প্রতিবেদন : শিক্ষাক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে (Fake Doctors- Madhya Pradesh)। এর আগেও ব্যাপম কেলেঙ্কারি সহ এই রাজ্যের নানা দুর্নীতির ঘটনা সামনে এসেছে। আর এবার সামনে এল ডাক্তারি পাশ না করেও ডাক্তারির ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে ডাক্তার হয়ে বসার চাঞ্চল্যকর কাণ্ড। জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের এক মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন ২৭৮ জন ডাক্তার হওয়ার শংসাপত্র পেয়েছেন যাঁরা আদৌ কখনও চিকিৎসাবিদ্যার পাঠটুকুও নেননি, পরীক্ষা দেওয়া তো দূরের কথা। আর যাঁরা সত্যিই খেটেখুটে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁরা অনেকেই ডাক্তারি পরীক্ষার শংসাপত্র হাতে পাননি।
বেনজির এই দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসতেই তুমুল শোরগোল বিজেপি শাসিত রাজ্যে (Fake Doctors- Madhya Pradesh)। অভিযোগের আঙুল উঠেছে মধ্যপ্রদেশের মেডিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৯৫৪টি সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং, মেডিক্যাল এবং প্যারামেডিক্যাল কলেজ আছে। অনেকেই মনে করছেন, পুরো ঘটনার পিছনে রয়েছে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন। যারা পরীক্ষা দেয়নি টাকার বিনিময়ে তাদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এভাবেই ভুয়ো ডাক্তার তৈরির কারখানা হয়ে উঠেছে বিজেপি শাসিত মধ্যেপ্রদেশ।
আরও পড়ুন-রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে সরাতে ভোটাভুটি কেরল বিধানসভায়
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৬ অগাস্ট মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে কয়েকজন ডাক্তারি পড়ুয়া একটি মামলা দায়ের করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের মেডিক্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ। এখান থেকে আদৌ ডাক্তারি পড়ুয়া নন এমন বিপুল সংখ্যক মানুষকে ভুয়ো শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ করেন ওই ছাত্ররা। অত্যন্ত গুরুতর এই অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন এক ডিভিশন বেঞ্চ পাঁচ জন বিচারপতিকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ওই কমিটি আবেদনকারীদের বক্তব্যের সত্যতা খতিয়ে দেখে চলতি বছরে জুলাই মাসে রিপোর্ট জমা দেয়। আদালতে জমা পড়া সেই রিপোর্ট থেকেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে। একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, তাদের হাতে এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট রয়েছে। ওই রিপোর্টে ২৭৮ জন ভুয়ো চিকিৎসকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যারা কখনও ডাক্তারি পড়েননি। ওই রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসী কোটায় ১৩ জন পড়ুয়ার মধ্যে ১১ জন পাশ করতে পারেননি। কিন্তু পরে বিশেষ পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে তাঁরা পাশ করেন। অনেকেই মনে করছেন, এসব ঘটনার পিছনে রয়েছে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন। টাকা নিয়ে ফেল করা ছাত্রদেরও পাশ করানো হয়েছে।