শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে এবার ক্রমেই বেরিয়ে আসছে কেন্দ্রের কঙ্কালসার চেহারা। নিট এর পর এবার নেট পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তোলপাড় দেশ। আর এই সবকিছুর মধ্যে প্রশ্নের মুখে একগুচ্ছ পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ। মঙ্গলবার গোটা দেশ জুড়ে ইউজিসি নেট পরীক্ষা (NET Exam) হওয়ার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার রাতে পরীক্ষা বাতিল করার কথা ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনার পর যে লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী দীর্ঘ প্রস্তুতির পর পরীক্ষায় বসেছিলেন, তাঁরা রীতিমতো বিভ্রান্ত। কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, আবার কবে পরীক্ষা হবে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। এদিকে এই পরীক্ষাকে বাতিল ঘোষণা করেই নিজেদের মুখ বাঁচাতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে এনটিএ। কিন্তু এতে কি আদৌ চক্রের মাথা ধরা পড়বে? প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
আরও পড়ুন- অজানা কারণে নয়ডায় মৃত ১৪, রাস্তা থেকে উদ্ধার সকলের দেহ
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রককে কাঠগড়ায় তুলেছেন ব্রাত্য বসু। তিনি এদিন এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, দুর্নীতির তালিকায় এবার নতুন দুর্নীতি যুক্ত হল। স্বচ্ছতার সঙ্গে আপস করে নেট পরীক্ষা বাতিল করা হল। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে চক্রের মাথা কি ধরা পড়বে? তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষও দাবি করেন কেন্দ্রের নিট ও নেট (NET Exam) কেলেঙ্কারির মাথাদের ধরতে হবে। কিন্তু ধরবে কে? সিবিআই তো বিজেপির। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্ত হওয়া উচিত। জেরা করা হোক। সিবিআই তদন্তের কথা বলে কেন্দ্র নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের ধরতে হবে।
নেট পরীক্ষা বাতিলের পর ফের একবার প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রকের ভূমিকা। দেশের সাইবার বিভাগ পরীক্ষা পদ্ধতিতে অনিয়ম-বেনিয়মের অভিযোগ তোলে ৷ এই ঘটনায় মাথায় হাত পড়েছে পরীক্ষার্থীদের ৷ মঙ্গলবার দুটি অর্ধে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ‘জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ’ প্রদান এবং দেশের বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর’ নিয়োগের জন্য যোগ্যতা নির্ণয় করা হয়। এই বছরই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ১৬ জুন। তবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা দুদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষার হওয়ার পর গোটা প্রক্রিয়াই বাতিল করে দেওয়া হল।
এদিকে প্রশ্ন উঠছে নেট নিয়ে সিবিআই তদন্ত হলেও নিট নিয়ে কেন সিবিআই তদন্ত হচ্ছে না? পরীক্ষাই বা কেন বাতিল করা হচ্ছে না? এই প্রসঙ্গে তৃণমূল শিক্ষা সেলের সাধারণ সম্পাদক বিজন সরকার বলেন, প্রকৃত মেধা বঞ্চিত হলো। অর্থ সেখানে এগিয়ে গেল। মোদি সরকারের আয়নাতে নিজের মুখ দেখা উচিত। মোদি আসলে যেটা বলেন সেটা কোনদিনও করেন না। নিটে নিজেদের কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তদন্ত করাতে ভয় পাচ্ছে বিজেপি। কারণ সিবিআই তদন্ত হলে বিজেপির অনেক রাঘব বোয়াল ধরা পড়ে যাবে। বিজেপির অনেক মাথাকে জেলে যেতে হবে।