সংবাদদাতা, কাটোয়া : রবিবার থেকে ধীর লয়ে জল নামতে শুরু করেছে কাটোয়া মহকুমার জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকে। তবে নামার মুখেও কেড়ে নিয়ে গেল একটি তরতাজা প্রাণ। আঙ্গারপুর গ্রামের খেতমজুর বানু দাস (৪২) জমা জল পেরিয়ে কাপড় মেলতে যাচ্ছিলেন। জলে পড়ে থাকা বিদ্যুৎবাহী তারের স্পর্শে মৃত্যু হল তাঁর। আঙ্গারপুর গ্রামে তিনদিন ধরে জল জমে থাকায় বেশ কয়েকটি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। শনিবার সন্ধ্যায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক মাঝির। নদিয়ার খয়েরডাঙার বাসিন্দা উত্তম রাজোয়ার (৫২) কাটোয়া-বল্লভপাড়া ফেরিঘাটে নৌকা চালাতেন। ফেরিঘাটেই মাথায় বাজ পড়ে।
আরও পড়ুন :বিজেপি মন্ত্রীর ছেলে পিষল বিক্ষোভরত কৃষকদের, মৃত ৪
অজয়ের জল ঢুকে মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামের বহু খামার ডুবে গিয়েছে। হাজারসাতেক মুরগির মৃত্যু হয়েছে। মৃত মুরগি দ্রুত না সরাতে পারলে দূষণ ছড়ানোর আশঙ্কা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকা। কেতুগ্রামের বিল্বেশ্বর, রসুই, তেওড়া ও খেয়াইবান্ধায় অজয়ের বাঁধ ভেঙে ওইসব গ্রামের ভেতরে জল বইছে। অজয়ের জল নামতে শুরু করলেও রবিবারও মঙ্গলকোটের বকুলিয়া, ইছাবটগ্রাম, পালিশগ্রাম, মাজিগ্রাম, মঙ্গলকোট, নতুনহাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল রয়েছে। পূর্বস্থলীর ২টি ব্লক ও কাটোয়া শহরেরও চারটি ওয়ার্ডে জল ঢুকেছে ভাগীরথীর। কাটোয়া শহরে তিনটি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। শনিবার বিকেলে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ একঝাঁক বিধায়ককে নিয়ে কাটোয়ার ভারতী ভবন হাইস্কুলের ত্রাণশিবিরটি ঘুরে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দুর্গতদের সবরকমের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। এলাকায় জল ঢুকে জেলার প্রায় ৩৩ হাজার মানুষ কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কৃষিজ ফসল, ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির হিসেব শুরু হয়েছে। কাটোয়ার বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘ডিভিসির হঠকারিতায় অকারণে বন্যাপরিস্থিতি তৈরি হল। প্রশাসন খুবই দক্ষতার সঙ্গে মাঠে নেমে কাজ করছে। আমাদের দলের জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের নেতা-কর্মীও দুর্গত মানুষের সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।’’