সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর : শুক্রবার সন্ধ্যায় সাগরদিঘি থানার বাহালনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের গায়ে তরল দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন লাগানোর ঘটনায় শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও সাতজন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কুবরা বিবি (৬২), তাহিরা বিবি (২৮), তৌফিক শেখ (৪), মর্জিম শেখ (৭০) এবং রমজান শেখ (৪০)। কয়েক বছর আগে কড়েয়া-জামিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান শেখের সঙ্গে বাহালনগর গ্রামের বাসিন্দা কোহিনুর বিবির বিয়ে হয়। পেশায় টোটো এবং মোটরভ্যান চালক রমজানের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বছর দুয়েক আগে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন কোহিনুর। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে দুই সন্তানের বাবা রমজান নিজের শ্যালক তামিজুদ্দিন শেখের স্ত্রী তাহিরা বিবিকে বিয়ে করার জন্য শ্বশুরবাড়িতে এসে প্রায়শই অশান্তি করত। তাহিরার স্বামী তামিজউদ্দিন শেখ পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বর্তমানে কেরলে থাকেন। স্বামী বাড়িতে না থাকার জন্য রমজান তাহিরাকে বিয়ে করার জন্য পরিবারের উপর চাপ দিচ্ছিল। রমজানের এই অন্যায় দাবির বিচার করার জন্য ওই গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসে এবং রমজানকে বাহালনগর ঢুকতে বারণ করা হয়। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোক এবং গ্রামের মোড়লদের কথা না শুনে সুযোগ পেলেই শ্বশুরবাড়িতে এসে রমজান অশান্তি করত। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতেও শ্বশুরবাড়িতে এসে রমজান তাহিরকে বিয়ে করা নিয়ে অশান্তি শুরু করে। সেই সময় হঠাৎই সে নিজের সঙ্গে থাকা তরল দাহ্য পদার্থ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন লাগার পর বিস্ফোরণের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা বাঁচাতে এলে তাঁদের মধ্যেও কয়েকজন আহত হন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওলিউল শেখ (১৮), কিরণ শেখ (২৭), নুর মহম্মদ (৮), ফোলো বিবি (৪৫), রাজু ফুলমালি (২৪) এবং আরও দুজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সাগরদিঘি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে ভর্তি থাকা দুজনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।