প্রতিবেদন : আমজনতার উপর কোপ আর পুঁজিপতি বন্ধুদের স্বার্থরক্ষায় সদা তৎপর। এই হল কেন্দ্রের মোদি সরকারের রাজনৈতিক চরিত্র। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দফায় দফায় হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ (Unpaid debt) খেলাপ করে দেশ ছেড়েছে বহু শিল্পপতি। পাশাপাশি ব্যাঙ্কের হিসেবের খাতা থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে শিল্পের নাম করে নেওয়া বড় অঙ্কের ঋণ। বিরোধীরা লাগাতার যা বলে চলেছেন এবার তা সংসদে স্বীকার করতে বাধ্য হল কেন্দ্র। লোকসভায় এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রের পেশ করা তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো শোরগোল পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, গত ২০১৪-১৫ থেকে শুরু করে ন’টি অর্থবর্ষে নথিভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি হিসাবের খাতা থেকে মোট ১৪,৫৬,২২৬ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ মুছে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭,৪০,৯৬৮ কোটি টাকা শুধু শিল্প বাবদ নেওয়া ঋণ।
আরও পড়ুন-অভিযোগ ওঠায় মণিপুর থেকে সরানো হল অসম রাইফেলসকে
লোকসভায় বিরোধীদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত কারাড জানিয়েছেন, ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষ থেকে মোট ৯টি অর্থবর্ষে নথিভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির হিসাবের খাতা থেকে মোট ১৪,৫৬,২২৬ কোটি টাকার অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ) মুছে দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩-এর মার্চ পর্যন্ত মুছে দেওয়া ঋণের মধ্যে ২,০৪,৬৬৮ কোটি টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে ব্যাঙ্কগুলি। অর্থাৎ, নামমাত্র ১৪ শতাংশ ফেরানো গিয়েছে। এই হার নিয়েও সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধী দলগুলি। অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মুছে দেওয়া নিট ঋণ (মুছে দেওয়া ঋণ এবং তার মধ্যে উদ্ধার হওয়া অংশের ফারাক) ছিল ১.১৮ লক্ষ কোটি টাকা। এর পাশাপাশি শিল্পের ঋণের পরিমাণ তুলে ধরে জানানো হয়েছে, এই হিসেবে শিল্পের ঋণ ৭,৪০,৯৬৮ কোটি টাকার। অনাদায়ী ঋণ (Unpaid debt) নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে সরব দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের অভিযোগ, চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং বেকারত্বে কাহিল সাধারণ মানুষ আর্থিক ভাবে কোনও সুরাহা পাচ্ছেন না। উপরন্তু ঘাড়ে ঋণ থাকলে না খেয়েও অনেককে চড়া সুদে তা মাসে মাসে শোধ করে যেতে হচ্ছে। অথচ এনপিএ মুছে ‘বন্ধু পুঁজিপতিদের’ ঘুরপথে সাহায্য করে চলেছে কেন্দ্র। কোটিপতি ঋণখেলাপিরা ব্যাঙ্কের হাজার হাজার কোটি টাকা না মিটিয়ে দেশ ছেড়ে পগার পার!