প্রতিবেদন: সাতমাস ধরে জাতিগত হিংসার আগুনে বিপর্যস্ত বিজেপি শাসিত মণিপুর। অসংখ্য প্রাণহানি, ধর্ষণ, নিখোঁজ, ঘরছাড়া মানুষের হাহাকার থামছে না। সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ও ব্যর্থ কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার। উত্তরপূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যে নির্বিচারে জাতি হিংসায় মানুষের মৃত্যু হলেও উদাসীন খোদ প্রধানমন্ত্রী। অগ্নিগর্ভ মণিপুরের পরিস্থিতি ও বিজেপি নেতৃত্বের মানসিকতা দেখে গেরুয়া দল সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে উত্তর-পূর্বের মানুষের। সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার মর্যাদা দিতে মিজোরামের ভোটপর্ব মিটতেই এবার উত্তর-পূর্বকে পাখির চোখ করল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সামনের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে দেশের উত্তর-পূর্বে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের সক্রিয়তা শুরু হল। এই লক্ষ্যে অসমের ডিব্রুগড়ে শুক্রবার থেকে চলছে বিজেপি বিরোধী ১৫ দলের দু’দিনের বৈঠক।
নতুন জোট ‘ইউনাইটেড অপোজিশন ফোরাম অসম’-এর বৈঠকে উপস্থিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, এনসিপি, আরজেডি, জেডিইউ, সিপিএম, সিপিআই, সিপিআই-এমএল লিবারেশন, শিবসেনা (ইউবিটি)-র মতো ‘ইন্ডিয়া’র শরিকেরা। এছাড়াও উপস্থিত রয়েছে লুরিনজ্যোতি গগৈয়ের অসম জাতীয় পরিষদ, অখিল গগৈয়ের রাইজর দল, জনজাতি সংগঠন ‘অল পার্টি হিল লিডারস কনফারেন্স’, জাতীয় দল অসম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক। মূলত অসম-সহ গোটা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’ (নেডা)-র মোকাবিলায় এই তৎপরতা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের এই জোট নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন-মিজোরামে ভোটের ফল প্রকাশিত হবে না ৩ ডিসেম্বর, কী জানাল কমিশন
উল্লেখ্য, মণিপুরের সাম্প্রতিক গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় বিজেপির চূড়ান্ত নিষ্ক্রিয়তায় নেডার সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে সেখানকার শরিকদলগুলি। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির সহযোগী এমএনএফের প্রধান জোরামথাঙ্গা বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙেছেন। বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক মঞ্চে থাকতে রাজি হননি তিনি। এদিকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি রিপুন বরা, সাংসদ সুস্মিতা দেব এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তৃণমূলের নেতৃত্বে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে উত্তর-পূর্ব ছাড়া করতে লোকসভার আগে এই অবিজেপি জোট বড় ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।