প্রতিবেদন: অভূতপূর্ব ভূমিধসের সাক্ষী হল কেরলের ওয়েনাড়। প্রাণ হারালেন অন্তত ১৪৩ জন। এদের মধ্যে ৩৭টি দেহকে শনাক্ত করা গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে লাফিয়ে। আহত প্রায় ২০০। প্রায় ৩০০ জনকে উদ্ধার করার সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ বহু। আটকে পড়া দুর্গতদের উদ্ধারে নেমেছে সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনী। একটানা প্রবল বর্ষণের পরিণতিতে পাহাড়ি এলাকায় এই ধস নামে মঙ্গলবার সকালে। মাত্র ৪ ঘন্টার মধ্যেই পরপর ৩টি ধস। বিপর্যস্ত কেরলের ওয়েনাড় জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। মূল ধসটি নামে মেপ্পাদির কাছে পাহাড়ে। মঙ্গলবার ভোর ৩টে নাগাদ ওয়েনাড় জেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রথম ধস নামার খবর পাওয়া যায়। ভোর ৪টে ১০ মিনিটে আরও দুটি জায়গায় ধস নামার খবর আসে। এত মানুষের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা রাজ্য, সারাদেশ। ৩০ এবং ৩১ জুলাই দু’দিন রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে কেরলে। রাজ্য সরকারের সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-মায়ের দুধ জীবনদায়ী
সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধার-অভিযান। মুন্ডক্কাই, চুরমালা, আত্তামালা এবং নুলপুঝা গ্রামগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছালিয়ার নদীতে অনেকেই ভেসে গিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেডিক্যাল টিমও পাঠানো হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। ২২৫ জন কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। দুটি এয়ারফোর্স হেলিকপ্টার, একটি এমআই-১৭ এবং একটি অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টারও নামানো হয়েছে দুর্গত এলাকায়৷ সাংসদ রাহুল গান্ধী এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে মৃত এবং জখমদের ক্ষতিপূরণের পক্ষেও সওয়াল করেছেন। রাজ্যের মন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির নিকটতম শহর চুরামালার সংযোগকারী একটিমাত্র সেতুও ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। বন্যার জলে ভেসে যাওয়া যানবাহন গাছের গুঁড়িতে আটকে থাকতে দেখা গিয়েছে। অবিরাম বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে এবং বিশাল বিশাল পাথর পথ আটকানোয় উদ্ধারকর্মীরা কিছু এলাকায় ঢুকতেই পারছেন না। আবহাওয়া দফতর রাজ্যের উত্তরের জেলাগুলিতে লাল-সতর্কতা জারি করেছে। কাসারগোড, কান্নুর, ওয়েনাড়, কোঝিকোড় এবং মালাপ্পুরম এলাকায় মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে প্রশাসন।