কলম্বো, ২ অগাস্ট : রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। কুলদীপ যাদব যখন আউট হলেন, ভারত ২১১/৮ (India vs Sri Lanka)। সেখান থেকে জয় ও হার দুটোই দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু ভারত শেষ পর্যন্ত ২৩০ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ায় প্রথম ম্যাচ শেষ পর্যন্ত টাই হয়ে গেল। রোহিত শর্মা ৫৮ রান করে গিয়েছিলেন। লড়লেন অলরাউন্ডার শিবম দুবে ২৫)। চাপের মুখে মহম্মদ সিরাজকে (৫ নট আউট) তিনি ম্যাচ বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না আসালাঙ্কার বলে অর্শদীপের বেপরোয়া শটে। তিনি লেগ বিফোর হয়ে যান।
২৩১ রান তাড়া করতে নেমে বেশ ভাল শুরু করেছিল ভারত (India vs Sri Lanka)। রোহিত যথারীতি ঝোড়ো ব্যাটিং করলেন। সাতটি চার ও তিন ছক্কায় ৪৭ বলে ৫৮। তবে ৭৫ রানে শুভমন (১৬) ফিরে যাওয়ার ৫ রানের মধ্যে রোহিতও লেগ বিফোর হয়ে যান ওয়েলালাগের বলে। মুশকিল হচ্ছে যে এত ভাল শুরু করার পর একটা সময় ৫ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান দাঁড়িয়েছিল ১৩২। ততক্ষনে ফিরে গিয়েছেন বিরাট (২৪), ওয়াশিংটন সুন্দর (৫) ও শ্রেয়স আইয়ার। ওয়েলালাগে শুভমনের পর রোহিতের উইকেটও তুলে নিয়েছিলেন। তবে এরপর কে এল রাহুল (৩১) ও অক্ষর প্যাটেল (৩৩) পরিস্থিতি সামালে দেন। দুজনের পার্টনারশিপে উঠেছে ৫৭ রান। অক্ষরকে একদিনের ম্যাচে দেখে নিচ্ছে দল। তিনি বল হাতে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতেও দলকে ভরসা যোগালেন। কিন্তু তিনি আসালাঙ্কার বলে আউট হওয়ার পর চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। তবে এরপরও দুবে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন দুবে। শুধু জয়টাই এল না!
আরও পড়ুন- সেই সংস্থা যার প্রতিষ্ঠাতা আচার্য পি সি রায়, সেটাকেই মোদি সরকার ধ্বংস করতে চায়
প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের উইকেটে একটা বিশেষত্ব আছে। এই উইকেটে সিমারদের যেমন সুবিধা আছে, তেমনই স্পিনারদের। এই উইকেট আবার পরের দিকে বেশ স্লো হয়ে যায়। ফলে টসে জিতলে কী করবেন, সেটা ক্যাপ্টেনরা বুঝতে পারেন না। চারিথ আসালাঙ্কা সম্ভবত এই দোটানাতেই পড়েছিলেন। টসে জিতে আগে ব্যাটিং নিলেন আর গাড্ডায় পড়লেন খুব তাড়াতাড়ি!
১০১ রানে পাঁচ উইকেট চলে যাওয়ায় মানে শ্রীলঙ্কা মহা বিপদেই পড়েছিল। টপ অর্ডারে একমাত্র পাথুম নিশঙ্কা ৫৬ রান করে যাওয়া ছাড়া কারও ব্যাটে রান ছিল না। আবিষ্কা ফার্নান্ডো ১, কুশল মেন্ডিস ১৪, সাদিরা সমরবিক্রমা ৮, অধিনায়ক আসালাঙ্কা ১৪ রানে আউট হয়েছেন। এরপর নিশঙ্কা ও জানিথ লিয়ানাগে (২০) ৪১ রান জুড়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নিয়েছিলেন। কিন্তু অক্ষর লিয়ানাগেকে ফেরত পাঠানোয় এই পার্টনারশিপ থেমে যায়।
রোহিত শর্মা ও গৌতম গম্ভীরের জুটিতে এটাই ছিল প্রথম ম্যাচ। গম্ভীর কোচ হয়ে এসেই বার্তা দিয়েছেন, ফিট থাকলে ২০২৭ বিশ্বকাপে তিনি রোহিত ও বিরাটকে দলে চান। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এদিন ঋষভ পন্থকে বাইরে রেখে প্রথম এগারোয় এনেছিল কে এল রাহুলকে। দলে রাখা হয়েছিল শ্রেয়স আইয়ারকেও। শিবম দুবেকে অনিশ্চিত দেখালেও তিনিও প্রথম এগারোয় জায়গা করে নিতে পেরেছিলেন। কুশল মেন্ডিসের উইকেট তাঁর।
শ্রীলঙ্কা যে টপ অর্ডার ব্যাটিং ব্যর্থতার পরও ৫০ ওভারে ২৩০/৮ তুলতে পেরেছে সেটা দুনিথ ওয়েলালাগে (৬৭ নট আউট) ও ওয়েনিন্দু হাসরাঙ্গার (২৪) জন্য। এই দুজনের জুটিতে ৩৬ রান ওঠার পর শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে কিছুটা ভদ্রস্থ লেগেছে। ওয়েলালাগে ৬৫ বলে ৬৭ রান করেছেন। সাতটি চার, দুটি ছক্কা। এই সিরিজে অক্ষরকে একদিনের ম্যাচে খেলিয়ে দেখে নিতে চাইছেন গম্ভীর। তিনি ১০ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ২টি উইকেট নিয়েছেন। ৪৭ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন অর্শদীপ সিংও। এছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মহম্মদ সিরাজ, শিবম দুবে, কুলদীপ যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দর। ১০ ওভারে কুলদীপ দেন ৩৩ রান।