প্রতিবেদন : তারিখ পে তারিখ- করে মামলা ঝুলিয়ে রেখে বেকার, চাকরিপ্রার্থীদের থেকে কোটি কোটি টাকা ফি বাবদ নেওয়া, যখনই কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে তখনই একটা হলফনামা দিয়ে সেই নিয়োগ বন্ধের অপচেষ্টা— বামনেতা মামলাবাজ আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের মুখোশ টেনে খুললেন আপার প্রাইমারির চাকরিপ্রার্থী অর্ঘ্য চৌধুরী। ফেসবুকের আপার প্রাইমারি টেট (ডব্লুবি এসএসসি) পিওর সায়েন্সে গ্রুপের একটি ভিডিও পোস্ট করে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন এই চাকরিপ্রার্থী। (ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি জাগোবাংলা)। তবে, শুধু ভিডিও বার্তাই নয়, বিকাশ ভট্টাচার্যকে তীব্র আক্রমণ করে একের পর পোস্ট হয়েছে এই গ্রুপে। আর সব পোস্টে একই অভিযোগ, দিনের পরে দিন মামলা ঝুলিয়ে রেখে কোটি কোটি টাকা ফি পকেটস্থ করেছেন ‘গরিব পার্টির’ নেতা বিকাশ। সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলে অর্ঘ্য বলেছেন, তাঁদের নিয়োগ হয়ে গেলে মামলাবাজ বিকাশের রোজগার কমে যাবে, সেই কারণে যখনই নিয়োগের পরিস্থিতি হয়েছে, তখনই তাতে হলফনামা দিয়ে স্থগিতাদেশ জারি করিয়েছেন বেকারদের দুঃখে কুম্ভীরাশ্রু ফেলা সিপিআইএম নেতা। এই ভিডিওতে করা অভিযোগ সত্য কি না তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠছে নানা মহলে।
আরও পড়ুন-জয়ের আনন্দের সঙ্গে এবার শপথের অঙ্গীকার
কী অভিযোগ অর্ঘ্যদের : আপার প্রাইমারিতে গত ১০ বছরে নিয়োগ হয়নি। এই নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। আর নানা অজুহাতে এই নিয়োগগুলিতে বাধা দিচ্ছেন বিকাশ অ্যান্ড কোম্পানি— বিস্ফোরক অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীর। তিনি ভিডিওতে বলছেন, (ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি জাগোবাংলা) মুখে মেহনতি মানুষের জন্য লড়াইয়ের কথা বলা বিকাশরঞ্জনের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। মাঝে মধ্যেই তিনি বিদেশ ঘুরতে যান। সে যেতেই পারেন। কিন্তু তার জন্য তিনি নির্দিষ্ট দিন আদালতে হাজির হন না। ফলে পিছিয়ে যায় শুনানি। নয়তো, তাঁর জুনিয়ররা হাজির হন। কিন্তু সুরাহা হয় না।
সত্যিই বিকাশ ভট্টাচার্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন? অর্ঘ্যর দাবি, ধরনায় বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন কত কোটি টাকা তাঁরা বিকাশকে মামলার জন্য তুলে দিয়েছেন।
কেন এত ক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের : অর্ঘ্য বলছেন, নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে বিচারপতির নির্দেশে যখন বেশ কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে তাঁদের আপার প্রাইমারির কাউন্সেলিং হয়েছে, নিয়োগের জন্য শুনানি চলছে, তখন তাঁরা জানতে পেরেছেন, সব ওএমআর শিট ভুয়ো বলে অজুহাত দিয়ে প্যানেল বাতিলের অপচেষ্টায় আছেন বিকাশ। সাপ্লিমেন্টরি হলফনামা জমা দিতে চলেছেন এই বিষয়ে।
কেন করছেন বিকাশ : চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, মামলা শেষ হয়ে গেলে, সবাই চাকরি পেয়ে গেলে মামলাবাজের তো আয় কমে যাবে। সংবাদ মাধ্যমে তিনি কী নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতা দেবেন?
অর্ঘ্যদের অভিযোগ, আদালত থেকে তারিখ নেন, কিন্তু হাজির হন না বিকাশ। শোনা যায় তিনি বিদেশে। না হলে ভাইরাল ফিভার হয়েছে। এইভাবে মামলা পিছিয়ে যায়। অথচ কোনও দুর্নীতির প্রমাণ এখনও তাঁদের নিয়োগ পরীক্ষায় মেলেনি বলে দাবি অর্ঘ্যর। তাঁর কথায়, যাঁরা দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ তাঁরা তো ধরা পড়েছেন।
আরও পড়ুন-ফের রেলের ভুলে দুর্ঘটনা
নিজেকে এক সময়ের বাম সমর্থক বলে দাবি করে ক্ষোভ উগরে অর্ঘ্য বলেন, এখন আমি আপনাদের নীতিকে ঘৃণা করি। আপনি মেহনতি নন, বিদেশে ঘুরে বেড়ানো নেতা। কিন্তু আপনি মুখে বেকারত্ব, যুবকদের রোজগার, কর্মসংস্থান নিয়ে বক্তৃতা দেন। অথচ বারবার নিয়োগে বাধা দিচ্ছেন। এই আপনার নীতি? এই মতাদর্শ? তুলোধোনা করেন অর্ঘ্য।
এরপর সরাসরি ভিডিওতে ওই চাকরিপ্রার্থী জানান, যদি আগামী শুনানিতে বিকাশ ভট্টাচার্য না আসেন বা নিয়োগে বাধা দেওয়ার ছক কষেন, তাহলে সরাসরি সিপিএমের পার্টি অফিসে গিয়ে তাঁরা এর জবাব চাইবেন। এখন এই ভিডিওতে করা অভিযোগ সত্য কি না তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠছে নানা মহলে।