সংবাদদাতা, কাঁথি : শিয়রে পুরভোট। জমি দখলে রাখতে লড়াই করার বদলে আপাতত একের পর এক ঝড়ে বিপর্যস্ত জেলা বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হাত ধরে যেসব প্রাক্তন কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন, বছর না-ঘুরতেই তাঁদের অনেকের ঘরওয়াপসি হয়েছে। আরও অনেকে পদ্মশিবির ছেড়ে, নেত্রীর উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হওয়ার জন্য মুখিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘কে আপন, কে পর’, এই প্রশ্নেই জেরবার বিজেপি। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো যুক্ত হয়েছে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে নিয়ে অস্বস্তি। তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকের পদে বসাতেই আদি বিজেপি (BJP) নেতারা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা চললেও আদৌ ফল পাওয়া যাবে কি? প্রশ্ন ঘুরছে বিজেপির অন্দরে। কারণ, কাঁথি পুরসভায় শুরু হয়েছে জোড়া তদন্ত। সেই তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে কেউটেও বেরোতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সৌমেন্দু অধিকারী কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন হওয়া একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের তদন্ত শুরু করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে পুরসভার তৎকালীন দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দায়ের হয়েছে কাঁথি থানায়। অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ চৌহান এবং এক্সিকিউটিভ অফিসার সমীর দে-র বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কাঁথি পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পল্লব দত্ত। দিলীপ চৌহান এখনও পুরসভায় কর্মরত। তবে সমীর দে অবসর নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দেশের সুরক্ষাকে অবহেলা কেন্দ্রের, অভিযোগ তৃণমূল সাংসদ শান্তনুর
সৌমেন্দু-জমানার এই দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০২ বি এবং ৪৭৭ এ ধারায় আনুমানিক ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা রুজু করা হয়েছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে সৌমেন্দু অধিকারী যুক্ত কি না, স্বভাবতই সেই প্রশ্নে উত্তাল জেলা। সামগ্রিকতার নিরিখে ভোটে লড়ার চেয়েও আপাতত নিজেদের দল বাঁচানোর চ্যালেঞ্জই বড় হয়ে উঠেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের কাছে।