প্রতিবেদন : যে করেই হোক রুখতে হবে বেআইনি জবরদখল। সুনিশ্চিত করতে হবে পথচলতি মানুষের নিরাপত্তা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের পরেই জবরদখলদারিদের তুলতে আদাজল খেয়ে লেগেছে পুলিশ প্রশাসন। আর সেই কাজ যখন মধ্যগগনে, তখনই ফের বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে নবান্ন সভাঘরে সরকারি জমির বেআইনি জবরদখল ও হকার উচ্ছেদ ইস্যু নিয়েই বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা, বিধাননগর-সহ পুরনিগম ও পুরসভার চেয়ারম্যান, সমস্ত জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক, বিভিন্ন দফতরের সচিবদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এছাড়াও কলকাতা, হাওড়া ও বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে সমস্ত থানার ওসি, আইসিদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার ওসি, আইসিদের প্রত্যেককেই সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে এই বৈঠকে। সোমবারের বৈঠকে নাম না করে তোলাবাজির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, প্রশাসন মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েছিলেন। এরপরেই তৎপর হয়ে গোটা রাজ্য জুড়ে বেআইনিভাবে ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিনভর অভিযান চালিয়ে শহরের ৪০০টি জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। বুধবারও আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে, যদুবাবুর বাজার, বেহালা, ভবানীপুর, গড়িয়াহাট, শিয়ালদহ, থেকে শুরু করে নিউ টাউন পর্যন্ত জবরদখল উঠিয়ে ফুটপাথ উদ্ধারে সকাল থেকেই পথে নামে পুলিশ এবং পুরসভা। এছাড়াও হাওড়া, সিউড়ি, হুগলি, শ্রীরামপুর, উত্তরের সব জেলাতেও চলছে দখলমুক্ত করার এই অভিযান। ফুটপাথ চত্বরে যে সমস্ত খাবারের দোকান ছিল সেই খাবারের দোকানগুলিও খালি করার কথা বলা হয়েছে। যতক্ষণ না নতুন কোনও নির্দেশিকা আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত হকারদের বসতে মানা করে দেওয়া হয়। এদিকে, শহর দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া আগামী দিনেও জারি থাকবে বলে সাফ জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। নগরপাল জানান, এই হকার উচ্ছেদ অভিযান চলছে এবং চলবে। পথযাত্রীদের যাতায়াতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তাই শহরে বেআইনিভাবে ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে পুলিশের অভিযান চলবেই। এদিকে, উচ্ছেদ ও পুনর্বাসন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নতুন কোনও নীতি ঘোষণা করেন কিনা সেদিকে তাকিয়ে গোটা প্রশাসনিক মহল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাস্তবোচিতভাবেই হকার বন্ধুদের স্বার্থ, কর্মসংস্থান, সৌন্দর্যায়ন এবং পথচারীদের নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য রাখার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিচ্ছেন। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের কথায়, হকাররা কেউ শত্রু নন, বরং বাম আমলে যখন হকার উচ্ছেদ করা হয়েছিল তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁদেরকে আগলে রেখেছিলেন। এখন একটা নিয়মে আনার প্রক্রিয়া চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বাস্তবিকভাবেই হকার বন্ধুদের স্বার্থ, কর্মসংস্থান, সৌন্দর্যায়ন এবং পথচারীদের নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য রাখার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী কোনওরকম ভাবেই কঠোর পদক্ষেপ করার কথা বলেননি, বলেছেন, নিয়ম-নীতি, মাপ অনুযায়ী হকাররা থাকবেন।