প্রতিবেদন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর বুধবার থেকেই চিনা পণ্যের উপর চাপল ১০৪ শতাংশ শুল্ক। এরপরই ক্ষুব্ধ বেজিং জানিয়েছে, একতরফা সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করে তাদের ভয় পাওয়ানো যাবে না। বুধবার চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং জানান, যে কোনও নেতিবাচক ও বহিরাগত ধাক্কা সামলাতে ‘সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ’ দেওয়ার মতো নীতিগত ব্যবস্থা রয়েছে বেজিংয়ের কাছে। এদিকে, মার্কিন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন চিনের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-বাংলাদেশের থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা কেড়ে চাপ তৈরি করল ভারত
চিনের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, দেশের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বজায় রাখার বিষয়ে সরকার আত্মবিশ্বাসী। এর পাশাপাশি ট্রাম্পের শুল্কনীতির তীব্র নিন্দা করে লি বলেন, আমেরিকা নিজের স্বার্থরক্ষা করতে এমনভাবে শুল্ক চাপিয়েছে। তবে চিন শুধু নিজের স্বার্থের কথা ভাবে না। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম রক্ষা করাই আমাদের বিবেচনায় প্রাধান্য পাবে। এই সূত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক জোরদার করার ডাক দিয়েছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে এবার ওষুধের উপরেও ‘বড়’ শুল্ক চাপাতে চলেছে আমেরিকা। আমেরিকাই ভারতের ওষুধজাত পণ্যের বৃহত্তম রফতানির বাজার। ট্রাম্প জানান, অদূর ভবিষ্যতে আমেরিকায় আমদানি করা ওষুধের উপরেও বড় শুল্ক আরোপ করা হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুক্তি, এই শুল্ক আরোপের ফলে ওষুধ কোম্পানিগুলি তাদের ব্যবসা আমেরিকায় স্থানান্তরিত করতে উৎসাহিত হবে।
এর আগে ওষুধ এবং সেমিকন্ডাক্টরকে পারস্পরিক শুল্কনীতির আওতা থেকে দূরে রেখেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই দুইয়ের উপরেও শুল্ক চাপাতে মরিয়া ট্রাম্প। গত সপ্তাহে ওষুধের উপর শুল্ক চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বুধবারের ঘোষণার পর সংশ্লিষ্ট সকলের অনুমান, এবার তা বাস্তবায়িত হবে।
প্রসঙ্গত, ভারতের দেশীয় শিল্পগুলির মধ্যে ওষুধ উৎপাদন শিল্প আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। আমেরিকাই ভারতের ওষুধজাত পণ্যের বৃহত্তম রফতানির বাজার। ফলে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের জেরে সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে এই শিল্পে। শিল্প সংস্থা ফার্মাসিউটিক্যালস এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’র মতে, গত অর্থবর্ষে প্রায় ২৭.৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ওষুধ রফতানি করেছিল ভারত, যার মধ্যে ৩১ শতাংশই রফতানি হয়েছিল আমেরিকায়, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮.৭ বিলিয়ন ডলার। গোটা বিশ্বে জেনেরিক ওষুধ রফতানিতে প্রথম সারিতে রয়েছে ভারত। বিশ্বের মোট জেনেরিক ওষুধের ২০ শতাংশ ভারত রফতানি করে। প্রায় ২০০টি দেশে ওষুধ রফতানি করে ভারতের বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা। ফলে নতুন মার্কিন
নীতিতে ফের আরেক দফা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে ভারতের রফতানি ব্যবসা।