সংবাদদাতা, বীরভূম : সদ্যসমাপ্ত বাণিজ্য সম্মেলন থেকে বীরভূমে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান হতে চলেছে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ হবে ১৮৫০ কোটি টাকা। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বাম সরকারের উদাসীনতায় লাভপুর বিধানসভার আহমেদপুরে ধ্বংসাবশেষে পরিণত হওয়া চিনিকলের ৫৩ একর জমির উপর যে শিল্প পার্কের ঘোষণা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সেই কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয় সেজন্য শনিবার সকালেই এলাকা পরিদর্শন করেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিখিল নিগম, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও শিল্প) সৌরভ আগরওয়াল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রশান্ত সাধু-সহ জেলা ও রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এদিন সেখানে রাজ্যের তরফে ব্যানার লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হয় শিল্প পার্কের বিষয়টি।
আরও পড়ুন-নয়া সাইট এসএসসি-র
এই বণিক সম্মেলনে ৮০০ শিল্পপতি অংশগ্রহণ করেন। লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, দ্রুত এই শিল্প পার্ক গড়ে তোলা হবে। এখানে বিভিন্ন রকম শিল্পের পরিকাঠামো তৈরি হবে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের সম্ভার থাকবে। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছিল এই ৫২ একর জায়গায় থাকা চিনির মিলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। যদি এই বিশাল জায়গাটিতে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজে লাগানো যায় তাহলে বীরভূমের আর্থিক মানোন্নয়ন ঘটবে। মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে সহকারে বিষয়টি বিবেচনা করে এখানে শিল্প পার্ক গড়ার অনুমতি দেন। সবরকম সরকারি নিয়ম মেনে অবশেষে শিল্প পার্ক গড়ে উঠতে চলেছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর। বীরভূমের জেলাশাসক ধবল জৈন জানান, বোলপুর ক্ষুদ্র বাজার ক্যাম্পাসে সোনাঝুরি হাটের আদলে ক্ষুদ্র শিল্পীদের হাট তৈরুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বীরভূমের টিকিরবেতায় ৯৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পিতল ও কাঁসার ক্লাস্টার তৈরির সেন্টার হয়েছে। ৭০০ শিল্পী উপকৃত হচ্ছেন। ইলামবাজারে ৫ কোটি ৯০ লক্ষ টাকায় পোশাক তৈরির হাব নির্মিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদ উৎকর্ষ বাংলার অধীনে এক হাজার শিল্পী উপকৃত হচ্ছেন। বোলপুর, মুরারই, রামপুরহাট এই তিন ব্লকে তিনটি হস্তচালিত তাঁত ক্লাস্টার সম্পূর্ণ হয়েছে। দেড় হাজার তাঁতশিল্পী উপকৃত হবেন। এছাড়াও ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৫৮৮টি আবেদনের ভিত্তিতে প্রায় ৯৭ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এই টাকা সরাসরি পৌঁছে যাবে ছোট্ট শিল্পোদ্যোগীদের কাছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও শিল্পীদের আর্থিক স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে যা ভবিষ্যতে রাজ্যের আর্থিক মানোন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

