সংবাদদাতা, দিঘা : চার দিনে ১০ লক্ষ ভক্ত সমাগম দিঘার জগন্নাথধামে (Digha Jagannath Temple)। অবিশ্বাস্য রেকর্ড। উদ্বোধনের কয়েক দিনের মধ্যেই দেশের সেরা ট্যুরিস্ট স্পটের অন্যতম হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যে তৈরি দিঘার জগন্নাথধাম। শুধু বাংলার বিভিন্ন কোণ থেকে নয়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন, বিদেশ থেকেও আসা ভক্তদের লম্বা লাইন। এলাকায় পা দিলেই শোনা যাচ্ছে জয় জগন্নাথ।
ভোর ৫টায় শুরু হয় জগন্নাথধামের (Digha Jagannath Temple) মঙ্গলারতি। এরপর সারাদিনে মোট সাতবার চলে জগন্নাথের আরতিপর্ব। সেখানেই খোল-খরতাল-হারমোনিয়াম নিয়ে প্রভু জগন্নাথের নামগানে মেতেছেন বিদেশিরা। কেউ রাশিয়া, কেউ এসেছেন আমেরিকা থেকে। ইসকন মায়াপুর থেকে জগন্নাথধামে এসে তাঁরা জগন্নাথের ভক্তিরসে বিলীন হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে দিঘার এই জগন্নাথধাম দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। মন্দিরের ৬ এবং ৭ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হচ্ছে দর্শনার্থীদের। শনিবার উইকএন্ডে সকাল থেকেই বাড়তি ভিড় দেখা গেল জগন্নাথধামে। এক ঝলক চাক্ষুষ করতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন এসেছেন জগন্নাথধামে। দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশের তরফে রাস্তার মাঝে ব্যারিকেড করে লাইন ধরে দর্শনার্থীদের মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করানো হচ্ছে। জুতো রাখার জন্য বাইরেই বিশেষ ব্যবস্থা হয়েছে। ইসকনের দাবি, চার দিনে ১০ লক্ষ মানুষ জগন্নাথধাম দর্শন করেছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে মন্দির বন্ধ হওয়া পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ লাইন দিয়ে জগন্নাথধাম দর্শন করছেন। অতিরিক্ত ভিড় সামলাতে ইতিমধ্যে জেলা পুলিশের তরফে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে মন্দির চত্বরে। শনিবার বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য নিজে জগন্নাথধাম গিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেন। সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য সকাল ৬টায় খুলে যায় মন্দিরের দরজা। দুপুরের ভোগ আরতির পর দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে মন্দিরের দরজা। ফের ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকলের জন্য খোলা থাকে। উদ্বোধনের কাঠামো ইতিমধ্যে সরে গিয়েছে। মন্দিরে যাতে যত্রতত্র আবর্জনা না থাকে তার দায়িত্ব দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের। পর্ষদের তরফে সকাল থেকে রাত দফায় দফায় পরিচ্ছন্নতার কাজ চালাচ্ছে। কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতি তথা মন্দিরের দায়িত্বে থাকা রাধারমণ দাস জানান, রাশিয়া থেকে বহু ভক্ত এসেছেন। ইসকন মায়াপুর থেকে তাঁরা এখানে এসে ভগবানের নামগান করছেন। প্রতিদিন কাতারে কাতারে মানুষ প্রভু জগন্নাথ-দর্শনে ভিড় জমাচ্ছেন। একদিকে ভক্তি, অন্যদিকে প্রশাসনের তৎপরতায় জগন্নাথধাম হয়ে উঠছে রাজ্যের এক নতুন তীর্থকেন্দ্র। যেভাবে ভক্ত সমাগম রোজ লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে যে কোনও সময় প্রতিদিনের ভক্ত সমাগম ৩ লক্ষ ছাড়াবে।
আরও পড়ুন: এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষতি হবে বছরে ৭ হাজার ২৬০ কোটি টাকা