সর্পাঘাতে একই ব্যক্তির মৃত্যু ৩০ বার! ক্ষতিপূরণ পেতে ছক

প্রতিবেদন: গেরুয়া দুর্নীতির পর্দাফাঁস মধ্যপ্রদেশে। একটা জীবনে কতবার আসে মৃত্যু? অবিশ্বাস্য হলেও মধ্যপ্রদেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের দৌলতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হল ৩০ বার। ঠিক সেইরকমই একজন মহিলার মৃত্যু হল ২৯ বার। অন্তত খাতায়-কলমে দেখানো হল সেরকমই। মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ বাবদ কয়েক কোটি টাকা চলে গেল সরকারি কেরানির পকেটে। ফাঁস হল মধ্যপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকারের বড়সড় দুর্নীতির। স্পষ্ট হল কতটা নিচে নেমেছে বিজেপির প্রশাসন।
দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দু মধ্যপ্রদেশের সিওনি জেলা। রমেশ নামে এক ব্যক্তিকে এখানে ৩০ বার মৃত (snake-bite scam) দেখানো হয়েছে। দ্বারকা বাই নামে এক মহিলাকে ২৯ বার এবং রাম কুমার নামে আরেক ব্যক্তিকে ২৮ বার মৃত দেখানো হয়েছে। সবই সাপে কেটে মৃত্যু (snake-bite scam)। অর্থাৎ রাজ্যের তরফে ক্ষতিপূরণও সর্বোচ্চ। চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পেলেন তাঁদের নিকটজনেরা, প্রত্যেকবার ‘মৃত্যু’র পর। এরকম ২৮০ জনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ক্ষতিপূরণের ১১.২৬ কোটি টাকা।
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, যিনি এখন কেন্দ্রের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী, তাঁর জমানারই এই বড়সড় দুর্নীতির তথ্য এবার সামনে এল। সিওনি জেলার তৃতীয় শ্রেণির সহকারী শচীন দহায়ক এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড, বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করা হয়েছে। তার আত্মীয়-স্বজনের ৪৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গিয়েছে ক্ষতিপূরণের সব টাকা। দ্বারকা বাই নামে এক মহিলার সাপে কেটে মৃত্যু দেখানো হয়েছে ২৯ বার। প্রতিবার ৪ লাখ টাকা করে তাঁর নামে সরকারি কোষাগার থেকে বেরিয়েছে। ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলে অভিযোগ।
অবাক কাণ্ড! সিওনির অভিযুক্ত কেরানির কারচুপিতে ২৮০ জনকে সাপের কামড়ে মৃত দেখানো হয়েছে। এবং সেই মতো আদায় হয়েছে ক্ষতিপূরণের টাকা। পুলিশি তদন্তের ভিত্তিতে শচীন দহায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও এরপরে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, এত কোটি টাকার দুর্নীতিতে কীভাবে শুধুমাত্র একজন ক্লার্ক থাকতে পারেন? নেপথ্যে নিশ্চয়ই রয়েছে আরও বড় চক্র, আরও বড় মাথা।

আরও পড়ুন-চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই হাতির হানায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