুখ যত’। আবার সুখের দিনে একহাতে কনিয়াক আর অন্য হাতে দান্তে নিয়ে কবির সৃষ্টি, ‘কোথা মম শ্যামমণিকহ কুঞ্জবর…মধু কহে শুন ব্রজাঙ্গনে, মধুপুরে শ্রীমধুসূদন’। নেহাত পদকর্তার নামটা আছে তাই বিদ্যাপতি ভ্রম হয় না। আর নিতান্তই ভাগ্যদেবীর কুনজর তাই এ পদাবলী সৃষ্টি করেও টিমোথি পেন পোয়েমের ভানুসিংহ হয়ে ওঠা হয় না। বিদেশে প্রচুর দেনা ও যন্ত্রণা মেটে ঈশ্বরের কৃপায়। কিন্তু দেশে ফিরেই স্ট্যাটাস বজায় রাখতে স্পেনসার্স ছাড়া গতি কী। যে ঈশ্বর পাশে থেকে ব্যারিস্টারি পড়তে সহায়তা করেছিলেন, মাত্রাতিরিক্ত পানাসক্তি ও অমিতব্যয়িতা সেই দয়ারসাগর ঈশ্বরকেও মধুবিমুখ করে তুলেছিল।
আরও পড়ুন-ইউপির কারাকর্তাকে আদালত অবমাননার নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের
জীবন খাতার বাকি পাতাগুলো এক সীমাহীন অন্তর্দ্বন্দ্ব, হাহাকার আর অনুশোচনায় ভরা। ‘হে বঙ্গ ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন/ তা ছেড়ে অবোধ আমি…” আত্মগ্লানি কিংবা ‘‘মধুহীন কোরো নাকো তব মনকোকনদে” প্রার্থনা। মনে পড়ে বন্ধু গৌরদাসের নাম নিয়ে মুহূর্তে লেখা অ্যাক্রস্টিক— ‘‘গম্ভীর গর্জন সদা করে জলধর/উথলিল নদনদী ধরণী উপর/ রমণী রমণ লয়ে সুখে কেলি করে/দানবাদি দেব যক্ষ সুখিত অন্তরে/ সমীরণ ঘন ঘন ঝন ঝন রব/বরুণ প্রবল দেখি প্রবল প্রভাব/স্বাধীন হইয়া পাছে পরাধীন হয়/কলহ করয়ে কোনো মতে শান্ত নয়।।” কখনও মনে পড়ে রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা তাঁর কন্যা রেবতীর কথা। সময়ের বন্ধুরা অসময়ে কেউ নেই। শুধু ছেড়ে যায়নি গৌরদাস, মনমোহন-সহ হাতে গোনা ক’টি বন্ধু আর চিরসঙ্গী হেনরিয়েটা। জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের দয়ায় লাইব্রেরি ঘরে কোনক্রমে মাথা গোঁজার ঠাঁই। পরে বেনিয়াপুকুরের বাসাবাড়ি। বাচ্চাদের খাবার নেই, পরার পোশাক নেই, রোগ বাসা বেঁধেছে দুই চিরসঙ্গীর শরীরে। মনে আশা, আবার ওকালতি করবেন, সরস্বতীর সাধনা করবেন। ‘উর তবে উর দয়াময়ী/উরি দাসে দেহ পদ ছায়া”। সেই মধু যে কিনা ঘৃণা করত দগ্ধে দগ্ধে বাঁচা কে— আজ বন্ধুদের দয়ায় সে আলিপুর জেনারেল হাসপাতালের দাতব্য শয্যায়। নিঃস্ব মধু, রিক্ত মধু, আত্মগ্লানি ক্লেদাক্ত মধু। শেষ জুনের এক পড়ন্ত বেলায় পঞ্চাশের মাইলফলক ছোঁয়ার আগেই এক অভিশপ্ত জীবনের সমাপ্তি হয়। জীবন মরণ সীমানা ছাড়িয়ে তার তিনদিন আগে থেকে তার প্রিয়া অপেক্ষা করে আছে সেখানে। এক অনন্ত অভিশাপের, এক ট্র্যাডেজি গাথার মিলনান্তক যবনিকা।
আরও পড়ুন-এবার হাওড়া-তারকেশ্বরেও ব্যাহত রেল পরিষেবা
রূপকথারা হারায় না, বেঁচে থাকে নানা ধারায়। তিনটি সন্তানকে দেখার জন্য আবাল্য সুহৃদ মনমোহন বসুর কাছে মৃত্যুপথযাত্রী মধুর অন্তিম আর্তি। সহৃদয় বন্ধুদের সহায়তায় বড় হওয়া মিল্টন, শর্মিষ্ঠা আর নেপোলিয়ানের গল্পটা এগিয়ে যায়। মাইকেল মধুসূদন দত্তের পুত্র নেপোলিয়ন, তাঁর পুত্র মাইকেল ডটন। এঁর কন্যা ভারতে জাতীয় বাস্কেটবল দলের ক্যাপ্টেন জেনিফার ডটন পেজ। যে ক্রোমোজোমগুলো প্রতিভা বয়ে নিয়ে যায় এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে, তারাই উত্তরপুরুষের হাতে পৌঁছে দেয় প্রতিভার মশাল। জেনিফারের হাত থেকে সেটা পৌঁছে যায় লিয়েন্ডার পেজের হাতে। পেনটা বদলে ব্যাডমিন্টনের র্যাকেট হলেও প্রতিভার ধারা তো একই ভাবে বহমান থাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।