সোহিনী সাউ: মোহনবাগান অন্ত প্রাণ বাঙালির কাছে সেরা উৎসব মোহনবাগান দিবস। তাই প্রতিবছরের মতো এবারও মহাসমারোহে মোহনবাগান দিবসের আয়োজনে ত্রুটি রাখলেন না সবুজ-মেরুন কর্তারা। ক্লাব তাঁবুতে সন্ধ্যার অনুষ্ঠান। যেখানেই চোখ যায়, সেখানেই ময়দানের তারকাদের অনুপ্রবেশ। সৈয়দ নইমুদ্দিন থেকে সুব্রত ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু থেকে মানস ভট্টাচার্য, কম্পটন দত্ত। কে নেই তালিকায়! ক্রীড়া প্রশাসকদের মধ্যে সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত, পড়শি ক্লাব ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান ক্লাবের কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এদিন।
আরও পড়ুন-বিমানবন্দরের ছাদ ফুটো কেন, রাজ্যসভায় প্রশ্ন জহরের
তবে সবকিছু ছাপিয়ে শতবর্ষপ্রাচীন ক্লাবের ঐতিহ্যের সন্ধ্যাটা হয়ে রইল সৌরভময়। এবারের মোহনবাগানরত্ন তুলে দেওয়া হল প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে। ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্তের হাত থেকে রত্নসম্মান পেয়ে আপ্লুত সৌরভ বলেন, “মোহনবাগান ক্লাব বাংলা তথা ভারতকে অনেক রত্ন উপহার দিয়েছে। আরও রত্ন রয়েছে। আজ আমি পাচ্ছি, কাল আরও অনেকে পাবে। মোহনবাগানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক স্কুলে পড়ার সময় থেকে। যখন বাবার মেম্বারশিপ কার্ড নিয়ে খেলা দেখতে আসতাম। এই রত্ন পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। এই স্মৃতি থেকে যাবে আজীবন।”
সৌরভ আরও বলেন, “আমি চাই বাংলার ফুটবল এগিয়ে যাক। অনেককে বলতে শুনি, বাংলার ফুটবলে টাকা নেই, পরিকাঠামো নেই। এসব ভুল। স্কিল শেষ কথা বলে। ১৬ বছরের স্পেনের ইয়ামাল যদি ইউরো খেলতে পারে, তাহলে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর মধ্যে ১৫ জন একদিন বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না কেন?” ক্লাবের তরফ থেকে সৌরভের হাতে সাম্মানিক চেকও তুলে হয়েছিল, তবে তিনি তা ফিরিয়ে দেন ক্লাব পরিকাঠামোয় কাজে লাগানোর জন্য।
আরও পড়ুন-শিক্ষার দায়িত্বে আসুন শিক্ষিতরাই: ডেরেক
অরুপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা, অতীন ঘোষ, অরূপ রায়, মদন মিত্রের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও এদিন যেন নিজেদের গুরুগম্ভীর খোলস ছেড়ে মোহনবাগান প্রেমে মেতে উঠেছিলেন। ক্রীড়়ামন্ত্রী বলেন, “আমার বাবা, মা বরিশালের হলেও আমি কিন্তু ৩২ বছর ধরে মোহনবাগানের সদস্য। তবে মোহনবাগান-সহ ময়দানের সব ক্লাবের কাছে আমার অনুরোধ, বাংলার ফুটবলারদের আরও বেশি করে তুলে আনুন। বারো বছরে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা উঠেছে মাত্র দু’বার। শেষ দু’বছরে যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি। এই লজ্জা কিন্তু লুকানোর নয়।” ক্লাবের সহ সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, “মোহনবাগানের ঐতিহ্য নিয়ে নতুন করে বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই, মোহনবাগানের অমর একাদশের লড়াই পাঠ্যপুস্তকে তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য।”