প্রতিবেদন : রাজ্যের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে টেলিমেডিসিন ভিত্তিক ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ (swasthyaingit) প্রকল্প। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলার ১০,০০০-এরও বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চালু রয়েছে এই পরিষেবা। গত এক বছরে টেলিমেডিসিন পরামর্শের হার প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এখনও পর্যন্ত ৬ কোটি মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এই সাফল্যের কথা গর্বের সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও এখন তাঁদের নিকটবর্তী কেন্দ্র থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ পাচ্ছেন টেলিমেডিসিন প্রথায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালের লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। ২০২১ সালে সেই প্রকল্প শুরুর পর প্রভূত সাফল্য এসেছে। এই সাফল্যকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ (swasthyaingit) আমাদের স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার একটি গর্বের বিষয়। এই উদ্যোগ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে বিশেষ চিকিৎসা পৌঁছে দিচ্ছে। এটি ভারতের অন্যান্য রাজ্যের জন্যও একটি মডেল হতে পারে। টেলি মেডিসিন পরিষেবায় গোটা দেশে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের অনন্য টেলি মেডিসিন পরিষেবা ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে, যেখানে ২০২১ সালের অগাস্ট মাসে শুরু হওয়ার পর থেকে ৬ কোটি মানুষকে টেলি কনসাল্টেশন দিয়েছে।
আরও পড়ুন-তেলেঙ্গানায় ওষুধ কোম্পানিতে বিস্ফোরণে রাজ্যের দুই নিখোঁজ
সেই সঙ্গে তিনি জানান, আজ এই পরিষেবা ১০ হাজারের বেশি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকাতেও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে সক্ষম। এমনকী এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকাতে বিশেষ স্বাস্থ্য পরিষেবা— যেমন নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, অনকোলজি, পেডিয়াট্রিক্সের মতো চিকিৎসাকে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। ডক্টর্স ডে-তে টেলি মেডিসিন পরিষেবার সাফল্যেও চিকিৎসকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, এই মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে এই টিমের চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিক্যাল কর্মী-সহ এই অনন্য উদ্যোগকে সফল করে তোলার জন্য যত কর্মী যুক্ত, তাঁদের সকলকে অভিনন্দন।
কোভিড অতিমারির সময় শুরু হয় এই প্রকল্প। উত্তর দিনাজপুর, পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ি বা মালদহের মতো জেলাতেও এই পরিষেবার সুফল মিলছে। প্রতিটি কেন্দ্রে রয়েছে উচ্চগতির ইন্টারনেট, ভিডিও কলিং ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী। গ্রামবাংলার বহু নারী, যারা আগে শহরে চিকিৎসা করাতে দ্বিধাবোধ করতেন, এখন তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে পরামর্শ নিতে পারছেন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই পরিষেবাকে আরও সম্প্রসারিত করা হবে। বাড়ানো হবে কেন্দ্রের সংখ্যা, যুক্ত হবে নতুন বিভাগ। প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদের সংযুক্তিতে এই পরিষেবা ইতিমধ্যেই চিকিৎসা ব্যয় হ্রাস ও চিকিৎসার প্রাপ্তি— দুটিকেই সহজ করেছে। ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’-এর এই সাফল্য বাংলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে ডিজিটাল যুগে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।