প্রতিবেদন: বয়স বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নানা রোগের সমস্যা। প্রাত্যহিক সেই যন্ত্রণা অসহনীয় মনে হয়েছিল তাঁদের। তা থেকে মুক্তি পেতে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করলেন নেদারল্যান্ডের এক প্রবীণ দম্পতি। দীর্ঘ ৫০ বছর একসঙ্গে থাকলেও বয়সের পাশাপাশি যাবতীয় রোগভোগ গ্রাস করেছিল দম্পতিকে। তাই শেষমেশ তাঁরা দু’জনেই জীবন আর বয়ে নিয়ে যেতে চাননি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত মাসের শুরুতেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নেন। আর তাঁদের এই কাজে সাহায্য করেন দুই চিকিৎসক। স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য প্রাণনাশী ওষুধ দেওয়া হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও পুরসভা একসঙ্গে অভিযান, বর্ধমানে শুরু দখলদারি হটানোর কাজ
ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডে স্বেচ্ছামৃত্যু আইনগতভাবে বৈধ পন্থা। তবে তা বিরলও বটে। তা সত্ত্বেও সেদেশের বহু মানুষ এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু আচমকা কেন এমন পথ বেছে নিলেন সত্তরোর্ধ্ব জ্যান এবং ইলস দম্পতি? একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মৃত্যুর ৭২ ঘণ্টা আগেও তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেখানেই উঠে আসে তাঁদের জীবনের জানা-অজানা কাহিনি। দম্পতি জানিয়েছিলেন, দীর্ঘ পাঁচ দশক তাঁরা দু’জন একসঙ্গে ছিলেন। তবে জীবনের বেশিরভাগ সময় তাঁরা কাটিয়েছেন নৌকায় করে। জীবনের শেষপর্বে এসে একটি ভ্যানে থাকতেন তাঁরা। কারণ নিজেদের বাড়িতে থাকতে মন চাইত না। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, যেহেতু নৌকায় থাকতেন তাঁরা, নিজেদের জীবন অতিবাহিত করতে সেই নৌকা নিয়েই পরিবহণের ব্যবসায়ও নেমেছিলেন ইলসের স্বামী জ্যান। জ্যান জানিয়েছিলেন, একসময় ভারী কাজ করতে করতে তাঁর পিঠে যন্ত্রণা শুরু হয়। ব্যথার সৃষ্টি হয়। তা বাড়তে বাড়তে ক্রমে কর্মহীন হয়ে পড়েন জ্যান।
আরও পড়ুন-কোভিডকাল অতীত স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় প্রত্যাহার
পাশাপাশি বয়সের ভারেও জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পরে ২০০৩ সালে জ্যান পিঠের অস্ত্রোপচার করলেও সুরাহা হয়নি। ক্রমাগত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেন। এখানেই শেষ নয়। জ্যান আরও জানিয়েছিলেন, তাঁর শারীরিক অসুস্থতা চলাকালীন আচমকাই স্ত্রী ইলসের স্মৃতিভ্রমের সমস্যা দেখা যায়। সেখান থেকে ভাল হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। এরপর নিজেদের ছেলেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জুন মাসেই মৃত্যুবরণ করেন নেদারল্যান্ডের দম্পতি।