অসহযোগের নামে হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে উত্তাল বাংলাদেশ

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তির পরও দেশে অশান্তি আর হিংসা জিইয়ে রাখার চক্রান্ত করছে বিরোধী দল ও আন্দোলনকারীরা

Must read

প্রতিবেদন: কোটা সংস্কারের আন্দোলনের উত্তাপ এবার নতুন মোড়কে। অসহযোগ আন্দোলনের নামে ক্ষমতাসীন সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা চেয়ে আবার অশান্ত বাংলাদেশ। আন্দোলনকারীদের যৌথমঞ্চ ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে রবিবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। আন্দোলনের নয় দফা দাবি কমে এখন ঠেকেছে মাত্র একদফায়। আর তা হল হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। শনিবারই ঢাকায় শহিদ মিনার চত্বরে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এছাড়াও এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন আন্দোলনের আর এক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

আরও পড়ুন-হলফনামা জমা এসএসসি ও পর্ষদের

শহিদ মিনারে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার সমাবেশে ডাক দেওয়া হয় অসহযোগের। আওয়ামি লিগের অভিযোগ, ছাত্রদের সামনে রেখে গোটা দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি করাই যে লক্ষ্য, নতুন দাবিতে সেই পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তির পরও দেশে অশান্তি আর হিংসা জিইয়ে রাখার চক্রান্ত করছে বিরোধী দল ও আন্দোলনকারীরা। ইতিমধ্যেই বহু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি হয়েছে। বাংলাদেশে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে  নরসিংদীতে ছ’জন, ফেনীতে আটজন, সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ-সহ মোট ২২ জন, কিশোরগঞ্জে ৪ জন, ঢাকায় ৪ জন, বগুড়ায় ৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ৪ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, সিলেটে ৪ জন, কুমিল্লায় পুলিশ-সহ ৩ জন, শেরপুরে ২ জন, জয়পুরহাটে ১ জন, হবিগঞ্জে ১ জন, ঢাকার কেরানিগঞ্জে ১ জন এবং বরিশালে ১ জন। সন্ধ্যার পর থেকে আরও মৃত্যুর খবর আসছে।

আরও পড়ুন-লন্ডভন্ড ওয়েনাড়, পশুদের প্রাণ বাঁচাতে বিশেষ কন্ট্রোল রুম

শনিবার থেকেই বিক্ষোভ ও অশান্তির আবহ ছিল বাংলাদেশ জুড়ে। নতুন করে অশান্তির কারণে ভারতের পড়শি দেশ ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। শনিবারই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভের জেরে একাধিক জায়গায় শুরু হয় সংঘর্ষ। রবিবার থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ ঘিরে একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের মিডিয়া সূত্রে খবর, ১৪ পুলিশ-সহ মৃত অন্তত ৯২। রবিবার
সন্ধ্যা থেকে কার্ফু জারি হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। বন্ধ মোবাইলের ইন্টারনেট পরিষেবা।
রবিবার বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ কাজের দিন। সরকারি অফিস-সহ বেসরকারি ক্ষেত্রও খোলা থাকে। কারণ, বাংলাদেশের সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার। কিন্তু রবিবার থেকে ফের অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। ফলে রাজধানী ঢাকা-সহ সারা দেশ নতুন করে অচলাবস্থার মুখে। জরুরি পরিষেবা অর্থাৎ হাসপাতাল, দুধ সরবরাহের গাড়ি ছাড়া অন্য সবক্ষেত্রে প্রশাসনের সঙ্গে অসহযোগিতার ডাক দিয়েছেন আন্দোললনকারীরা। অন্যদিকে নয়া কর্মসূচির মোকাবিলায় রবিবার থেকে পাল্টা পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামি লিগও। ফলে নতুন করে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা।

আরও পড়ুন-পঞ্চায়েত ভোট, বিজেপির নোংরা খেলা, অভিষেকের দ্বারস্থ সুস্মিতা

চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হিংসার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে কর্মসূচিকে ঘিরে শুক্রবার থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানী ঢাকা-সহ বাংলাদেশের নানা এলাকা। শনিবারও কুমিল্লা শহরে কোটা সংস্কারপন্থী পড়ুয়াদের মিছিলে গুলি চলেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তত পাঁচজন আন্দোলনকারী। সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলায় আহত আরও বহু ছাত্র। অভিযোগ, শাসকদল আওয়ামি লিগের যুব সংগঠন যুবলিগ এই হামলার পিছনে। ওই ঘটনার পরে কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা সহকারী কমিশনারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন মারমুখী আন্দোলনকারীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

Latest article