মন নিয়ে…

মনের নাগাল পাওয়া কঠিন। সে কখন যে কী চায়, বোঝা মুশকিল। মন ভাল রাখার জন্য রয়েছে নানা উপায়। চিন দেশের একটি কোম্পানি কর্মচারীদের দিচ্ছে মন খারাপের ছুটি। দক্ষিণ কোরিয়ায় সন্তানদের মনের ভাষা বোঝার জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। যা রীতিমতো অনুসরণযোগ্য। আজ ‘রবিবার’-এর পাতায় দুটি প্রতিবেদনে সাজিয়ে দেওয়া হল ‘মন’-এর কথা ‘মনে’র খেয়াল রাখে কেউ! মন বলতে শুধুই অনেকগুলো অনুভূতির সমাহার; কিন্তু পার্থিব জীবনে তাকে ঠিক কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় সেটা অকাল্পনিক; তার উপর কর্মক্ষেত্রে মন খারাপের ছুটি— সে তো বিকেলে ভোরের ফুল! তাই ‘মন’ নিয়ে মন দিয়ে আলোচনায় তুহিন সাজ্জাদ সেখ

Must read

‘গল্প’ আবার সত্যি হয় নাকি—
যা সত্যি সে তো জীবন! তবে সেই জীবনেও ‘মনে’র খেয়াল রাখে কেউ? নাহ্ তা শুধু ‘গল্পে’ই সম্ভব! আচ্ছা মন কোথায় থাকে বলুন তো— ওহ্ হৃদয়ে। কিন্তু এটা তো ওই হৃৎপিণ্ড নামক অঙ্গটির কাব্যনাম; হৃৎপিণ্ড রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থায় পাম্প হিসেবে কাজ করে সারা শরীরে অবিরাম রক্ত প্রবাহ সচল রাখে। আমরা জানি হৃৎপিণ্ড ওরফে হৃদয়ের যতদূর সম্ভব ক্ষয় আছে; তবে ভাল লাগা খারাপ লাগা অনুভূতি আছে কি না সন্দেহ! কিন্তু মনের আছে; মনের জোর আছে, উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে, সৃষ্টি আছে, আবার মন খারাপও রয়েছে! হৃদয়কে চোখে দেখা যায়, স্পর্শ করা যায়, কিন্তু মন…? সে তো বাতাসের মতো অদৃশ্য অনুভূতি। এটা সত্যি হৃদয় যদি খারাপ হয় তাহলে কর্মবিরতি তো দূরের কথা, তার খেয়াল রাখতে পুরো রাজসূয় হয়ে যায়; কিন্তু মনখারাপের ছুটি… কর্মবিরতি?! নাহ্, বোধহয় মন ‘গল্প’ই।

আরও পড়ুন-পাশে আছি, ওবামার বার্তা পেয়ে স্বস্তিতে কমলা হ্যারিস

তবে এবারে সত্যিকারের গল্পই রচনা করে গোটা বিশ্বের মানবসভ্যতাকে এককথায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে ওই সুদূর চিন দেশের সুপার মার্কেট চেইন কোম্পানি ‘ফ্যাট দং লাই’। এই কোম্পানি তার কর্মচারীদের জন্য বার্ষিক দশদিন মন খারাপের জন্য সবৈতনিক ছুটি নির্দিষ্ট করেছে; এই ছুটি ওই কোম্পানির যে কোনও কর্মচারী যে কোনও সময়, কোনওরকম ম্যানেজারের অনুমতি বা পরামর্শ ছাড়াই নিতে পারেন। শুধুমাত্র ভাল লাগছে না, কিংবা মন খারাপ বা কাজে মন বসছে এই কারণেই এই ছুটি বরাদ্দ। ওই কোম্পানির ধারণা এই অবসর তার কর্মীদের মধ্যে কর্ম এবং জীবনের সামঞ্জস্য বজায় রেখে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য চাঙ্গা করে তুলবে, যার ফলে কর্মীরা নতুন উদ্যোগ-উদ্দীপনায় পুনরায় কাজে পূর্ণ মনোনিবেশ করতে পারবেন। এই সিদ্ধান্ত সত্যিই ব্যতিক্রমী; কেননা, চিরাচরিত মানবসভ্যতায় মন খারাপের যত্ন নেওয়া ওই সোনার পাথর বাটির মতো!

আরও পড়ুন-আমনচাষের জন্য জল ছাড়া শুরু করল ডিভিসি

দেখতে দেখতে প্রায় দু’বছর আট মাস অতিক্রান্ত, আমার আব্বা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, গাঁয়ের গন্ধে আমাদের বেড়ে ওঠা, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার, সবসময় একটা পাতলা অভাবের চাদর মুড়িয়ে দিয়েই আমাদের পার হয়ে যায় বছরের প্রায় সব ক’টি ঋতুই, সকালে বাসি রুটি কিংবা পান্তা খাওয়ার অভ্যাসটা আজীবনের, কিন্তু আজ জানতে পারলাম আমার মায়ের ভাল্লাগে না পান্তার পানসে আমানি, সকালে ভিজে ভাত খেতে আমার মায়ের মন খারাপ করে! সঙ্গে আরও অনেক কিছুই ভাল লাগে না। কিন্তু আমরা এতবছরের মধ্যেও কোনওদিন আমার মায়ের মন খারাপের খোঁজ রাখিনি। দুর্ভাগ্য!!! কারণটা অভাব কিংবা বিষয়টি নিছকই অগোছালো— মন ভাল না খারাপ সেকথা কেউ ঘটা করে জিজ্ঞেস করে নাকি! শরীর খারাপ হলে না হয় একটা ব্যাপার ছিল—
নাহ্, আমরা ওই পুরনো অভ্যাস ঝেড়ে ফেলে এখন নানাভাবে মায়ের ‘মন’ বুঝে চলার চেষ্টা করি। তবে এখানে মনের কথা বলতে ধনী দরিদ্র কিংবা মেয়ে বা ছেলে কোনও ভেদাভেদ নেই, এই জগৎসংসারে আমরা কেউই মন খারাপের ব্যাপারে সচেতন নই; অথচ এই মন-ই সভ্যতার অন্যতম পরিচালক। আমার মায়ের মতো বাড়ির বউ ‘হাউস ওয়াইফ’ ওরফে আধুনিকা ‘হোম মেকার’ কিংবা বাড়ি ও অফিস আদালতের কাজের মেয়ে, ঝাড়ুদার, কেয়ার টেকার, পরিচায়িকা, মালি, ড্রাইভার, কর্পোরেশনের সাফাই কর্মী, দুধওয়ালা, পেপারওয়ালা, ভাঙড়িওয়ালা, ফেরিওয়ালা, ফুচকাওয়ালা, বাদামওয়ালা, বুটপালিশ করা মুচি, শ্মশানের চণ্ডাল এবং এঁদের মতোই আরও অনেকেই আছেন, তাঁদের কারও মনের খোঁজ কেউ রাখে না! এঁরা তো সমাজের সবচেয়ে নিচুতলার শ্রমিক; এঁদের কথা না হয় বাদই দিলাম— কিন্তু আমাদের দেশের সরকারি-বেসরকারি সব উচ্চপদস্থ কর্মচারীদেরও কি মনের খোঁজ রাখে কেউ? মনে হয় না।
তবে ওই চিনা কোম্পানি তার কর্মচারীদের মনের যত্ন নিয়েছে বইকি। বছরে দশদিন মন খারাপের ‘স্যাড লিভ’ বা ‘মুড লিভ’ ছাড়াও সর্বাধিক চল্লিশ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছে ওই কোম্পানি তার শ্রমিকদের জন্য, সঙ্গে আবার অতিরিক্ত পাঁচদিন হলিডে চাইনিজ নিউ ইয়ার উপলক্ষে। চিন দেশের প্রচলিত কঠিন ৯৯৬ কর্মসংস্কৃতি ভেঙে দিয়ে লেবারদের সপ্তাহে পাঁচদিন সাত ঘণ্টা করে কাজ করার স্বাধীনতা দিয়েছে ফ্যাট দং লাই, যেখানে দেশের নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে ছ’দিন সকাল ন’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত কাজ করতে হত।

আরও পড়ুন-চায়ে আমের স্বাদ, বাজার মাতাবে এবার ডুয়ার্সের ম্যাংগো টি

কর্মীদের এই অস্বাস্থ্যকর কর্মপন্থা থেকে বিরতি দিয়েছে এই সুপার মার্কেট চেইন।
কবি বলেছেন, আজ আকাশের মন খারাপ,/ হয়তো কাঁদবে ভীষণ,/ জানিনা কিসের দুঃখ তার,/ নাকি সে ও আমার মতন। সত্যিই তো আমরা এই সংসারে কেউই কারও মন বোঝার চেষ্টা একেবারেই করি না; তবে গোটা পৃথিবীর মধ্যে প্রথম এই চাইনিজ কোম্পানি সেটা করে দেখাল। তবে ফ্যাট দং লাই এটাই প্রথম এমন নোবেল কাজ করেছে তা নয়, ওরা গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে তাদের কর্মচারীদের যে কোনওরকম ক্রেতাদের দ্বারা অসম্মান বা ভয় দেখানোর জন্য ৫০০০ ইউয়ান বা প্রায় ৯৫০ সাংহাই ডলার উৎসাহ ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করে। এইবছর মার্চ মাসে চিনের হেনান প্রদেশে একটি সপ্তাহব্যাপী সুপার মার্কেট কনভেনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই কোম্পানির চেয়ারম্যান জনাব ইউ দং লাই বলেন, মানব প্রকৃতির ধর্ম অনুযায়ী যে কোনও মানুষের যখন খুশি যেদিন খুশি মন খারাপ হতেই পারে, আশ্চর্যজনকভাবে আমাদের এই ছুটি তাদেরকে আরও একবার আনন্দ দেবে, তারা বুঝবে তাদের প্রতি কোম্পানির অটুট বোঝাপড়া এবং সাপোর্ট সিস্টেম। এতে কোম্পানির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
গত ২৬ মার্চ অফিসিয়ালি ওই কোম্পানির পক্ষ থেকে এই ‘স্যাড লিভ’ বা ‘ভাল্লাগছে না’ ছুটি ঘোষিত হয়।
খবরটি সমগ্র পৃথিবীর মানব জাতিকে বেশ নাড়িয়ে দিয়েছে, কেউ তো আগে এমন করে ভাবেনি কখনও। আমাদের সমস্ত উত্তেজনা উদ্দীপনা মনের দাস; তাই মন ভাল থাকলে কিংবা মনের সকল অন্তর্ভুক্তিগুলো মিটলে পরে আমাদের মনোযোগ গভীর হয়, যা সৃষ্টিশীলতা কে অনেকাংশেই বাড়িয়ে তোলে। কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব যথেষ্ট লক্ষণীয়। তবে মন খারাপ হতেই পারে। সাধারণ মানুষ তো বটেই, তার উপর বিশেষ করে সংগঠিত এবং অসংগঠিত শ্রেণির শ্রমিকদের দৈনন্দিন কর্মজীবনে নানাভাবে মন খারাপ হয়ে থাকে, দীর্ঘদিন ধরে চলতে চলতে হতাশায়ও ভোগে অনেকেই। কর্মক্ষেত্রে বস বা সহকর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, মানিয়ে নিতে অসুবিধা, কর্ম নিরাপত্তার অভাব, কাজের চাপ, রিসোর্স এবং দক্ষতার অভাব অনেক সময় লেবারদের স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা বাড়ায়; খুব স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ হয়। এই মন খারাপ কর্মীদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধন করে।
অথচ একজন শ্রমিকের দৈহিক এবং মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতা একটি কোম্পানির সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার জন্য খুবই জরুরি। কর্মচারী এবং কোম্পানির মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ভাল হলেই কোম্পানির উন্নয়ন সহজ এবং সুলভ হবে। একথা মাথায় রেখেই ফ্যাট দং লাই এইরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবছরই ৫ এপ্রিল ওরা তাদের কর্মীদের মন ভাল রাখার কথা ভেবে কোম্পানির খরচায় ইউরোপ এবং জাপানে বিদেশ ভ্রমণের বন্দোবস্তও করেছে।

