প্রতিবেদন : করোনার হাত থেকে বাঁচতে টিকাকরণকেই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার করেছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও টিকাকরণের গুরুত্ব বোঝাচ্ছে। ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে গোটা দেশে ধাপে ধাপে শুরু হয়েছে করোনার টিকাকরণ। ভারতে করোনার প্রকোপ শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের মার্চ মাস নাগাদ। ২০২০ সালের ১৩ মে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, করোনার বিরুদ্ধে লড়তে সব মিলিয়ে ৩১০০ কোটি টাকা সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এরমধ্যে টিকাকরণ সংক্রান্ত গবেষণা ও উন্নতির জন্য পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে দেওয়া হবে ১০০ কোটি টাকা। দেশের মুখ্য বিজ্ঞান উপদেষ্টার তত্ত্বাবধানে সেই টাকা খরচ করা হবে।
আরও পড়ুন-এগোলেন সিন্ধু
অথচ সম্প্রতি কেন্দ্রের তথ্যেই জানা গিয়েছে, প্রতিশ্রুতি দিলেও টিকা সংক্রান্ত গবেষণা করার জন্য পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে কোনও অর্থই দেওয়া হয়নি। সমাজকর্মী লোকেশ বাত্রা আরটিআই বা তথ্য জানার অধিকার আইনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন, পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে টিকা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকা কি দেওয়া হয়েছে? কয়েক মাস টালবাহানার পর ওই আরটিআইয়ের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে, টিকা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য পিএম কেয়ার্স ফান্ডের পক্ষ থেকে একটি পয়সাও সাহায্য করা হয়নি। দেশের কোনও এজেন্সি এই খাতে কোনও অর্থ পায়নি।
আরও পড়ুন-এটাই শেষ মরশুম : সানিয়া
অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে বাগাড়ম্বর করলেও বাস্তবে কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি তা জানিয়ে দিল খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। টিকা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য আজ পর্যন্ত যে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি তা তথ্য জানার অধিকার আইনে ফাঁস করল কেন্দ্রের মন্ত্রকই। যদিও পিএম কেয়ার্স ফান্ডে বহু সাধারণ মানুষ ও শিল্পপতি দফায় দফায় বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য করেছেন। করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে দেশবাসীর লড়াইয়ের ভাবাবেগ উসকে বহু প্রচার করেছে বিজেপি সরকার। অথচ এখন সরকারি তথ্যেই দেখা যাচ্ছে সাফল্যের দাবির সিংহভাগই অশ্বডিম্ব!
আরও পড়ুন-বিরাট ফিরতেই হাতছাড়া ম্যাচ
এর আগে একাধিকবার পিএম কেয়ার্স ফান্ডের স্বচ্ছতা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন করেছে। এই তহবিলের অর্থ খরচ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এই তহবিলে জমা পড়া অর্থ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু মোদি সরকার বিশেষ ক্ষমতা বলে পিএম কেয়ার্স ফান্ড সংক্রান্ত কোনও তথ্যই প্রকাশ্যে আনেনি। পিএম কেয়ার্স ফান্ডে জমা হওয়া টাকা থেকে করোনা মোকাবিলার কাজে কতটা সাহায্য করা হয়েছে তা নিয়ে আজও প্রচুর ধোঁয়াশা। এরই মধ্যে সামনে এল এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে টিকা সংক্রান্ত ১০০ কোটি বরাদ্দের গল্প পুরোটাই ভুয়ো। টিকা গবেষণায় কোনও অর্থই বরাদ্দ করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে জমা করা টাকা কোন খাতে বা কী কাজে লাগানো হচ্ছে? যদিও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা তাঁর সরকার নীরবতা বজায় রেখে চলেছে। মোদি সরকারের এই নীরবতাই পিএম কেয়ার্স ফান্ডের স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে একাধিক প্রশ্ন তুলছে।