প্রতিবেদন : বিধানসভায় (Assembly) ফের চরম অসভ্যতা বিজেপির। শালীনতার চরম সীমা লঙ্ঘন গদ্দারের। দলবল নিয়ে বিধানসভা অধিবেশনে গোলমাল পাকিয়ে অধিবেশনের কাজে বাধা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বিধানসভার মান-মর্যাদা ধুলোয় মিশিয়ে স্পিকারের চেয়ারের দিকের আঙুল উঁচিয়ে তেড়ে গিয়ে তাঁর মুখে ছুঁড়ে দিলেন কাগজ। তবে এবার শাস্তিও মিলেছে হাতেনাতে। গদ্দার-সহ বিজেপির চার বিধায়ককে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরস্বতী পুজো সংক্রান্ত একটি বিষয়ে বিধানসভায় আনা বিজেপির মুলতুবি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ওই প্রস্তাব পাঠের অনুমতি দিলেও আলোচনার দাবি মানেননি। এর পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি সদস্যরা সভায় ওয়েলে নেমে কাগজপত্র ছিঁড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এ-সময়ই স্পিকারের দিকে আঙুল উঁচিয়ে তেড়ে যেতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতাকে। হাতে থাকা কাগজপত্র ছিঁড়ে স্পিকারের আসনের দিকে ছুঁড়ে দিতেও দেখা যায়। অধ্যক্ষ এ-সময় বিরোধী দলনেতার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে ওয়াক আউট করে বিজেপি। অধিবেশন কক্ষে এই ধরনের কুরুচিকর আচরণ নিয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনি বিরোধী দলনেতা। এমন আচরণ করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। কিন্তু তাতেও স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি তোলেন তৃণমূল বিধায়কেরা। বিরোধী দলনেতা-সহ কয়েকজন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে বিধানসভার মর্যাদা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তাদের শাস্তির দাবিতে সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ একটি প্রস্তাব নিয়ে এলে বিরোধীশূন্য বিধানসভায় সেটি ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায়। গৃহীত ওই প্রস্তাব অনুযায়ী অধ্যক্ষ শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল ,বিশ্বনাথ কারক এবং বঙ্কিম ঘোষকে পরবর্তী ৩০ দিন অথবা চলতি অধিবেশনের মেয়াদ পর্যন্ত সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন। বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করে অধ্যক্ষ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করেন, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যেভাবে স্পিকারের দিকে তেড়ে গিয়ে কাগজ ছুঁড়ে মারা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বলা বাহুল্য, এই নিয়ে ৪ বার বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা গদ্দার অধিকারী।
আরও পড়ুন- মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে পৌঁছে দিলেন চেয়ারম্যান
এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, দুটো প্রেক্ষিত সম্পন্ন আলাদা লোকসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে যেভাবে সিপিএমের সংসদরা অপমান করতেন উত্ত্যক্ত করতেন এবং তাকে বলতে দেওয়া হতো না বাংলার স্বার্থে সরব হতে দেওয়া হতো না সেটা একটা জিনিস আর আজকের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দেশের অন্যতম। যেখানে মোট সময়ের ৫০ শতাংশ বিরোধীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ কথা যদি সময়ে বলতে পারে শাসক দল তাহলে ৫০ শতাংশ কথা বলার অধিকার আছে বিরোধীদলের। তারা যদি কথা বলতে না চেয়ে বিশৃঙ্খলা করে সস্তা প্রচারের দিকে নজর দেয় তাহলে স্পিকারকে কিছু না কিছু ব্যবস্থা নিতেই হবে।
সিপিএম জমানায় বিধানসভায় বিরোধীদের কোন জায়গা ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর বিধানসভায় ৫০ শতাংশ জায়গা বিরোধীদের দিয়েছে।