প্রতিবেদন: দশেরার আবহে বিমানযাত্রায় চরম আতঙ্ক। সোমবার ভোররাত থেকে বোমাতঙ্কে মুম্বই থেকে বিমান চলাচলে অস্থিরতা তৈরি হয়। প্রথমে নিউইয়র্কগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি উড়ান মুম্বই থেকে রওনা হওয়ার পরপরই নয়াদিল্লিতে জরুরি অবতরণ করানো হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরে মুম্বইয়েই আরও দুটি ইন্ডিগোর উড়ানে বোমা থাকার হুমকি পেয়ে বিমানযাত্রা সাময়িক স্থগিত রাখা হয়। ওই উড়ান দুটি মুম্বই থেকে জেড্ডা ও মাসকটের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল। সবমিলিয়ে দেশের অর্থনৈতিক নগরীতে পরপর বিমানে বোমাতঙ্ক যাত্রীদের মধ্যেও চরম উদ্বেগ তৈরি করে।
আরও পড়ুন-কাশ্মীরে নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা খর্ব করার ছক বিজেপির, সরব তৃণমূল
সোমবার ভোররাতে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান এআই ১১৯ মুম্বই থেকে নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে একটি নির্দিষ্ট নিরাপত্তা সতর্কতার কারণে মাঝ-আকাশ থেকে দিল্লিতে অবতরণ করানো হয়। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডিসিপি উষা রঙ্গনানি বলেছেন, মুম্বই থেকে নিউইয়র্কের দিকে যাত্রা করা একটি এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানকে বোমা বিস্ফোরণের হুমকির কারণে উদ্ভূত নিরাপত্তা উদ্বেগের জন্য দিল্লির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বিমানের যাত্রী এবং ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত স্ট্যান্ডার্ড নিরাপত্তা প্রোটোকল কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এর একটি ট্যুইট থেকে হুমকিটি পাওয়া যায়। পরে তল্লাশির সময় সন্দেহজনক কিছু না মিললেও ঘটনা ঘিরে অস্থিরতা তৈরি হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিমানের ২৩৯ জন যাত্রী ও ১৯ জন ক্রুকে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয় এবং বিমানবন্দরের টার্মিনালে রাখা হয়। নিরাপত্তা সংক্রান্ত শর্তাবলি পূরণের পর সবাইকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার ভোরে বিমানটি নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হবে। অন্যদিকে, মুম্বইতে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রোটোকল অনুসারে, বিমানকে একটি রানওয়ের একটি বিচ্ছিন্ন অংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করে, বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়েছিল। কোনও বিমানেই কিছু পাওয়া যায়নি। তল্লাশি শেষে দুটি বিমানই গন্তব্যে উড়ে যায়।
আরও পড়ুন-বর্ধমানের কার্নিভালে দুই বলিউড অভিনেতার মুখে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি
সম্প্রতি ভারতের একাধিক বিমানবন্দর বোমা হুমকির লক্ষ্যবস্তু হয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলি পরে ভাঁওতা বলে প্রমাণিত হয়েছে। গত ৫ অক্টোবর, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে অবস্থিত দেবী অহল্যাবাই হোলকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ একটি বোমার হুমকির ই-মেইল পেয়েছিলেন, যার ভিত্তিতে পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। মেইল প্রেরক দেশের অন্যান্য বিমানবন্দর উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিল। একইদিনে ভাদোদরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ই-মেইলের মাধ্যমে একটি বোমার হুমকি পান। তারও আগে, ৬ সেপ্টেম্বর, মুম্বই থেকে ফ্রাঙ্কফুর্টের উদ্দেশে উড়ে যাওয়া একটি ভিস্তারা বিমান তুরস্কের পূর্বাঞ্চলের এরজুরাম বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়েছিল যখন একটি বার্তায় দাবি করা হয়েছিল যে বিমানটির একটি শৌচাগারে বোমা রাখা হয়েছে। পরে হুমকিটি ভাঁওতা প্রমাণিত হলেও নিরাপত্তার খাতিরে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে এরজুরাম বিমানবন্দরে আটকে থাকা যাত্রীদের জন্য চরম আতঙ্কের অভিজ্ঞতা ছিল।