পরিকাঠামোর উন্নয়নে নতুন করে বরাদ্দ ৪০ কোটি টাকা, ঢেলে সাজছে কাঁথির পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দর

২০২১ সালে ইয়স ঘূর্ণিঝড়ে এই বন্দরের পরিকাঠামোর যথেষ্ট ক্ষতি হয়। জেটির কাছে রসুলপুরে নদীর পাড় অনেকটাই ভেঙে যায়।

Must read

সংবাদদাতা, কাঁথি : এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্যবন্দর কাঁথির পেটুয়াঘাট দেশপ্রাণ ব্লকের মৎস্যবন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে রাজ্য মৎস্য দফতর ও পশ্চিমবঙ্গ মৎস্য উন্নয়ন নিগমের তত্ত্বাবধানে। বন্দরের সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এক বছরের মধ্যে বন্দরটি নতুনভাবে সেজে উঠবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই কাজ শুরু হয়েছিল। বন্দরের স্পেশাল অফিসার বিশ্বেন্দু মার্জিত বলেন, ধাপে ধাপে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। ২০২১ সালে ইয়স ঘূর্ণিঝড়ে এই বন্দরের পরিকাঠামোর যথেষ্ট ক্ষতি হয়। জেটির কাছে রসুলপুরে নদীর পাড় অনেকটাই ভেঙে যায়। বরফকল ও হিমঘরের অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই কারণেই পরিকাঠামো উন্নয়নে অনেকদিন আগেই প্রকল্প তৈরি করে জমা দেন কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পর কাজ শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন-ইডেনে ভারত-ইংল্যান্ড টি-২০ ২৫ জানুয়ারি

বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেটুয়াঘাট বন্দর প্রাঙ্গণ থেকে পেটুয়ামোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার বেহাল রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। নদীর পাড় বাঁধানোর কাজ হয়েছে। ২০২০ সালে উমপুন ঘূর্ণিঝড়ে ছাউনি উড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিলামকেন্দ্রটি। ফলে নিলাম প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছিল। এখন সেটির সংস্কারকাজ চলছে। বন্দরের ডরমিটরি-সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলি সংস্কারের অভাবে বেহাল থাকায় সেগুলিরও সংস্কারে হাত দেওয়া হয়েছে। জলাধার-সহ পুরো জলপ্রকল্পটি বেহাল হয়ে পড়েছিল। সেটিরও সংস্কার চলছে। এছাড়া বন্দরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজছে। আরও জানা গিয়েছে, আগামী দিনে নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে বন্দর ক্যাম্পাস। খরচ বাঁচাতে চালু হবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এছাড়া আরও কিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। উল্লেখ্য, রসুলপুর নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের প্রতাপপুর মৌজায় এই বন্দর গড়ে ওঠে ২০১০ সালে। কেন্দ্র ও রাজ্যের উদ্যোগে ৬০ কোটি টাকায় ১১ হেক্টর জায়গার উপর বন্দর তৈরির কাজ শুরু হয়। বর্তমানে এখানে তিনটি জেটি আছে। পাঁচশোর বেশি ট্রলার ও লঞ্চ নোঙর করে। রয়েছে মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। অনুসারী হিসেবে সঙ্গে বরফকল, হিমঘর ও নিলামকেন্দ্র ছাড়াও রয়েছে জালবুনন কেন্দ্র, পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প, ডরমিটরি প্রভৃতি। মৎস্যশিকার-সহ নানা কাজে বন্দরের উপর বহু মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল। বন্দরটি গড়ে ওঠার পর থেকে পেটুয়াঘাট-সহ স্থানীয় এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির যে বদল ঘটেছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। নতুন করে যাবতীয় পরিকাঠামো ঢেলে সাজায় বিষয়টি নিঃসন্দেহে আরও জোরালো হবে।

Latest article