প্রতিবেদন : দেড়শো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের কোটা-বিরোধী আন্দোলনে আপাতত কিছুটা সুরাহা মিলেছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের দৌলতে। হিংসার পথ এড়িয়ে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরার বার্তা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই আবেদন জানিয়েছে হাসিনা সরকারও। কিন্তু তারপরেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এখনও ইতিউতি আন্দোলন চলছে। বিরোধীদের তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রদের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে বিরোধীরা দেশের ক্ষতি করছে। হিংসার আগুন জ্বালিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা পূরণ করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের ভাবমূর্তি ফেরানো এবং শান্তি ফিরিয়ে আনাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
আরও পড়ুন-প্রতিশ্রুতিই সার, স্বাস্থ্য বাজেটে প্রাপ্তি নামমাত্র
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও সরকারি বিজ্ঞপ্তির পরেও আরও কয়েক দফা দাবি সরকারের কাছে রেখেছেন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা। ফলে বাংলাদেশে কার্ফু এখনও বহাল রয়েছে। বন্ধ ইন্টারনেটও। হিংসার অভিযোগে ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। দুদিন আগে শুধু ঢাকাতেই ৫০০-র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অবস্থায় দেশকে অচল করে রাখা আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলন থামাতে এবং জনজীবন স্বাভাবিক করতে কঠিন পদক্ষেপে পিছপা হবে না সরকার।
আরও পড়ুন-‘মা ক্যান্টিন’ চালু এবার হাওড়া জেলা হাসপাতালে
রবিবার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কোটা সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের সংরক্ষণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এবার থেকে ৯৩ শতাংশ নিয়োগই হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি সাত শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিরা পাঁচ শতাংশ এবং অনগ্রসর শ্রেণি ও প্রতিবন্ধীরা এক শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের সংরক্ষণ সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেওয়ার দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। তবে আদালত সেই নির্দেশ দেয়নি। কিন্তু রবিবারের রায়ের পরেও অশান্তি থামেনি বাংলাদেশে। কার্ফু জারি রেখেছে সরকার। আন্দোলকারীরা এখনও যে সমস্ত দাবি জানিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম মন্ত্রীদের পদত্যাগ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে অনেক ছাত্র নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদেরও ফিরিয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। স্বাভাবিকভাবেই হিংসাত্মক আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় প্রভাব পড়েছে। শিল্প-কারখানাগুলিও সরকারি নির্দেশে বন্ধ রয়েছে। দু-পক্ষের চাপান-উতোরে সরকার কতদূর কড়া মনোভাব বজায় রাখতে পারে সেটাই দেখার।