গেরুয়া রাজ্য মধ্যপ্রদেশের (MadhyaPradesh) রাজগড় জেলার তিনটি প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে। সন্তানদের অপরাধী হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে অভিভাবকরা পাঠাচ্ছেন গুলখেড়ি, কাদিয়া এবং হুলখেড়ি গ্রামে। ভোপাল থেকে ১১৭ কিলোমিটার দূরে এই তিনটি গ্রামে রীতিমতো স্কুল খুলে শেখানো হচ্ছে ছিনতাই, চুরি এবং ডাকাতি। এই প্রত্যন্ত তিনটি গ্রাম ‘অপরাধের নার্সারি’ হিসাবে কুখ্যাত। সবকিছু জেনেও নীরব বিজেপির পুলিশ। শুধু তাই নয়, এই গ্রামগুলিতে তাঁদেরকেও রীতিমত সাবধানে চলাফেরা করতে হয় বলেই খবর।
আরও পড়ুন-আলোকশিল্পী চলে গেলেন কিন্তু আলো নিভবে না
১২-১৩ বা এর থেকেও কম বয়সের শিশুদের অপরাধের প্রশিক্ষণ নিতে এই গ্রামগুলিতে পাঠান তাদের বাবা-মায়েরা। বিভিন্ন গ্যাং লিডারদের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, কে তাঁদের সন্তানদের প্রশিক্ষণ দেবে। এই শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা বেতন দিতে হয়। নাম লেখানোর পর, শিশুদের ভিড়ের মধ্যে ব্যাগ ছিনতাই করা, তাড়াতাড়ি দৌড়ানো, পকেটমারি, পুলিশকে এড়িয়ে যাওয়া বা ধরা পড়লে মারধর সহ্য করার মতো বেশ কয়েকটি অপরাধমূলক বিষয়ে দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এক বছর পর, গ্যাং লিডাররা প্রতিটি শিশুর বাবা-মাকে ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দেয়।
আরও পড়ুন-ভারতকে ‘জেগে ওঠার’ বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের
প্রসঙ্গত, ৮ অগস্ট, জয়পুরের হায়াত হোটেলে হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ীর ছেলের বিয়ের সময় এক নাবালক চোর ১.৫ কোটি টাকার গয়না এবং নগদ ১ লাখ টাকার একটি ব্যাগ চুরি করেছিল। বরের মায়ের হাত থেকে ওই ব্যাগটি ছিনতাই করে পালিয়েছিল সেই নাবালক চোর। চুরির পর দলবল নিয়ে সে কাদিয়া গ্রামে পালিয়ে যায়। সন্দেহ এড়াতে চুরির গয়না ফেলে দিয়ে কানওয়ার যাত্রায় মিশে যায় সে। কিন্তু, এত করেও শেষ রক্ষা হয় নি। নাবালক চোরকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার থেকেই সম্পূর্ণ বিষয়টি জানা যায়।
আরও পড়ুন-ফের নজরে উত্তরপ্রদেশ, ইউপি হাইওয়েতে নাবালিকা অপহরণ ও ধর্ষণ
মধ্য প্রদেশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জয়দীপ প্রসাদ জানান অপরাধীরা রাজগড়ের। এই অপরাধীদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যে, গয়নার মূল্য নির্ধারণ করতে তাদের কোন দোকানে যেতে হয় না, নিজেরাই পারে। গ্যাং লিডাররা ওই শিশুদের চুরি, জুয়া খেলা এবং মদ বিক্রির প্রশিক্ষণ দেয়। যারা বেশি দক্ষতার পরিচয় দেয়, তাদের আরও বড় অপরাধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এই এলাকায় প্রশাসন কোনরকম পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। এই গ্রামে পুলিশকে বিশাল বাহিনী নিয়ে যেতে হয়। মহিলারাও এই বিশাল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। বাইরের কাউকে দেখলেই তাঁরা বধির সেজে থাকেন। তিনি স্বীকার করে নেন রাজগড় জেলার এই গ্রামগুলিতে কোনও তদন্ত করা একপ্রকার অসম্ভব। এই অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত কমপক্ষে ২,০০০ জনেরও বেশি মানুষের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে বিভিন্ন থানায় ৮,০০০ টিরও বেশি মামলা রয়েছে তবে কোনমতেই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসছে না।