সুমন করাতি হুগলি: ইউরোপের উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস জয় করে বাড়ি ফিরলেন উত্তরপাড়ার পর্বতারোহী শুভম চট্টোপাধ্যায়। শুভম এর আগে মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো জয় করেছেন। প্রথম কোনও ভারতীয় হিসেবে শুভম আগ্নেয় পর্বত শৃঙ্গের শিখরে উত্তর দিক দিয়ে আরোহণ করে সেই দিক দিয়েই নেমেছেন, যা নজির সৃষ্টি করেছে পর্বতারোহণের ইতিহাসে।
আরও পড়ুন-একদিকে লেদার কমপ্লেক্স, অন্যদিকে শাড়ি ও হস্তশিল্প, বিপণনে নয়া দিগন্ত শপিংমল আলিপুরে
ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস, যা অবস্থিত রাশিয়ায়। সেই শৃঙ্গ জয়ের উদ্দেশ্যে পয়লা জুলাই বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন হিন্দমোটরের বাসিন্দা শুভম চট্টোপাধ্যায় ওরফে রনি। ৯ দিনের কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে ৫,৬৪২ মিটার উচ্চতায় পর্বত শৃঙ্গে উঠে নজির সৃষ্টি করলেন তিনি। ৯ দিনের এই অভিযানে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল তরুণ পর্বতারোহীকে। একদিকে তুষার ঝড়, অন্যদিকে পাহাড়ি বরফের গর্ত, তারপর ভাষাগত সমস্যা অতিক্রম করে ৯ জুলাই পাহাড়ের শিখরে দেশের জাতীয় পতাকা ওড়ান তিনি।
শুভম জানান, তাঁর কাছে মাউন্ট এলব্রুস বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে সমস্ত বাধা অতিক্রম করে শৃঙ্গে পৌঁছেছেন তিনি। শুভমের কথায়, ভারতীয় হিসেবে তিনিই প্রথম এই দুর্গম পর্বত শৃঙ্গের উত্তর দিক দিয়ে উঠে আবারও উত্তর দিক থেকেই নিচে নেমেছেন। তার আগে অন্য একজন ভারতীয় এই পর্বতারোহণ করেছিলেন। তবে তিনি উত্তর দিক থেকে উঠে দক্ষিণ দিক থেকে অবতরণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন-সাজ-সাজ রব হাওড়ায় প্রস্তুতি ভিড় সামলাতে, একুশে কর্মীরা আসবেন রেল ও জলপথে
এই অভিযানে শুভমের সহ-শেরপারা সকলেই রাশিয়ান হওয়ায় তাঁদের সঙ্গে ভাষাগত সমস্যা হচ্ছিল। তারপর চ্যালেঞ্জ ছিল তুষার ঝড় ও পাহাড়ের বরফের অদৃশ্য গর্ত। এই দুর্গম শৃঙ্গে উঠতে গিয়ে তাঁকে মুখোমুখি হতে হয়েছিল পাহাড়ি ফ্রস্টবাইটের। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁর মুখের চামড়া। কিন্তু কোনও কিছুতেই হার মানেননি তিনি। সকলে মিলে একে অপরকে সাহায্য করে তাঁরা এই দুর্গম শৃঙ্গ জয় করতে পেরেছেন। যদিও পর্বতের হাতছানি এড়ানো যায় না, তাই বাড়ি ফিরেই পরের অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তিনি। পরের মিশনে ওশিয়ানিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছানোর টার্গেট রয়েছে তাঁর। শুভমের স্বপ্ন, সবথেকে কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীর সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ও সাতটি আগ্নেয়গিরি আরোহণ করা। এদিকে শুভমের এই সাফল্যের পর তাঁর মা বলেন, ছেলেকে নিয়ে আমার গর্ব হয়। তবে ভয়ও লাগে। যখন সাত আট দিন কথা হয় না, তখন খুব চিন্তা হয়, শুধু ঈশ্বরকে ডাকি। বাড়িতে খুব একটা বেশি থাকে না। প্রতি বছর কোথাও না কোথাও যায়। বাড়ি ফিরেই প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে কোথায় যাবে। ওর স্বপ্ন সার্থক হোক।