প্রতিবেদন: জাতীয় শিক্ষানীতির নাম করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Delhi University) স্নাতক স্তরে আইনের পাঠ্যক্রমে প্রাচীন সংস্কৃত পাঠ্য ‘মনুস্মৃতি’ যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের হিন্দুত্ববাদী ভাবনারই প্রতিফলন এই উদ্যোগে। সংশোধিত সিলেবাস ডকুমেন্টটি অগাস্টে আসন্ন অ্যাকাডেমিক সেশনে বাস্তবায়িত করার জন্য শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করে।
জানা গিয়েছে, ড. গঙ্গানাথ ঝা-এর লেখা মেধাতিথি মনুভাষ্য ‘সহ- মনুস্মৃতি’ সেমিস্টার ১-এ আইনের স্নাতক বা এলএলবি-তে স্নাতক কোর্সের পেপারের পঞ্চম ইউনিটে অ্যানালিটিক্যাল পজিটিভিজমের অধীনে প্রস্তাবিত পাঠ হিসাবে চালু করা হবে। আইন ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক অঞ্জু ভ্যালি টিকু সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, শিক্ষায় ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি চালু করার জন্য জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-এর সাথে সঙ্গতি রেখে মনুস্মৃতি চালু করা হচ্ছে। যে ইউনিটের অধীনে এটি চালু করা হবে তা নিজেই একটি বিশ্লেষণাত্মক ইউনিট। তাই, ছাত্রদের অ্যানালিটিক্যাল পজিটিভিজম তুলনা ও বোঝার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- পুরীতে কীভাবে পড়ে গেল বলরামের মূর্তি? তৈরি হল তদন্ত কমিটি
এদিকে আইনের পাঠক্রমে মনুস্মৃতি অন্তর্ভুক্ত করার এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক টিচার্স ফ্রন্ট। সংগঠনের পক্ষে যোগেশ সিং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরকে লিখেছেন, আমি জানতে পেরেছি যে মনুস্মৃতি শিক্ষার্থীদের কাছে ‘প্রস্তাবিত পাঠ’ হিসাবে সুপারিশ করা হয়েছে যা অত্যন্ত আপত্তিজনক। কারণ এই লেখাটি নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি ও শিক্ষার প্রতিকূল। মনুস্মৃতির আদর্শ লিঙ্গ ও সামাজিক বৈষম্যমূলক। দেশে জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ প্রান্তিক এবং জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ নারী। তাদের অগ্রগতি একটি প্রগতিশীল শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষাদানের উপর নির্ভর করে, মনুস্মৃতির মতো পশ্চাদগামী ভাবনা দিয়ে নয়। মনুস্মৃতি বিভিন্ন বিভাগে নারীশিক্ষা এবং সমান অধিকারের বিরোধিতা করেছে। মনুস্মৃতির কোনও ধারা বা অংশ প্রবর্তন করা আমাদের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং ভারতীয় সংবিধানের নীতির পরিপন্থী। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় (Delhi University) সূত্রে খবর, নতুন কোর্সগুলি গত মাসে আইন ফ্যাকাল্টির কোর্স কমিটি দ্বারা খসড়া করা হয়েছিল এবং জুনের শেষে অ্যাকাডেমিক বিষয়ে স্থায়ী কমিটি দ্বারা অনুমোদিত হয়।