প্রতিবেদন : অপদার্থতার চরম সীমাও অতিক্রম করল রেল। নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে এবার কাঞ্চনজঙ্ঘা (Kanchanjunga Express Accident) দুর্ঘটনার তদন্তেও জালিয়াতি শুরু করেছে রেলমন্ত্রক। সোমবার সাতসকালে ফাঁসিদেওয়ায় সিগন্যাল বিভ্রাটে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মালগাড়ির ধাক্কা দেওয়ায় সমস্ত গাফিলতির অভিযোগ নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চায় রেল। সেজন্য মালগাড়ির জীবিত সহকারী চালককে মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁর ঘাড়েই সমস্ত দোষ চাপাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। মালগাড়ির লোকো পাইলট অনিল কুমার ঘটনাস্থলেই মারা গেলেও সহকারী চালক মন্নু কুমার এখনও শিলিগুড়ির একটি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি। কিন্তু নিজেদের অপদার্থতা ঢাকতে তাঁকেই মৃত বলে চালিয়ে দিতে চাইছে রেল। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ওই আহত সহকারী চালক মন্নুকে দেখতে হাসপাতালে যান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, মন্নু কুমার এখনও যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তবে মালগাড়ির এই সহকারী চালক এখনও জীবিত। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁর ঘাড়ে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। তদন্তের নামে প্রহসন করছে। জেনে-বুঝে একজন জীবিত মানুষকে মৃত বলে ঘোষণা করে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে চাইছে রেল। এটা অমানবিক!
আরও পড়ুন- অনলাইন ভর্তির পোর্টাল চালু, আবেদন করা যাবে ২৪ জুন থেকে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৪৬১টি কলেজে
আবার, দায় ঝেড়ে ফেলতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের (Kanchanjunga Express Accident) এক যাত্রীকে দিয়েও মালগাড়ির মৃত চালক ও সহকারী চালকের উপর অভিযোগ করানো হয়েছে। রেলের তরফে ওই মহিলা যাত্রী চৈতালি মজুমদারকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে রেল। যদিও তিনি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের এস-৬ কামরার যাত্রী চৈতালি। নিউ জলপাইগুড়ির বাসিন্দা ওই মহিলার সাফ দাবি, রেল হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ওই কাগজে শুধুমাত্র আমার নাম আর ঠিকানা লেখা ছিল। সেখানে আমাকে সই করে তারিখ লিখে দিতে বলা হয়। যাদের আমি চিনিই না, তাদের বিরুদ্ধে আমি কেন অভিযোগ জানাব? এদিন ওই অভিযোগকারী মহিলার বাড়িতেও যান শিলিগুড়ির মেয়র। চৈতালি ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে গোটা ঘটনায় রেলকে কাঠগড়ায় তুলে এর তীব্র নিন্দা করেন গৌতম। চৈতালি ও তাঁর পরিবারের পাশে থেকে আইনি সহায়তারও আশ্বাস দেন তিনি।