প্রতিবেদন : এনসিবিতে চাকরি পেতে জনজাতির ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়েছিলেন সমীর ওয়াংখেড়ে। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করেছিলেন এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক। বৃহস্পতিবার নিজের দাবির সপক্ষে প্রমাণও পেশ করলেন মন্ত্রী। এদিন এনসিপির পক্ষ থেকে ট্যুইটারে সমীর ওয়াংখেড়ের দুটি স্কুল সার্টিফিকেট পোস্ট করা হয়েছে। স্কুলের ওই শংসাপত্রে সমীরের নামের মাঝে “দাউদ” কথাটি লেখা আছে। ধর্ম হিসাবেও মুসলিম উল্লেখ করা হয়েছে।
মুম্বইয়ের ওয়াডালার সেন্ট জোসেফ হাই স্কুল এবং দাদারের সেন্ট পল হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন সমীর। ওই দুই স্কুল থেকেই সমীর ওয়াংখেড়ের সার্টিফিকেট বের করা হয়। সেই সার্টিফিকেটই এদিন ট্যুইটারে পোস্ট করেছে এনসিপি। ওই সার্টিফিকেটে সমীর ওয়াংখেড়ের নাম “সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে” বলে লেখা রয়েছে। ধর্মের জায়গায় লেখা মুসলিম বলে। মুম্বইয়ে প্রমোদতরী থেকে মাদক উদ্ধার ও শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খানকে গ্রেফতারের পরই এনসিবির জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়েের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন এনসিপি নেতা নবাব মালিক। সমীর ওয়াংখেড়ের প্রথম স্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে নবাব দাবি করেন যে, সমীর ওয়াংখেড়ে আদতে মুসলিম। ভুয়ো জনজাতি সার্টিফিকেট দেখিয়ে তিনি সরকারি সুবিধা নিচ্ছেন। যদিও এনসিপির ওই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে সমীরের পরিবার। সমীরের পরিবারের পক্ষ থেকেও বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সমীরের পরিবারের প্রকাশ করা তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, তিনি ১৯৯৫ সালের স্কুল উত্তীর্ণ হয়েছেন। স্কুল উত্তীর্ণ হওয়ার শংসাপত্রে তাঁর নাম উল্লেখ রয়েছে “ওয়াংখেড়ে সমীর ধ্যানদেব” হিসাবে। জাতি “মাহার” বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : কাশফুল নিয়েও নয়া ভাবনা
নবাবের দাবি ছিল, সমীর ওয়াংখেড়ে আদতে মুসলিম হলেও তিনি ভুয়ো হিন্দু জনজাতি শংসাপত্র ব্যবহার করে ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। সেই পরীক্ষা দিয়েই তিনি সরকারি চাকরি পেয়েছেন। এর আগেও নবাব সমীর ওয়াংখেড়ের জন্মের যে শংসাপত্রও প্রকাশ করেছিলেন, সেখানেও তাঁর নাম সমীর দাউদ ওয়াংখেড়ে হিসাবেই উল্লেখ করা ছিল। সমীর ওয়াংখেড়ের পরিবার প্রমাণ হিসাবে যে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করেছে সেগুলি নকল বলেও দাবি করেছেন এই এনসিপি নেতা। নবাব বলেন, “এই সার্টিফিকেটগুলি সবকটাই নকল। সমীর ও তাঁর পরিবার এখন কম্পিউটারে তৈরি নকল সার্টিফিকেট সকলকে দেখাচ্ছেন। আমরা আদালতে সমস্ত আসল তথ্যপ্রমাণ জমা দিয়েছি। সেগুলি সবকটিই নথিভুক্ত। সমীরের চাকরি যাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
এদিকে, সমীর ওয়াংখেড়ের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর বাবাও দাবি করেছিলেন, সমীর ওয়াংখেড়ে মুসলিম। সে কারণেই তিনি নিজের মেয়ের সঙ্গে সমীরের বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ে এবং বিয়ের পরবর্তী সময়ে সমীর মুসলিম আচার পালন করতেন বলেও দাবি করেন তিনি। নিকাহনামাতেও সমীর ওয়াংখেড়ের নাম দাউদ ওয়াংখেড়ে নামেই উল্লেখ করা ছিল বলেও তাঁর প্রথম স্ত্রীর বাবা জানিয়েছেন। মাদক মামলার তদন্তকারী অফিসারের ধর্ম নিয়ে কেন জলঘোলা করা হচ্ছে? এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এনসিপি নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক বলেন, “তিনি সমীর ওয়াংখেড়ে কোনও ধর্মের মানুষ তা নিয়ে চিন্তিত নয়। সমীর কীভাবে ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে এনসিবি অফিসার হয়েছেন, সেই দুর্নীতি সকলের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।”