কণ্ঠরোধ নিয়ে প্রস্তাব

এদিকে, প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতায় মুখর হন বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ করছেন তা যথার্থ নয়।

Must read

প্রতিবেদন : নীতি আয়োগের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাইক বন্ধ করে দেওয়ার তীব্র নিন্দা করল রাজ্য বিধানসভা। সোমবার বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতে ওই প্রস্তাব এনে আলোচনার দাবি জানান মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। সেই দাবি মেনে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনার অনুমতি দিলে মানসবাবু বলেন, গত ২৭ তারিখ নীতি অয়োগের বৈঠকে যে অগণতান্ত্রিক আচরণ করা হয়েছে গোটা দেশ তাঁর সাক্ষী। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কোনও অসত্য কথা বলেননি। উনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাই বাংলার কথা বলেছেন। নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান কি এখনও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন? মোদি নিজে কী করেছেন? মাইক বন্ধ করে দেওয়ার রেওয়াজ নীতি আয়োগে আগে ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী যা করেছেন, তা মানুষের স্বার্থে। তিনি আগে প্ল্যানিং কমিশনে কথা বলে বাংলার দাবি আদায় করে আনতেন। এখন তা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকার স্বৈরাচারী। সারা ভারত এর জন্য ছি ছি করছে।’

আরও পড়ুন-লজ্জা নেই! ভোটে হেরে ওরা বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছে, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বাংলার মানুষ বরাবর মমতাকেই চেয়েছেন। নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন করেনি এই রাজ্য। নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতাকে বলতে দেওয়া হবে না, সেটাই স্বাভাবিক। সত্যিটা বিজেপি শুনতে চাইছে না, তাই ওয়াকআউট। ওদের ২০০ কিংবা ৪০০ পারের স্লোগান মুখ থুবড়ে পড়েছে। আসলে কেন্দ্রীয় সরকার চায়, এই দেশ হোক শুধু কর্পোরেট সংস্থাগুলির জন্য। মমতা তার প্রতিবাদ করেছেন। মোদি মন কি বাত-এ শুধু নিজের মনের কথা বলেন। আরও কারও কথা শুনতে চান না। এ-ভাবে তিনি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কলুষিত করছেন।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, গত ৩ বছরে বিজেপি বেশিরভাগ সময়েই বিধানসভার বাইরে কাটিয়েছে। কোন কথা অধিবেশনে বলতে হবে, কোনটা বলতে হবে না, তা ওরা জানে না।

আরও পড়ুন-ভয়াবহ ভাঙন সামশেরগঞ্জে, তৎপর প্রশাসন

এদিকে, প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতায় মুখর হন বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ করছেন তা যথার্থ নয়। যদি সংবাদপত্রের রিপোর্ট নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হয় তবে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ধর্ম-সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে আলোচনা হবে না কেন? তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। এর পর একে একে লাভলি মৈত্র, নির্মল ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ প্রস্তাবের সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন। প্রস্তাবের বিরোধিতায় বক্তব্য রাখেন দীপক বর্মন, শিখা চট্টোপাধ্যায়, অম্বিকা রায় প্রমুখ। এদিকে আলোচনা চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলে বিজেপি সদস্যরা স্লোগান দিতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে তাঁরা বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজের সংসদীয় দায়িত্ব পালন করতে নীতি আয়োগের বৈঠকে গেছিলেন। সেখানে তাঁকে বক্তব্য রাখতে বাধা দেওয়া হয়েছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাই সরকার পক্ষের আনা এই প্রস্তাবে তাঁর পূর্ণ সমর্থন আছে বলে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, বিধানসভায় গৃহীত এই নিন্দা প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

Latest article