প্রতিবেদন : কীভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়েছিল? ফাঁস করে দিলেন মালগাড়ির সেই সহকারী চালক মন্নু কুমার। বিস্ফোরক তাঁর বক্তব্য। রেল কর্তৃপক্ষ ঘটনার দায় তাঁর ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছিল। দুর্ঘটনার পর প্রথম ২৪ ঘণ্টায় তাঁকে মৃত বলেই ঘোষণা করা হয়েছিল! বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর খোঁজ মেলার পরেই রেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে আড়াল করতে আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করে। সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে সরিয়ে রাখা থেকে আরম্ভ করে হাসপাতালে ঢােকাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ট্রমার মধ্যে থাকা মন্নু কুমার একটু সুস্থ হয়ে মুখ খুলতেই রেলের সাজানো গল্পের ফানুস ফেটে গিয়েছে।
দুর্ঘটনার পরেই রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, দুর্ঘটনায় দোষ আসলে মালগাড়ির চালক ও সহ-চালকের। তাঁরা নিষেধাজ্ঞা ভুলে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে মালগাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু রেলের এই মিথ্যাচারের ফানুস ফাটিয়ে দিয়েছে মন্নু। তাঁর স্পষ্ট কথা, মালগাড়ির ট্র্যাকে যে আর-একটি ট্রেন আগে চলছিল তা তাঁদের জানানো হয়নি। এমনকী তাঁরা ট্রেন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে দেখতেও পাননি। যে ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে তার ২০০ মিটার আগে লাইনে বাঁক ছিল। ফলে বাঁক শেষ করেই সামনে ট্রেন চলে এসেছিল। ব্রেক কষে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়নি। আবার পাশের ট্র্যাক দিয়ে আর একটি ট্রেন যাচ্ছিল। এই কারণে চোখে পড়েনি কিছুই। তবু কাঞ্চনজঙ্ঘাকে দেখে ব্রেক কষেছিলেন চালক। কিন্তু গতি সেই ট্রেনটিকে অনেক দূর টেনে নিয়ে যায়। অর্থাৎ রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে মালগাড়ির গতির কথাই বলা হয়েছে। সেটা রেলকর্তাদের মুখ বাঁচানোর রিপোর্ট তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। যদিও মন্নু কুমারের মতোই চিফ লোকো ইন্সপেক্টর রেলকে বিপদে ফেলে জানিয়েছেন, সেদিন অটোমেটিক সিগন্যাল খারাপ ছিল। ম্যানুয়াল সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছিল। এই কারণে গোটা সেকশন অ্যাবসলিউট ব্লক করা উচিত ছিল। অর্থাৎ একসময় ওই লাইন দিয়ে একটি ট্রেনকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার কথা। রাঙাপানি ও চকেরহাট স্টেশনের মধ্যে যতগুলি সিগন্যাল আছে সেগুলি পেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল স্টেশন মাস্টার। কিন্তু কেন জানানো হয়নি কাঞ্চনজঙ্ঘার কথা? সেটাই রহস্য। তার মাঝে বোমা ফাটিয়ে রেলকে আরও বিপাকে ফেললেন মালগাড়ির সহকারী চালক মন্নু কুমার।