সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার : আগের বাজেটে কোনও সুনির্দিষ্ট দিশা দেখানো হয়নি। এবারও তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম বাজেটে ব্রাত্য রয়ে গেল চা-বাগান। উত্তরের চা-শিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটে একটি কথাও খরচ করলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এবারের বাজেটেও দুয়োরানিই হয়ে রইল উত্তরের চা-শিল্প। উত্তরের চা-শিল্প নিয়ে বছরের পর বছর সরাসরি বঞ্চনাই করে গেল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের এই বাজেট ঘোষণার পরই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ২০২১-২০২২-এ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘোষণা হয়েছিল বেঙ্গল এবং অসমের চা-বলয়ের জন্য এক হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে। সে প্রতিশ্রুতি বাদ দিলেও ২২-২৩ এবং ২৩-২৪-এর বাজেটে চা-বলয় শব্দটাই ছিল না। অর্থমন্ত্রী ফের নতুন করে ২৪-২৫ আর ২৫-২৬-এ প্রধানমন্ত্রী চা-শ্রমিক যোজনার একটি গালভরা নাম দিয়ে ফের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আগে ২১-২২-এর টাকাটা দিন তারপর প্রতিশ্রুতি দিন।
আরও পড়ুন-ভোটে জিততে বিজেপির হুমকি
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে আলিপুরদুয়ার এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা চা-শিল্পের জন্য এক হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের ঘোষণা করে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায় সেদিন চা-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই ঘোষণা যে শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল সেটা মানুষ বুঝতে পারে নির্বাচন মিটে গেলে। এই দেশে চা-শিল্প এমন একটি শিল্প, যেখানে প্রত্যক্ষ ভাবে সব থেকে বেশি শ্রমিক কাজ করে। এবং এই শিল্পের মাধ্যমে একটি ভাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় দেশের। এবছর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা ও পোকার আক্রমণে অসম ও উত্তরবঙ্গে চায়ের উৎপাদন দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা আশা করেছিলেন যে, এবারের বাজেটে চা-শিল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ভাল কিছু চিন্তাভাবনা করবে। কিন্তু বাজেট দেখবার পর কার্যত হতাশা ব্যক্ত করেছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলেই। এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার মাঝের ডাবরি চা-বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধর বলেন, প্রাকৃতিক কারণে এবার উত্তরবঙ্গ ও আসামে চায়ের উৎপাদম খুব মার খেয়েছে। তাই আমরা আশা করেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের এই চা-শিল্পের জন্য কিছু সহায়তা ঘোষণা করবে, কিন্তু বাজেট দেখে আমরা হতাশ।