সংবাদদাতা, হুগলি: সম্পন্ন হল ঐতিহাসিক মাহেশের ৬২৯ বছরের প্রাচীন প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার স্নানযাত্রা উৎসব। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই মাহেশের মন্দিরচত্বর ছিল ভক্তদের ভিড়ে জমজমাট। এই দিন ভোর সাতটার সময় জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রাকে নিয়ে আসা হয় মন্দির সংলগ্ন স্নানপিড়ি ময়দানের স্নান মন্দিরে। বিগ্রহদের অবকাশ বেশে সাজিয়ে শুরু হয় বিশেষ পূজা।
আরও পড়ুন-প্রযুক্তিগত সমস্যা, যাত্রা পিছোল শুভাংশুদের
জগন্নাথদেব ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান, এবারে স্নানযাত্রা উৎসবে বিশেষ আকর্ষণ অভিষেক উৎসব। সকাল সাড়ে দশটায় প্রভুকে বিভিন্ন নদ-নদীর পবিত্র জল, সুগন্ধি চন্দন ছাড়াও পঞ্চগব্য এবং মহার্ঘ্য দ্রব্য দিয়ে স্নান করানো হয়। তিন বিগ্রহকে অনিন্দ্যসুন্দর পুষ্পবেশে সজ্জিত করা হয়। প্রভু উপস্থিত হাজার হাজার ভক্তদের দর্শন দেন। তিথি মেনে বেলা বারোটা দশ মিনিটে ২৮ ঘড়া গঙ্গাজল এবং দেড় মন দুধ দিয়ে স্নান করানো হয়। সাজানো হয় তিন বিগ্রহকে গজবেশে। সন্ধ্যা পর্যন্ত স্নান মন্দিরেই প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং মা সুভদ্রা অবস্থান করেন। সেইখানেই বিশেষ পুজোপাঠ-সহ প্রভুকে নিবেদন করা হয় বাল্যভোগ, অন্নভোগ। সন্ধ্যারতিও করা হয়। শ্রীরামপুর মাহেশের ৬২৯ বছরের প্রাচীন প্রভুর স্নানযাত্রা উৎসব যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার ভক্তের প্রাণে আলাদা স্থান করে নিয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ন’টায় প্রভুকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মূল মন্দিরে, বন্ধ হয়ে যায় মন্দিরের দরজা। এই সময় মন্দিরচত্বরে কোনও কোলাহল হয় না, এরপরই প্রভুর জ্বর আসে, সুদূর আরামবাগ থেকে বৈদ্য এসে তাঁর চিকিৎসা করবেন, প্রভুকে পাচন সেবন করাবেন, জ্বর উপশম হওয়ার পর ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে নতুন ভেষজ রঙে সজ্জিত করা হবে। এই উৎসবকে বলা হয় নবযৌবন উৎসব। এর দু’দিন পর আসবে সেই মহেন্দ্রক্ষণ ২৭ জুন সোজা রথ। ওই দিনই প্রভু জগন্নাথ, বলরাম, মা সুভদ্রা বিশেষভাবে সজ্জিত হয়ে মাহেশের বিখ্যাত সুউচ্চ রথে চড়ে রাজপথ দিয়ে দেড় কিলোমিটার দূরবর্তী মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।