তুহিনশুভ্র আগুয়ান, দিঘা: দিঘার বালুমাটিতে এই প্রথম প্রভু জগন্নাথের পবিত্র স্নানযাত্রা হচ্ছে। তাই দিঘা জুড়ে সাজ সাজ রব। আজ, বুধবার ১০৮টি তীর্থক্ষেত্রের জলে স্নান করবেন প্রভু জগন্নাথ। মঙ্গলবার বিকেলেই বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রের পবিত্র জল এসে পৌঁছেছে দিঘার জগন্নাথধামে। পাশাপাশি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়ে রথের রশিতে টান দিয়ে চলে চলল মহড়া। ছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি ও পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। মন্দিরের ৬ নম্বর গেট দিয়ে বের করে বেশ কিছুটা টেনে নিয়ে যাওয়া তিনটি রথকে। দিঘায় এই প্রথম গড়াবে রথের চাকা। সুষ্ঠুভাবে তা সম্পন্ন করতেই আগেভাগে এই মহড়া বলে দাবি প্রশাসনের। এদিকে ১০৮ তীর্থের জলে আজ, বুধবার স্নানমণ্ডপে স্নান করবেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। স্নানযাত্রা ঘিরে আধ্যাত্মিক ও মানসিক শান্তিবৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যে দূরদূরান্তের ভক্তরা আসতে শুরু করেছেন দিঘায়।
আরও পড়ুন-পকেটমারের থেকেও দ্রুততম ধোনির হাত
জগন্নাথধাম সূত্রে খবর, সকাল ৯টায় শুরু হবে পাহাণ্ডি বিজয়। চলবে প্রায় দেড় ঘণ্টা। তার জন্য ইতিমধ্যে ইসকনের ৩০ জন সন্ন্যাসী দিঘায় পৌঁছেছেন। তাঁরাই পাহাণ্ডি বিজয়ের মাধ্যমে একে একে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নানমণ্ডপে নিয়ে আসবেন। সেই সময় খোল-খরতালের ধ্বনিতে তৈরি হবে অপূর্ব মাহেন্দ্রক্ষণ। স্নানের আগে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার শরীরে লাগানো হবে তুলসি। প্রথমে বের করা হবে সুদর্শন চক্র।এর পর বলরাম, সুভদ্রা এবং সবশেষে প্রভু জগন্নাথকে। মন্দিরের বাঁদিকে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ফুল ও গাছগাছালি দিয়ে সাজানো স্নানমণ্ডপ। ১১টা নাগাদ শুরু হবে স্নানযাত্রা। দূর থেকেও দর্শনার্থীরা স্নানযাত্রা দর্শন করতে পারবেন। ১০৮ তীর্থক্ষেত্রের জলে মেশানো হবে কাঁচা দুধ, আতর ও চন্দন। তিন বিগ্রহকে সিল্কের কাপড়ে আবৃত করে চলবে স্নানপর্ব। সঙ্গে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ, কীর্তন ও শঙ্খধ্বনি। স্নানের পর ১০৮টি তুলসি পাতা জগন্নাথের পায়ে দেওয়া হবে। এরপর ফের পাহাণ্ডি বিজয়ের মাধ্যমে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে জগন্নাথ ও বলরামকে গজবেশ ও সুভদ্রাকে পদ্মবেশে সজ্জিত করা হবে। অর্পণ করা হবে গোলাপ ফুল-সহ পাঁচ ফল। ইতিমধ্যে ইসকনের এক ভক্ত গজবেশ ও পদ্মবেশ তৈরি করে এনেছেন। বুধবারই শেষ জগন্নাথ দর্শন করা যাবে। ১৫ দিন পর আয়ুর্বেদিক পাঁচনে সুস্থ হয়ে অনসর পর্ব শেষে ফের সকলের সামনে আসবেন ২৬ জুলাই। কলকাতা ইসকনের সহ-সভাপতি তথা দিঘা জগন্নাথধাম ট্রাস্টের সদস্য রাধারমন দাস বলেন, ‘যে ১৫ দিন জগন্নাথ দেব অনসর পর্যায়ে থাকবেন সেই সময় মদনমোহন জিউ দর্শন করতে পারবেন পর্যটকেরা। রথের আগের দিন অর্থাৎ নেত্র উৎসবের সময় ফের জগন্নাথের দর্শনের সুযোগ মিলবে।’