প্রতিবেদন : মহারাষ্ট্রের শিক্ষানবিশ আইএএস অফিসার বিতর্কে নয়া মোড়। সমালোচনার চাপে পড়ে পূজাকে তলব করল লালবাহাদুর শাস্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। রীতিমতো নোটিশ দিয়ে তাঁর প্রশিক্ষণ-পর্বও স্থগিত করে দিল প্রশাসনিক দফতর। পূজার বিরুদ্ধে এই প্রথম কড়া পদক্ষেপ করল সরকার।
আরও পড়ুন-২১ জুলাই সংসদের বৈঠকে না ডেরেকের
তদন্ত যত গভীরে যাচ্ছে ততই একের পর এক বেরিয়ে পড়ছে পূজার কীর্তি। মহারাষ্ট্রের বিতর্কিত শিক্ষানবিশ আইএএস অফিসার পূজা খেদকরের বিরুদ্ধে এবারে উঠল বয়স এবং নাম ভাঁড়ানোর অভিযোগ। ২০২০ থেকে ২০২৩— ব্যবধান ৩ বছরের। কিন্তু ‘ক্যাট’-এর জন্য তাঁর পূরণ করা আবেদনপত্র অনুযায়ী এই ৩ বছরে পূজার বয়স বেড়েছে মাত্র ১ বছর। এরই ভিত্তিতে বয়সের ছাড়ের সুযোগ চেয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ বয়স ছাড়ের আর্জিতেও বিভ্রান্তকর তথ্য পেশ করেছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, নামও ভাঁড়িয়েছেন তিনি। ২০২০ তে পূরণ করা ফর্মে নাম রয়েছে খেদকর পূজা দিলীপ রাও। কিন্তু ২০২৩-এর ফর্মে তা হয়েছে পূজা মনোরমা দিলীপ খেদকর। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, ইউপিএসসির জেনারেল ক্যাটেগরির প্রার্থীদের ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত মোট ৬ বার পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ওবিসি প্রার্থীদের জন্য পরীক্ষায় বসার বয়সের সীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত। এবং এই বয়সের মধ্যে তাঁরা মোট ৯ বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান।
সোমবার রাতে মহিলা পুলিশের একটি তদন্তকারী দল পৌঁছে যায় পুণেতে পূজার বাড়িতে। ৩ মহিলা পুলিশ আধিকারিক রাত ১১টা থেকে টানা দু’ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তদন্তকারীদের স্ক্যানারে এখন মূলত দু’টি বিষয়। পূজার পেশ করা ওবিসি শংসাপত্র এবং নিজেকে পার্সন উইথ বেঞ্চমার্ক ডিসঅ্যাবিলিটি বা পিডব্লুবিডি হিসেবে যে দাবি তিনি করেছিলেন, তার সত্যতা। দৃষ্টি-প্রতিবন্ধী হিসেবে নিজেকে দাবি করেছিলেন পূজা। জানিয়েছিলেন নিজের মানসিক অসুস্থতার কথাও। পুণে পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে পূজার পেশ করা মেডিক্যাল সার্টিফিকেটের যথার্থতা। ইন্টারেস্টিং বিষয়, ২০০৭ সালে পুণে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সময় ডাক্তারের সার্টিফিকেটে কিন্তু সম্পূর্ণ ফিট বা সুস্থ বলা হয়েছিল পূজাকে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কোনও উল্লেখই ছিল না তাতে। সাম্প্রতিক তদন্তে উঠে এসেছে, আরও এক অজানা তথ্য। ২০২২ সালে আংশিক প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটের জন্য পুণের হাসপাতালে আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে চিঠি দিয়ে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়, এই প্রতিবন্ধকতার শংসাপত্র দেওয়া আদৌ সম্ভব নয়। অথচ দিল্লির এইমস তাঁকে ৬ বার তলব করলেও তিনি স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য যাননি সেখানে। এমনকী নিজেকে করোনা-পজিটিভ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন পূজা। প্রশ্ন উঠেছে, এরপরেও তিনি কীভাবে আইএএস অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হলেন।