প্রতিবেদন: ইরান-ইজরায়েলের সংঘাতের আগুন ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা। সবচেয়ে জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছে ইরান তার আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ায়। ফলে অভূতপূর্ব সংকটে ওই অঞ্চলের বিমান চলাচলের রুট। গত ৩ দিনে বাতিল করা হয়েছে বহু বিমান। বদল করা হয়েছে রুটও। স্বাভাবিকভাবেই ঘোরতর অনিশ্চতায় ভারত-সহ নানা দেশের বিমানযাত্রীরা। পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের, বিশেষ করে দিল্লি-মুম্বইয়ের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা শুক্রবার থেকেই রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে। মাঝ আকাশ থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার ৩টি বিমানও। শুক্রবার থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়ার মোট ১৬টি বিমানে প্রভাব পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার। ইরান এবং পাকিস্তান, উভয় দেশের আকাশপথেই নিষেধাজ্ঞার ফলে বহু বিমানকে গন্তব্যে পৌঁছতে অতিক্রম করতে হচ্ছে সুদীর্ঘ পথ। ফলে সময়ও অনেক বেশি লাগছে।
আরও পড়ুন-মে মাসে দেশে বাড়ল বেকারত্বের হার, কাজ নেই মহিলাদের হাতে
এদিকে শুধুমাত্র যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মঙ্গলবারই বাতিল করা হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার ৭টি আন্তর্জাতিক বিমান। এরমধ্যে ৬টি ড্রিমলাইনার। বাতিল করা হয়েছে দিল্লি থেকে দুবাইগামী, দিল্লি থেকে ভিয়েনাগামী, দিল্লি থেকে প্যারিসগামী, আমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী, লন্ডন থেকে অমৃতসরগামী, বেঙ্গালুরু থেকে লন্ডনগামী এবং মুম্বই থেকে সানফ্রান্সিককো বিমান। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি করে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসে শীর্ষ কর্তাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে ডাকেন ডিজিসিআই কর্তারা। পারফরম্যান্স রিপোর্ট চাওয়া হয় পাইলটদের। সর্তক করে দেওয়া হয় দেশের সমস্ত বিমান প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে।
আমেদাবাদ দুর্ঘটনার পর অভিশপ্ত বোয়িং বিমানের নাম বদল করেছিল এয়ার ইন্ডিয়া। কিন্তু তাতেও পরিষেবায় বদল এল না। মঙ্গলের সকালে লন্ডনগামী সেই এআই বিমানে ফের যান্ত্রিক ত্রুটি। এবারও ঘটনা আমেদাবাদেই। টেকঅফের সময় বিষয়টি নজরে আসায় ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা কর্তৃপক্ষের। বিরক্ত যাত্রীরা, প্রশ্ন একটাই, বারবার হচ্ছেটা কী? যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সোমবার রাতেই সানফ্রান্সিসকো-মুম্বইগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটকে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয়। সেই ঘটনার ১২ ঘণ্টা যেতে না যেতেই এবার আমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে ওড়ার সময় এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগ ধরা পড়ল। এক সপ্তাহ আগে দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে দ্রুত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের রিফান্ড দেওয়া হবে। কিন্তু পরিষেবার নামে যেভাবে হয়রানি আর আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে তাতে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের উপর বীতশ্রদ্ধ যাত্রীরা। গত ১২ জুন ড্রিমলাইনারের (এআই ১৭১) মর্মান্তিক পরিণতির পর নাম বদল করে আজ সংস্থার লন্ডনগামী বিমানের ওড়ার কথা ছিল। দুপুর ১টা নাগাদ আমেদাবাদ থেকে ছেড়ে ননস্টপ ফ্লাইটটির লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উড়ানের আগেই তা বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। যান্ত্রিক গোলযোগের বিষয়ে বিস্তারিত কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি।