প্রতিবেদন : আড়াই বছর ধরে বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা (100 Days Work) আটকে রেখেছে মোদি সরকার। বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করছে। এবার সেই বঞ্চনার প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন বাংলার একশো দিনের কাজের শ্রমিকরা। ১০০ দিনের কাজের টাকা আনতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন প্রায় ৫০০০ হাজার শ্রমিক। সেই তাঁরা দিয়েছেন এক টাকা করে। জবাব চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। জবাব চেয়েছেন, এভাবে আর কতদিন টাকা আটকে রাখবেন, আর কতদিন কাজকর্ম বন্ধ করে রাখবেন প্রধানমন্ত্রী? জবাব দিন জনতাকে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলার মানুষের সেই আবেদন তুলে ধরে নিশানা করা হল কেন্দ্রের মোদি সরকারকে।
তৃণমূলের স্পষ্ট কথা, ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন মানুষ। বাংলার বঞ্চনার প্রতিবাদে তাঁরা চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। এর পরেও লজ্জা হয় না প্রধানমন্ত্রীর! আড়াই বছর ধরে ১০০ দিনের (100 Days Work) কাজের টাকা আটকে রেখে বাংলাকে বঞ্চিত করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ পর্যন্ত করেছেন। নিজে রাজ্যের ভাঁড়ার থেকে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দিয়েছেন। তারপরও কেন্দ্র বকেয়া মেটায়নি। বাংলার শ্রমিকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কল্যাণে বকেয়া টাকা পেলেও বন্ধ হয়ে রয়েছে কাজ। তাই এবার প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন- টেকনিশিয়ানদের স্বার্থে প্রস্তাব ফেডারেশনের
শ্রমিকরা বাংলায় একশো দিনের কাজ অবিলম্বে শুরু করার দাবি জানান। অভিনব প্রতিবাদে তাঁরা কেন্দ্রে প্রত্যেকে এক টাকা করে দান করেছেন। স্পষ্টতই তহবিলের ব্যবস্থা করার জন্য তাঁদের এই প্রতিবাদ। আর ৫০০০ শ্রমিকের সেই প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পোস্টকার্ডে লেখা চিঠিতে। চিঠিতে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, কেন্দ্র যদি বাংলার জন্য এনআরইজিএ বাজেট প্রকাশ করতে না পারে, আমরা, শ্রমিকরা নিজেরাই অর্থ সংগ্রহ করব। এনআরইজিএ সংগ্রাম মোর্চার পক্ষ থেকে শ্রমিকরা মোদিকে এই চিঠি লেখেন।
২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে বাংলায় একশো দিনের বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২২-’২৩ আর্থিক বছর শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলায় এই প্রকল্পের অধীনে কোনও কাজ হয়নি। মেটানো হয়নি বকেয়াও। বাংলাকে বঞ্চিত রেখে অন্যান্য রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ চালু রাখা হয়েছে। তাই বাংলার প্রতিবাদ। অন্ন সুরক্ষা অধিকার অভিযানের সঙ্গে যুক্ত গুজরাটের ২৫০০ কর্মীও পোস্টকার্ড পাঠিয়েছেন, বিহারের জন জাগরণ শক্তি সংগঠন কর্মীরাও শামিল মোদি সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে।
বিগত এক বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একশো দিনের কাজের বকেয়া থেকে শুরু করে আবাস যোজনা, গ্রামীণ সড়ক যোজনা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হন। একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলন করেন। রাজ্য ও কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে দু-দফা আলোচনাও হয়। কিন্তু কোনও অগ্রগতি হয়নি। এবার প্রতিবাদী শ্রমিকরা।