প্রতিবেদন : পঞ্চায়েত ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে মুখ পুড়ল বিরোধীদের। কলকাতা হাইকোর্ট যে ৩২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি খারিজ করে দিয়েছিল, তা সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিরাট ধাক্কা খেল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও শিক্ষকদের একাংশের করা মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন-আজ পঞ্চায়েত ভোট, উন্নয়নই প্রধান অস্ত্র তৃণমূলের
কোর্টের নির্দেশে মামলাটির শুনানি এবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে হবে। সুপ্রিম কোর্ট অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খারিজ করতে গিয়ে বলেছে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ শিক্ষক বা তাঁদের প্রতিনিধিদের বক্তব্য না শুনেই রায় দিয়েছেন। পরবর্তী কালে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও এই মামলায় যে রায় দিয়েছে তাও গ্রহণযোগ্য নয়। তাই চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ ও অন্যান্য রায় স্থগিতের পর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলার শুনানি দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এবার মামলাগুলি শুনবেন বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন-এজেন্টরা যা করবেন
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানার পরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে যে ৩২ হাজারের চাকরি চলে গিয়েছিল, তাদের নিয়োগে কিন্তু কোনও অস্বচ্ছতা ছিল না। সব নিয়ম মেনেই পর্ষদ তাদের নিয়োগ করেছিল। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদ এবং রাজ্য সরকারের কাজকে মান্যতা দিল। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায়ের হাল উচ্চ আদালতে কী হচ্ছে তা সকলে দেখছেন। এরপর তিনি যদি বিকাশবাবুর পায়ের কাছে বসে শেখা রায় দেন, তাহলে আবার উচ্চ আদালতে ধাক্কা খেতে হবে।
আরও পড়ুন-রাজ্যপালের ভাষণ! লঙ্ঘিত নির্বাচনবিধি
ব্যক্তিগত রাজনীতি-ভাবনার জেরে তৃণমূল কংগ্রেসকে দোষী করতে গিয়ে তারা নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার ক্ষতি করে দিচ্ছেন। রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের প্রতিক্রিয়া, বিচারব্যবস্থার রাজনীতিকরণের প্রবণতা দেখে এবং বিচারপতিদের একাংশের রাজনৈতিক নেতাদের মতো বক্তৃতা শুনে হতাশা জাগছিল। মনে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছিল, বিচারব্যবস্থা আদৌ নিরপেক্ষ আছে তো? শুক্রবারের সুপ্রিম রায় বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা অনেকটা হলেও আবার ফিরিয়ে আনল। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে নিঃসন্দেহে হাইকোর্টের রায়কে প্রশ্ন চিহ্নের সামনে দাঁড় করাল। পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের পরিবার অন্যায় নির্দেশ থেকে মুক্তি পেলেন।