আরও পড়ুন-অগোছাল মোহনবাগান, আজ নামছে ডুরান্ডে

এখানেই শেষ নয়, এই কোম্পানিটির আরও অনেক সুনাম রয়েছে। জনাব ইউ দং লাই ও তাঁর আরও দু’জন সঙ্গী মিলে চিনের হেনান প্রদেশে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম একটি স্টোর খোলেন প্যাকেজ্ড খাবার বিক্রি করার জন্য; তবে তাঁদের মানবিকতা এবং বুদ্ধিমত্তার জোরে খুব তাড়াতাড়ি সেই ব্যবসা অত্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘ফ্যাট দং লাই ট্রেড কোং’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ওঁরা ২০২০ খ্রিস্টাব্দে উহান রেড ক্রস সোসাইটিকে ৭.২৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেন। এই কোম্পানি খরিদ্দারদের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং সামান্য অজুহাতে তাঁদের মন রাখার চেষ্টা করে। ফ্রি পার্কিং ব্যবস্থা, উপহার সামগ্রী পাঠানো, ক্রেতাদের রক্তচাপ মাপা, তাঁদের হ্যান্ডব্যাগ-এর যত্ন নেওয়া, পোষ্যদের খাবারের ব্যবস্থা করা প্রভৃতি মানবিক পরিষেবা দিয়ে থাকে এই কোম্পানি। এইজন্যই চিনের ব্যবসায়িক মহলে ফ্যাট দং লাই কে ‘দ্য হাইদিলাও অব দ্য সুপার মার্কেট ইন্ডাস্ট্রি’ বলা হয়; হাইদিলাও বলতে একটি হটপট রেস্টুরেন্টকে বোঝায় যেখানে ক্রেতাদের ম্যানিকিউর এবং জুতো পালিশের মতো পরিষেবাগুলো প্রদান করা হয়।
আসলে মনখারাপ শুধু প্রেমের কারণেই হয় না। মাঝে মাঝে প্রিয় মানুষদের হারানোর ভয়, ফ্যামিলির চাপ, টাকা-পয়সার চাপ, কেরিয়ারের চিন্তা, একাকিত্ব, ভবিষ্যৎ ভাবনা— এসব নিয়েও হয়! বৈশ্বিক স্তরে, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ১৫% কর্মক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তবে এই সংখ্যাটা ভারতবর্ষেও যথেষ্ট, প্রায় ১৪% প্রাপ্তবয়স্ক মনের বিকারগ্রস্ত এবং মোট জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন লোক ডিপ্রেশনে ও ৩৮ মিলিয়ন লোক অ্যাংজাইটিতে ভোগেন। তাজ্জব ব্যাপার, এইসব ভুক্তভোগীদের অধিকাংশ জনই ভারতবর্ষের মোট শ্রমিকদের যে ৯০% অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন। এর পেছনে রয়েছে আমাদের দেশের অনুন্নত কর্মসংস্কৃতি। বেকারত্ব, অস্থিতিশীল কর্মসংস্থান, কর্মক্ষেত্রে ভেদাভেদ, নিরাপত্তাহীন কর্মপরিবেশ, কম মজুরি, লিঙ্গভেদ, আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষার ঘাটতি, অনিয়মিত ও দীর্ঘসূত্রতা, আইনি নিরাপত্তার অভাব, বিচ্ছিন্ন হয়ে কাজ করা, যোগ্য সম্মান না মেলা প্রভৃতি কারণেই কর্মীদের উপর মানসিক চাপ পড়ে। ক্রমশ তাঁরা মানসিক অসুস্থতার শিকার হন। ফলস্বরূপ তাঁদের মধ্যে সুখ-শান্তির অনুভূতি কমে যায়, বিষণ্ণতা চেপে ধরে, মেজাজ খিটখিটে হয়, শরীর ও মনের যোগসাজশ কমে আসে, সন্তুষ্টি আসে না, জীবনযাত্রার গুণমান কমে যায়, হতাশা নেমে আসে, শরীর খারাপ হতে শুরু করে, হতাশার অন্ধকার গ্রাস করে, ভাল-মন্দের বিচার ক্ষমতা থাকে না, আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে! ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশের মোট আত্মহত্যার প্রায় ২৬ শতাংশই দিনমজুর।

আরও পড়ুন-আজ প্রথম টি-২০, চোট পেলেন সিরাজ

আমাদের দেশে আইটি সেক্টরের কথাই হোক কিংবা তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মী আশা দিদিদের কথাই হোক, কেউই তাঁদের মনের কথা শোনে না। অথচ ভারতবর্ষের মোট ওয়ার্কিং উইমেনের প্রায় ৯৫ শতাংশই অসংগঠিত শ্রেণির। এই মানসিক বিপর্যয়ের কারণে আমাদের মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়; সমীক্ষায় উঠে এসেছে আমাদের দেশে সামগ্রিক স্বাস্থ্য খাতে কোনও ব্যক্তির ‘আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার’ প্রায় ৪৭.১%। তাই এ-বিষয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। আন্তর্জাতিকস্তরে মানসিক স্বাস্থ্যকে মানুষের সর্বজনীন মানবাধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেল্থ ডে পালন করা হয়। ভারতবর্ষের শ্রমিকদের মানসিক সুস্থতার কথা মাথায় রেখে, সেই ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ন্যাশানাল মেন্টাল হেল্থ প্রোগ্রাম, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে মেন্টাল হেল্থ কেয়ার অ্যাক্ট, ২০২০ খ্রিস্টাব্দে স্যোশাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৪/৭ টোল ফ্রি হেল্পলাইন ‘কিরণ’ এবং ২০২১ খ্রিস্টাব্দে মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নর্মালসি অগমেনটেশন সিস্টেম অ্যাপ চালু করা হয়েছে। অতঃপর আমাদের সবাইকে মনের ব্যাপার কোনও প্রকার উদাসীনতা না দেখিয়ে যত্নশীল হওয়া উচিত।

Latest article