সংবাদদাতা, ময়ূরেশ্বর : বীরভূমের ছোট্ট গ্রাম বীরচন্দ্রপুর। প্রাচীন নাম একচক্রা। রাঢ় দেশের রুক্ষ প্রকৃতির মাঝে শ্যামলিমায় মণ্ডিত এই গ্রামেই ৫৫১ বছর আগে পণ্ডিত মাতা পদ্মাবতীর গর্ভে জন্ম হয় শ্রীচৈতন্যদেবের অভিন্ন দেহ শ্রীশ্রী নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর। বৃহস্পতিবার তাঁর ৫৫১তম জন্মোৎসবে এই জন্মস্থান আশ্রম নিতাইবাড়িতে দেশবিদেশের ২৫ হাজার ভক্তের পাত পড়ল। মহাপ্রভুর আঁতুড়ঘরের উপর তৈরি সূতিকাগৃহ সাজানো হয় খেলনা, বেলুন, ফুলমালা দিয়ে। সকালে হয় মহাভিষেক।
আরও পড়ুন-চালু হবে কলকাতা-দিনহাটা রকেট বাস
জনাকীর্ণ নাটমন্দিরে নাম সংকীর্তন, ভক্তদের হরিধ্বনি-জয়ধ্বনির মধ্যে শুরু হয় জন্মলীলাকীর্তন। বেলা গড়াতেই শৃঙ্গারদর্শন দেন প্রভু। সামনে সাজানো অগণন পাতে অফুরান অভিষেক ভোগসামগ্রী। ছোট্ট গ্রামটিতে মেলার আবহ, অগণন মানুষের ঢলে গ্রাম্য পথে চলা দায়। বুধবার বিকেলে শ্রীশ্রীনামযজ্ঞের শুভ অধিবাসের পর দিন বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হয় ভুবনমঙ্গল নামযজ্ঞ। নিত্যানন্দের বংশানুক্রমিক বসতবাটি হাড়াই পণ্ডিত ভবনে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ভক্তরা উপস্থিত হয়েছেন তাঁকে প্রণাম জানাতে। নিতাইবাড়িতে ৫৫১তম জন্মোৎসবে পালিত হল মহাসমারোহে। অমৃত অভিষেক, লীলাকীর্তন, বস্ত্রদান, স্বাস্থ্যশিবির প্রভৃতি সেবামূলক কাজে অংশ নেন আশ্রম কর্তৃপক্ষ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অগনিত বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী ভক্ত কয়েকদিন ধরেই আসছেন বীরচন্দ্রপুরে। আশ্রম প্রাঙ্গণে পাশাপাশি বিদেশের পর্যটকরাও ভিড় করেছেন। সুদূর আমেরিকা থেকে আসা আহফেরড বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করে এখন হরিদাস দাস। তিনি বলেন, ‘প্রভু নিত্যানন্দের জন্মদিনে জন্মস্থানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’ প্রবাসী ভারতীয় সনাতন ছাবড়া জানান, ‘আশ্রম কর্তৃপক্ষ ২৫ হাজার মানুষের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করে বহু আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রভুর জন্মদিন উপলক্ষে বস্ত্রদান, নিখরচায় স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন।’ মঠের অধ্যক্ষ নরোত্তম দাস বলেন, ‘বিশ্বে প্রভু নিত্যানন্দ জন্মভূমি একটি অবিকৃত স্থান। সেই জন্মস্থানে তাঁর জন্ম মহোৎসবে সবার সেবায় নিয়োজিত হয়েছি আমরা।’