প্রতিবেদন: বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই নিটকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ (Parliament)। বিরোধীদের আক্রমণে রীতিমতো নাজেহাল সরকারপক্ষ। দাবি উঠল শিক্ষামন্ত্রীর ইস্তফার। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায়, সাজদা আহমেদ-সহ ৩১ জন সাংসদ জানতে চান, কেন্দ্রীয় এজেন্সি পরিচালিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনও রেকর্ড সরকারের কাছে আছে কি না। যদি তাই হয়, গত ১০ বছরে এই ধরনের প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিবরণ চাই। এছাড়াও সাংসদরা জানতে চেয়েছিলেন, দেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় যোগ্যতা ও এন্ট্রান্স টেস্ট (নিট-ইউজি) পরীক্ষায় ফলাফলের অব্যবস্থাপনা এবং কথিত কারচুপির ঘটনায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ সরকারের কাছে আছে কি না। রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেল সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবকে। একের পর এক প্রশ্নবাণে সরকারকে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, কনৌজের সাংসদ অখিলেশ যাদব৷ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের পদত্যাগের দাবিতেও সরব হন তাঁরা৷ উত্তরে অজুহাত খাড়া করতে গিয়ে উল্টে বিরোধীদের হাতেই অস্ত্র তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বলছি, গত সাত বছরে নিট পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে৷ প্রধান বিচারপতি নিজে এই মামলার বিচার করছেন৷ সুপ্রিম কোর্টের সামনে সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে৷ এনটিএ গঠনের পর ২৪০টি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখনও কোনও বেনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি৷ শিক্ষামন্ত্রীর মুখে এই কথা শুনেই হাসির রোল ওঠে সভায়। এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রে রে করে ওঠেন বিরোধীরা। সভায় শুরু হয় তুমুল হইচই। কেন্দ্রকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব বলেন, সারা দেশের ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করছে৷ একাধিক জায়গায় দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় অনেককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ এই সরকারের আমলে প্রশ্নফাঁস একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ একাধিক কেন্দ্রে প্রশ্নফাঁস হয়েছে, কারচুপি হয়েছে পরীক্ষার ফলেও৷ ক’টা জায়গায় শিক্ষামন্ত্রী খবর নিয়েছেন? ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ দোলাচলে, এই সময় দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী রাজনীতি করছেন৷ উনি শিক্ষামন্ত্রীর পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন৷ উনি শিক্ষার দায়িত্বে থাকলে থাকলে ছাত্রছাত্রীরা কখনওই ন্যায় বিচার পাবে না। রাহুল গান্ধীর মন্তব্য, নিজেকে ছাড়া প্রত্যেককে কাঠগড়ায় তোলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ উনি এই পদের যোগ্য নন৷ শুধু নিট নয়, দেশের প্রতিটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষাতেই সমস্যা রয়েছে৷ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন৷ প্রশ্নফাঁস গুরুতর সমস্যা৷ আমার মনে হয় না, এই সমস্যার গভীরতা বোঝার ক্ষমতা শিক্ষামন্ত্রীর রয়েছে৷ সবমিলিয়ে এদিন সংসদে নিট-দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের আক্রমণে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়ে সরকারপক্ষ।
এদিকে লোকসভায় তৃণমূল দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার জানিয়েছেন, বাজেটের উপর আলোচনার জন্য মোট ২০ ঘণ্টা বরাদ্দ হয়েছে। তৃণমূল-সহ বিরোধীরা রেল এবং শিক্ষার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন। এর বাইরেও আমরা এমএসএমই এবং স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছি।
আরও পড়ুন- রাজ্যে কর্মশ্রী প্রকল্পে কর্মদিবস তৈরির শীর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর