প্রতিবেদন : মোদি সরকারের ভ্রান্ত নীতি ও ত্রুটিপূর্ণ প্রকল্পের কারণে আরও এক প্রাণ ঝরে গেল অকালে। অগ্নিবীদের মতো একটি ভ্রান্ত প্রকল্পের খেসারত দিতে হল ২২ বছরের এক যুবককে। মঙ্গলবার রাতে আগ্রা এয়ার ফোর্স স্টেশনে আত্মঘাতী হন ‘অগ্নিবীর’ শ্রীকান্তকুমার চৌধুরী। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধিক্কার জানায় তৃণমূল। এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আপনার হাতে রক্ত লেগে রয়েছে। আগ্রা এয়ার ফোর্স স্টেশনে ২২ বছর বয়সি ওই যুবকের আত্মহত্যা হল বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্নিবীর প্রকল্পের অবহেলার ফল৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে যেভাবে যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়াই একদল তরুণকে সেনাবাহিনীর কাজে লাগানো হচ্ছে, আমরা শুরু থেকেই তার প্রতিবাদ জানিয়েছি। যে অগ্নিবীর আত্মঘাতী হলেন, সেনাবাহিনীর কাজ করার জন্য আদৌ সঠিক প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন কি তিনি? রোজগেরে সন্তানহারা পরিবারটিরই বা এবার কী হবে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা তাঁর সরকারের কাছে কি এর যুক্তিগ্রাহ্য কোনও জবাব আছে? এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে মহিলা প্রিন্সিপালকে ঘাড় ধাক্কা, ভাইরাল ভিডিও
অগ্নিবীর শ্রীকান্তকুমার চৌধুরী (২২)-কে এয়ার ফোর্স স্টেশনের টেকনিক্যাল এলাকায় পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল। তারপরই তিনি নিজেকে ইনসাস রাইফেল দিয়ে গুলি করে আত্মঘাতী হন। আত্মহত্যার খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বিমান বাহিনীর অফিসার ও জওয়ানরা। পরে শাহগঞ্জ থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ কোনও সুইসাইড নোট পায়নি। শ্রীকান্তের আত্মহত্যার ঘটনার পর অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে ফের দেশ জুড়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল-সহ বিরোধীদের দাবি, মোদি সরকার গা-জোয়ারি করে একটি অপরিকল্পিত প্রকল্প শুরু করেছে। যার মাশুল গুনতে হচ্ছে জওয়ানদের। একের পর এক প্রাণ চলে যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের কথায়, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের একটি অপরিকল্পিত প্রকল্প অগ্নিপথ। এই প্রকল্পের কারণে অন্তত ২০ জন অগ্নিবীর এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে নিজেদের জীবন শেষ করে দিয়েছেন। শ্রীকান্ত উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার বাসিন্দা। তাঁর বাড়ি পাচারুকিয়া গ্রামে। অগ্নিবীর শ্রীকান্তের আত্মহত্যার পরে পরিবার আগ্রায় আসে এবং ময়নাতদন্তের পরে বালিয়ায় দেহ নিয়ে যায়। সরকারি ইনসাস রাইফেল দিয়ে চোখের কাছে গুলি করেন শ্রীকান্ত। পুলিশ রাইফেলটি উদ্ধার করে ফরেনসিক টেস্টে পাঠিয়েছে। শ্রীকান্তকুমার চৌধুরী দেড় বছর আগে অগ্নিবীর স্কিমের মাধ্যমে বায়ুসেনায় যোগ দিয়েছিলেন। শ্রীকান্ত চৌধুরীকে অগ্রায় পোস্ট করা হয়েছিল ৬ মাস আগে। ৩ জুন ছুটিতে বাড়িতে আসেন। ১০ দিনের ছুটি কাটিয়ে তিনি ফের ডিউটিতে ফিরেছিলেন। ১৩ জুন শ্রীকান্ত এয়ারফোর্স স্টেশনে ডিউটিতে যোগ দেন। আগ্রা এয়ার ফোর্স স্টেশনে এটি দ্বিতীয় আত্মহত্যার ঘটনা। ২০১৯ সালের শুরুতে মোরাদাবাদের বাসিন্দা স্কোয়াড্রন লিডার হিমাংশু সিং (৩২) গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন এই এয়ার ফোর্স স্টেশনেই!