প্রতিবেদন : সন্দেশখালিতে সিবিআইয়ের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযানের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এলাকার মানুষ। সে নিয়ে বিপ্লব করার চেষ্টা করেছিল রাম-বাম-কং আর তার শাগরেদ একশ্রেণির মিডিয়া। যদিও ফানুস চুপসে যায় লোকসভা ভোটে। বিজেপি-সহ বিরোধীদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিবিআই অভিযান ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই। তদন্ত এজেন্সি সিবিআইকে বিজেপি সরকার যে চৌকিদারের ভূমিকায় নামিয়ে এনেছে তা আর একবার প্রমাণিত হল প্রশ্ন কেলেঙ্কারির তদন্তে। বিহারের নওয়াদাতে তদন্তে গিয়ে মারমুখী গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ল সিবিআই। গুরুতর আহত হলেন গাড়ির চালক।
আরও পড়ুন-বিস্ফোরক মালগাড়ির সেই সহকারী চালক মন্নু, লাইনে ট্রেন, জানায়নি রেল
প্রায় শ’তিনেক গ্রামবাসী যখন ঘিরে ধরে মারমুখী হয়ে উঠেছে তখন সেখান থেকে কোনওরকমে পালান সিবিআই অফিসাররা। রাজনৈতিক মহল বলছে, বিজেপি-শাসিত বিহারে এই ঘটনা ঘটার পর প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোন মুখে বাংলার প্রসঙ্গ এবার উচ্চারণ করবেন। বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলেই তাকে রাজনৈতিক রং দেওয়া হয়। এবার বিজেপিরই পল্টুরামের সরকার বিহারে থাকাকালীন আক্রান্ত সিবিআই। জবাব দিতে হবে বিজেপির মুখপাত্রদেরই। এই পরিস্থিতিতেই নিট তদন্তে নেমে জানা যাচ্ছে, হাজারিবাগ হল প্রশ্ন ফাঁসের এপিসেন্টার। সেখানকার ওয়সিস স্কুল থেকেই নিটের ছাপানো প্রশ্নপত্র মিলেছে। স্কুলের চেয়ারম্যান সাবির আহমেদ মূল চক্রী। প্রিন্সিপ্যাল এহসানুল হক সিবিএসই-র কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। দুই যোগসূত্রকে কাজে লাগিয়ে নিট এবং নেট দুই প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিলেন সঞ্জীব মুখিয়া। জানা গিয়েছে, সঞ্জীব কম করে ২৫ জন পরীক্ষার্থীকে পাটনার একটি প্লে-স্কুলের ছেলেদের হস্টেলে রেখেছিল ৪ মে। অর্থাৎ পরীক্ষার আগের দিন। সে দিনই পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্রও দেওয়া হয়েছিল। সব উত্তর কী হবে এবং কীভাবে লিখতে হবে বলা হয়। এরপর প্রশ্ন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এইভাবেই ঝাড়খন্ড থেকে বিহারের মধ্যে এক একটি নেটওয়ার্ক চালিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে মুখিয়ারা। প্রত্যেকটির সঙ্গেই বিজেপি নেতারা জড়িত। গুজরাত-মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে ঝাড়খন্ড-বিহার, সব জায়গাতেই কেলেঙ্কারির উজ্জ্বল নক্ষত্র বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুন-আজ পুর-বৈঠক, বুধে ক্যাবিনেট মিটিং
রবিবার নওয়াদা গ্রামে জনা ৭-৮ সিবিআই অফিসার গিয়েছিলেন তদন্তে। ফুলচাঁদ ও তার স্ত্রী ববিতার বাড়িতে যান। কিছু কাগজপত্র দেখে যখন বেরচ্ছে তখন রটে যায় সিবিআইয়ের ভেক ধরে এসেছে ভুয়ো অফিসাররা। এরপর ঘিরে ধরা হয় গোটা টিমকে। জনতার মাড়ে আহত গাড়ির চালক। পরিচয়পত্র দেখিয়েও লাভ হয়নি তাদের। শেষে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে উদ্ধার করে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, সিবিআই তাদের মর্যাদা হারিয়েছে বিজেপির রাজত্বে। ১৯৬৩ সালে তৈরি সিবিআই বিজেপির তল্পিবাহকতা করতে করতে এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে যে দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করেন না, সিবিআই সত্য উদ্ঘাটনে তদন্ত করে। তারা আসলে বিজেপিকে বাঁচাতেই ব্যবহৃত হয়। ফলে বিজেপি শাসিত বা বিজেপির বন্ধু সরকার রয়েছে এমন রাজ্যে সিবিআই আক্রান্ত হচ্ছে। যারা এতদিন বাংলার দিকে আঙুল তুলতেন তারা এবার বুঝুন সিবিআইয়ের প্রতি মানুষের মনোভাব কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে।