রাত পোহালেই শিক্ষক দিবস। আজ, বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবস উপলক্ষে ধনধান্যে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যারা সমাজ গড়ে শিক্ষালয় গড়ে, দেবালয় গড়ে তাদের সম্মান জানাতে এই অনুষ্ঠান বলেই মন্তব্য করেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে ৭৩ শিক্ষককে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সেরা ১২টি স্কুলকে শিক্ষা ও খেলাধূলায় উৎকর্ষের জন্য পুরস্কার প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেরার তালিকায় এগিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন। শিক্ষকদের সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেরা স্কুলগুলির মধ্যে এবার রামকৃষ্ণ মিশনগুলিই বেশির ভাগ স্থান দখল করে নিয়েছে। বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিও এগিয়ে এসেছে। যাঁরা সমাজ গড়েন, যাঁরা শিক্ষালয় গড়েন, তাঁদের আমি সম্মান করি।’’ এদিন শিক্ষারত্ন পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে ৩৯ জন স্কুলের শিক্ষকশিক্ষিকা, ২১ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ১৩ জন ভোকেশনাল এবং অন্যান্য আইআইটি বিষয়ক শিক্ষক। সকলকে পুরস্কৃত করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মানপত্র, ঘড়ি, শাল, স্মারক, বই এবং ২৫ হাজার টাকা হাতে তুলে দেওয়া হল।
আরও পড়ুন-লেখক ও তাঁর সৃষ্টিকে অবহেলা করতে পারব না আমরা : ব্রাত্য
৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উপলক্ষে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা-সহ বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষায় এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্সে প্রথম হওয়া ১৯ জন ছাত্রছাত্রীকে সম্মানিত করা হল। সমস্ত বোর্ড মিলিয়ে এদিন মোট ৩৮৭জন কৃতী ছাত্রছাত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে স্টেডিয়ামে। তাদের দেওয়া হয়েছে মানপত্র ,ল্যাপটপ, ট্যাব, জেমস অফ বেঙ্গল নামে একটি বই, মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষর করা ডায়েরি এবং ১২টি বই।
আরও পড়ুন-বাবা-মাকে খুনের পর আত্মহত্যার চেষ্টা পুলিশকর্মী ছেলের! চাঞ্চল্য এলাকায়
সেরা বিদ্যালয় সম্মাননা পুরস্কার ২০২৫
* নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন
* রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির, মালদহ
* মাহেশ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক
* পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ
* রামকৃষ্ণ মিশন বয়েজ হোম হাইস্কুল, রহড়া
* জ্ঞানদীপ বিদ্যাপীঠ, পূর্ব মেদিনীপুর
* রামকৃষ্ণ সারদা মিশন নিবেদিতা গার্লস স্কুল
* সারদা বিদ্যাপীঠ উচ্চ মাধ্যমিক, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
* গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুল, কোচবিহার
* কোলাঘাট থার্মাল পাওয়ারপ্লান্ট হাইস্কুল, পূর্ব মেদিনীপুর
* মানিকপাড়া বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ, ঝাড়গ্রাম (ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের পুরস্কার)
* মল্লিকপুর গার্লস হাইস্কুল উচ্চ মাধ্যমিক, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
আরও পড়ুন-ভাষাসন্ত্রাস : মুখ্যমন্ত্রী আজ বক্তব্য রাখবেন বিধানসভায়
মেধাতালিকায় যারা স্থান পেয়েছে তাদের সংবর্ধনা জানান হচ্ছে। এরপরেই রাজ্যের উন্নয়নের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ”আগে ১২টা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, এখন ৪৬ কিছুদিনের মধ্যে আরো ৬টা যোগ করে ৫২টি হবে। কয়েকটা মাননীয় রাজ্যপালের কাছে পরে আছে। নতুন করে মেডিকেল কলেজ হবে। আমি গর্বিত আমার কন্যাশ্রী ইউনাইটেড নেশন্সের তরফে নেদারল্যান্ডে পুরস্কৃত হয়েছিল। আমরা এবারে সাড়ে ১২ লক্ষ সাইকেল দিচ্ছি। তরুনের স্বপ্ন অর্থাৎ বিনা পয়সায় স্মার্ট ফোন দেওয়া হচ্ছে। ৫৩০০ কোটি খরচ করে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগে স্কুলছুটের হার খুব বেশি ছিল। ছোট মেয়েদের খুব অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, মেধাশ্রী ইত্যাদি নানা প্রকল্পের পর শিক্ষায় স্কুলছুটের সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে। এছাড়া সংখ্যালঘুদের জন্য আমাদের আলাদা স্কলারশিপ আছে। এর জন্য খরচ হয়েছে ৯৭৭৭ কোটি। ৪০ হাজার ছেলেমেয়েকে শিক্ষা ঋণ দেওয়া হয়েছে। আগে ড্রপআউট রেট খুব বেশি ছিল। এককালে ছোট মেয়েদের খুব অল্প বয়সে বয়স্কদের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। ঘাড় থেকে বাবা মায়েরা নামিয়ে দিত তাদের। তাদের দোষ নেই। বিদ্যাসাগর বাল্যবিবাহ রদ করেছিলেন। এই বাংলার অ্যাসেম্বলি থেকেই একদিন সতীদাহ প্রথা রদ বিলও পাশ হয়েছিল। তারপর সেটা গোটা ভারতে গৃহীত হয়। পথ দেখিয়েছিল বাংলাই। এগুলো আমাদের গর্বের জায়গা। আমরা যেন আমাদের অস্তিত্ব ভুলে না যাই।”