প্রতিবেদন : চাষিকে এক পয়সাও দিতে হয় না। প্রিমিয়ামের সবটাই বহন করে রাজ্য সরকার (TMC Government)। শস্যবিমায় চাষিদের ২,২৮৬ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দিয়ে নজির গড়ল নবান্ন! কেন্দ্র থেকে এক টাকাও সাহায্য না নিয়ে এত বড় শস্যবিমা প্রকল্প পূর্ব ভারত তো বটেই, গোটা দেশেই বিরল।
বাংলার নিজস্ব এই শস্যবিমা যোজনা এতটাই মানবিক ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ডিজাইন করা হয়েছে যে ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক সরকারও এই প্রকল্পকে ‘রেপ্লিকেট’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই ওড়িশার যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদমর্যাদার দুই আধিকারিক নবান্নে এসে কৃষি দফতরের সচিব ওঙ্কার সিং মিনা-সহ রাজ্যের একাধিক কৃষি আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন। হাওড়া জেলা ঘুরে কৃষি আধিকারিকের অফিসে গিয়ে বিমার খুঁটিনাটি বুঝেও আসেন।
আরও পড়ুন: কোচবিহারের চান্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের আবাসচিত্র এল প্রকাশ্যে
চাষের ক্ষতি হলে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা রয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে বাংলা শস্যবিমা যোজনার কোনও সম্পর্ক নেই। নবান্নের এক আধিকারিক জানালেন, বাংলার এই বিমা প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। কেন্দ্রের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে চাষিদের প্রিমিয়াম দিতে হয়। কিন্তু রাজ্যের প্রকল্পে এক পয়সাও দিতে হয় না। সবটাই আসে রাজ্যের কোষাগার থেকে। প্রিমিয়াম বাবদ বছরে প্রায় রাজ্যের গড়ে ১০০০-১২০০ কোটি টাকা খরচ। সবটাই দেয় রাজ্য।
২০১৯ সাল থেকে বাংলা শস্যবিমা যোজনা শুরু। খরিফ এবং রবি মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট আটটি মরশুম অতিবাহিত। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ২২৮৬ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের খরিফ মরশুমে ১৩ লক্ষের বেশি কৃষক ৪২৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। রবি মরশুমে ১১ লাখ ১৪ হাজার কৃষক পেয়েছেন ৪৩১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের খরিফ মরশুমে ৪.৭৭ লক্ষ কৃষক পেয়েছেন ১০৬.৩২ কোটি টাকা। রবি মরশুমে ৩০৯.৫৬ কোটির ক্ষতিপূরণ পায় ১.৭ কোটি কৃষক। ২০২১ সালের খরিফ মরশুমে ৪১০.৫৪ কোটির ক্ষতিপূরণ। ২০২১-২২ সালের রবি মরশুমে ৪২৫.৩৭ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ। বাইশের খরিফ মরশুমে ২.৩৭ লক্ষ কৃষক পেয়েছেন ২০৪ কোটির ক্ষতিপূরণ। চলতি আর্থিক বছরে রবি মরশুমের হিসাব এখনও শেষ হয়নি। সেটা যোগ হলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আড়াই হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এমনটাই জানালেন রাজ্যের এক কৃষি আধিকারিক।
শুধু শস্যবিমাই নয়, কৃষকদের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধা তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যার মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের (TMC Government) ৯১ লক্ষেরও বেশি কৃষক উপকৃত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রেও বছরে দু’বার, রবি ও খরিফ মরশুমের শুরুতে প্রকল্পের টাকা পান কৃষকরা।