জর্জটাউন, গায়ানা, ২৭ জুন : বিশ্বকাপ না রোহিতদের বদলার টুর্নামেন্ট! অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ‘২৩-এর আমেদাবাদ ফাইনালের জবাব দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার আরও এক বদলা ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। ১৯ মাস আগে অ্যাডিলেডে এমনই টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল জস বাটলারের ইংল্যান্ড (India vs England)। এদিন সেই বাটলারের ইংল্যান্ডকে ৬৮ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠল ভারত।
প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামের এই উইকেটে ১৭১ ভাল রান। তাই ইংল্যান্ডের জন্য পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাটলার অবশ্য ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে বেশি এগোতে পারেননি। ১৫ রান করে আউট হয়ে গেলেন অক্ষরের বলে। ঠিক এই উইকেটটাই চেয়েছিল ভারত। ইংল্যান্ড তখন ২৬। ৮ রান পরে বুমরা যখন ফিল সল্টকে (৫) ফেরত পাঠালেন, ইংল্যান্ড (India vs England) আরও চাপে। এই চাপ প্রচুর বেড়ে গেল পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে বেয়ারস্টোকেও (০) যখন অক্ষর তুলে নিলেন।
প্রচুর ভারতীয়কে দেখা গেল গ্যালারিতে। তাঁরা পাওয়ার প্লে থেকেই জয়ের উৎসব শুরু করে দিয়েছিলেন। দেওয়ারই কথা। ৪৯ রানে অর্ধেক ইনিংস শেষ হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের। অক্ষর শুরু করেছিলেন। কুলদীপ মাঝে এসে উইকেট নিয়ে গেলেন। পরের দিকে হ্যারি ব্রুকের (২৫) দিকে তাকিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। তাঁকে কুলদীপ বোল্ড করে দেওয়ার পর ইংল্যান্ডের কিছু করার ছিল না। শেষপর্যন্ত ১৬.৪ ওভারে তারা করেছে ১০৩ রান।
এদিন পাওয়ার প্লে-র শেষে ভারতের রান ছিল ৪৬/২। বিরাট (৯) আর ঋষভ (৪) আউট হন অ্যাডভেঞ্চার দেখাতে গিয়ে। বিরাট প্রথম বল থেকে চালাতে গেলেন। বারবার স্টেপ আউট করে বল মিস করেন। ব্যাটে রান নেই। চাপ থেকে বেরোতে গিয়ে টপলিকে উইকেট দিয়ে গেলেন। তাঁর স্টেপ আউট করার দরকার ছিল না। আগের বলেই ছক্কা পেয়েছেন। আর ঋষভ যে আধা ফ্লিক করতে গেলেন, সেটাও সোজা স্কোয়ার লেগে গেল বেয়ারস্টোর হাতে। স্লো উইকেটে অল আউট যেতে হয়। যাতে ইনার ফিল্ডিং সার্কেলের বাইরে যায় বল। ঋষভ সেটা পারেননি।
আরও পড়ুন- মেক্সিকোকে হারিয়ে চমক ভেনেজুয়েলার
ভারত তখনও সুরক্ষিত ছিল রোহিত ছিলেন বলে। আবার যখন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হল, ভারত ৬৫/২। আবার শুরু হলে এই রানই টেনে নিয়ে গেলেন রোহিত আর সূর্য। স্যাম কারেনকে ছয় মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেন ভারত অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ভারতীয় ব্যাটিংকে ভরসা দিয়েছেন তিনি। শেষপর্যন্ত আদিল রশিদকে অ্যাক্রস খেলে বোল্ড হয়ে গেলেন ৫৭ রানে।
তবে রোহিত ফিরলেও ছিলেন সূর্য। তাঁর আর হার্দিককের জন্যই ভারত শেষপর্যন্ত ২০ ওভারে ১৭১/৭ তুলতে পেরেছে। সূর্য করেন ৪৭ রান। হার্দিকের ব্যাট থেকে এসেছে ২৩ রান। এছাড়া রবীন্দ্র জাদেজার অবদান ১৭ রান। ইংল্যান্ড বোলারদের মধ্যে ক্রিস জর্ডন তিন উইকেট নিয়েছেন ৩৭ রান দিয়ে।
বৃষ্টির আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। গায়ানায় এখন বর্ষার মরশুম। রোহিত শর্মা আগেরদিন প্রি ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে এসে বলেছিলেন, আমরা বৃষ্টি হবে জেনেই এখানে এসেছি। তবু ৪০ ওভারের ম্যাচ মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিয়েছি। এখানে বৃহস্পতিবার ঠিক সেটাই ঘটল। এত বৃষ্টি হল যে, টস ঠিক সময়ে হতেই পারল না। আম্পায়াররা যখন মাঠে এলেন, বৃষ্টি তখন থেমে গিয়েছে। পরে ম্যাচ শুরু হল ওভার না কমিয়েই।
শেষপর্যন্ত অবশ্য খেলা শুরু হল সওয়া ন’টায়। তবে বাটলার টসে জিতে আগে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ঠিক করলেন কি না সেটা প্রশ্ন ছিল। রোহিত যেমন সোজাসুজি বলে দিলেন, আমি জিতলে আগে ব্যাটিং নিতাম। তিনি বলেন, ভাল উইকেট। পরের দিকে স্পিন হতে পারে। বোধহয় তাই, তিনি ব্যাট করে নিতে চাইছিলেন। ভারত সেই একই দল নিয়ে সেমিফাইনালে নেমেছিল। কুলদীপ অক্ষরের
সঙ্গে মিলে ইংল্যান্ড ইনিংসে কাঁপুনি ধরিয়ে দেন। অক্ষর নিয়েছেন ৩ উইকেট। কুলদীপও তাই। বুমরা নেন দুই উইকেট।