প্রতিবেদন: নিট-কেলেঙ্কারিতে গেরুয়া যোগ আরও স্পষ্ট হচ্ছে। প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে এবারে উঠে এল এনডিএ-তে বিজেপির বন্ধুদল সুহেলদেব ভারতীয় সমাজপার্টির বিধায়ক বেদীরামের নাম। স্বাভাবিকভাবেই গভীর অস্বস্তিতে বিজেপি। তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। বেদী যোগীরাজ্যের জৌনপুরের বিধায়ক। আদতে আজমগড়ের বাসিন্দা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় এর আগে দু’বার গ্রেফতার করা হয়েছিল বেদীকে। কিছুদিন আগেই একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমের স্টিং অপারেশনে বিজেন্দর গুপ্তা নামে এক প্রশ্নফাঁসের পান্ডার মুখে শোনা গিয়েছিল বেদীর নাম। বিজেন্দর বলেছিলেন, দেশের সবচেয়ে বড় প্রশ্নপত্রফাঁস মাফিয়ার নাম বেদীরাম। তিনি এখন জৌনপুরের নির্বাচিত বিধায়ক। বিজেন্দর স্বীকার করেছিলেন, যে বেদীর কাছেই তাঁর প্রশ্নফাঁস ব্যবসার হাতেখড়ি। এই স্বীকারোক্তির কয়েকদিনের মধ্যেই নিট-কেলেঙ্কারিতে উঠে এল বেদীর নাম। বুধবার একটি ভাইরাল ভিডিওতে তাঁর কথার সূত্র ধরেই নিট-কেলেঙ্কারিতে সন্দেহভাজনদের তালিকায় উঠে এসেছে বেদীর নাম। যোগীরাজ্যের এক মন্ত্রীর তিনি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন-২০২৫-এ মাধ্যমিক পরীক্ষা কবে থেকে শুরু? রইল রুটিন
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বিধায়ক ২০২২-এ বিধানসভা নির্বাচনে হলফনামায় নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে নথিভুক্ত মামলার মধ্যে ৮টিই প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত। পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু নিট নয়, এর আগে বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশের পুলিশ এবং রেলে নিয়োগের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রফাঁসের মূল পরিকল্পনা এবং রূপায়ণে মূল ভূমিকা ছিল বেদীরই। নিট প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির বিধায়ক বেদীর নাম উঠে আসার পরই রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন-ছবি বিকৃত করে বিজেপির নোংরা খেলা, প্রকৃত ঘটনা সামনে আনল তৃণমূল
জানা গিয়েছে, এই বেদীরাম একসময়ে রেলে চাকরি করতেন। ২০০৬ একটি প্রশ্নফাঁস মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তাঁর চাকরি চলে যায়। রেলের লোকোপাইলট নিয়োগ পরীক্ষার দুর্নীতিতে জড়িত থাকার ২০০৮-এও গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। ২০০৯ সালে জয়পুরের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ রেলের নিয়োগের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিল বেদীরামের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরিক্ষায় দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয়, যে এলাকার তিনি বিধায়ক সেই জৌনপুরেও পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এফআইআরও হয়েছিল। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, একজন পরীক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে পাশ করিয়েছেন তিনি। তবে সেই পরীক্ষা বাতিল হলে তিনি দায়ী নন। এই কথার সূত্রেই নিট-কেলেঙ্কারিতে সন্দেহভাজনের তালিকায় উঠে এসেছে বিজেপি-বন্ধু বিধায়ক বেদীরামের নাম।
এদিকে নিট প্রশ্নফাঁস-কাণ্ডে ঝাড়খণ্ডের এক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।