প্রতিবেদন : বাংলার (West Bengal) প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার ছবিটা মঙ্গলবার লোকসভায় ধরা পড়ে গেল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যেই! মান্যতা পেল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ। ১০০ দিনের কাজের খাতে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কেন্দ্র যে বাংলাকে একটা টাকাও দেয়নি মঙ্গলবার লোকসভায় তা স্বীকার করে নিল কেন্দ্র। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন ধরে যে অভিযোগটা জানিয়ে আসছেন, কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ানের কথায় সেটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হল এদিন। লোকসভার প্রশ্নোত্তরপর্বে মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায়, দীপক অধিকারী এবং খইলুর রহমান। উত্তরে প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করে নেন, দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাকেই মনরেগা বা ১০০ দিনের কাজের খাতে ২০২১ থেকে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বাংলাকে কীভাবে বঞ্চিত করে চলেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সংসদে এদিন যে তথ্য পেশ করা হয়েছে তাতে মেনে নেওয়া হয়েছে, এই প্রকল্পে বাংলার (West Bengal) বকেয়া লক্ষ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন-রাজ্যে বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করার প্রস্তাব, আরও বিনিয়োগ করবে আদিত্য বিড়লা গ্রুপ
বাংলায় একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি গেরুয়া শিবিরের। আর প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কারণে বাংলার মানুষের প্রাপ্য আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এই নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদের ভাষণেও এই নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তোলেন তিনি। এবার তৃণমূল সাংসদরা এই নিয়ে লিখিত প্রশ্ন তোলেন লোকসভায়। তার জবাবে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ান তথ্য দিয়ে স্বীকার করে নেন, একমাত্র বাংলাকে মনরেগায় কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। ২০২১ আর্থিক বছরে বাংলার প্রাপ্য ৪,১৩৭ কোটি টাকা এবং ২০২২-’২৩ আর্থিক বছরে রাজ্যের পাওনা ১,৪১৬ কোটি টাকা।
কেন্দ্র নিজের রিপোর্টেই দাবি করেছে বাংলা থেকে এই প্রকল্পে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের সংখ্যা ৩৪৫৬টি। যেখানে বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে অভিযোগের সংখ্যা যথাক্রমে ৯ হাজার ও ১৭ হাজারের বেশি। সেই রাজ্যগুলিতে কোনওভাবে এক বছরও এই প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ বন্ধ করেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বাংলায় বারবার কেন্দ্রের তথ্য যাচাই করার প্রতিনিধিদল এসেছে। গোটা বাংলা জুড়ে তারা তদন্তও করেছে। কিছুই মেলেনি। তারপরেও বাংলার জন্য বরাদ্দ তালিকা শূন্য থেকে গিয়েছে।
কেন্দ্রের বরাদ্দ ও বকেয়ার তালিকায় বারবার বাংলাকে বিশেষভাবে স্টার চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। বারবারই দাবি করা হয়েছে বাংলা একটি বিশেষ ক্ষেত্র। তারপরেও বাংলার সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র নিজেই স্বীকার করছে ২০২১ সালে থেকে মহাত্মা গান্ধী ন্যাশানাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিমে বাংলার বরাদ্দ শুধুই শূন্য। একেই বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি।